হৃদরোগে আক্রান্ত তরুণ প্রজন্মের বড় অংশ! কীভাবে কমবে ঝুঁকি?
প্রতীকী ছবি।
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
ভারত জুড়ে বাড়ছে হৃদরোগ! হার্ট অ্যাটাকের পাশপাশি একাধিক হৃদরোগে (Heart Attack) আক্রান্ত হচ্ছেন তরুণ প্রজন্মের বড় অংশ। উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জীবন যাপনের ধরনের জন্যই হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন ভারতীয়দের তরুণ প্রজন্মের বড় অংশ।
কী বলছে সমীক্ষার রিপোর্ট?
ভারতে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হৃদরোগ (Heart Attack)। সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নালে উল্লেখ করা হয়েছে, মোট ভারতীয়র ৫০ শতাংশ ৫৫ বছরের আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ৩০ বছরের উর্ধ্বে প্রায় ৪৭ শতাংশ ভারতীয় হৃদরোগে আক্রান্ত। মহিলাদের তুলনায় ভারতীয় পুরুষদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি।
তরুণ প্রজন্মের কেন বাড়ছে হৃদরোগের (Heart Attack) ঝুঁকি?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জীবন যাপনের ধরনের জন্য হৃদরোগের (Heart Attack) ঝুঁকি বাড়ছে তরুণ প্রজন্মের ভারতীয়দের। বিশেষত খাদ্যাভ্যাস এবং কাজের চাপ এই ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, উচ্চ রক্তচাপ এবং অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের মতো রোগ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশের কাজের ডেড লাইনের চাপ বড্ড বেশি থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে কর্মক্ষেত্রে নানা সমস্যা তৈরি হয়। আর অধিকাংশের এই নির্দিষ্ট সময় আসলে খুবই সীমিত হয়। এছাড়াও আধুনিক কর্মজীবনে অনিশ্চয়তা আর প্রতিযোগিতা বেশি। ফলে, অধিকাংশই মানসিক চাপের মধ্যে থাকে। যা অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপের অন্যতম কারণ। দীর্ঘদিন এই চাপ হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
মানসিক চাপের পাশপাশি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস হৃদরোগের অন্যতম কারণ বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ বিরিয়ানি, পিৎজার মতো অতিরিক্ত মশলাদার খাবারে অভ্যস্থ। অতিরিক্ত প্রোটিন আর ফ্যাট জাতীয় মশলাদার খাবার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। পাশপাশি ডায়াবেটিস ডেকে আনে। আর এগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
কীভাবে হৃদরোগের (Heart Attack) ঝুঁকি কমানো যাবে?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, চল্লিশ কিংবা পঞ্চাশের চৌকাঠ পেরিয়ে নয়। হৃদরোগের (Heart Attack) ঝুঁকি কমাতে কুড়ির শুরুতেই সতর্ক হতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে হারে হৃদরোগের প্রকোপ বাড়ছে, তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ঘরে ঘরে হৃদরোগ আক্রান্তদের দেখা যাবে। ফলে, হৃদরোগ কমবেশি সকলের পারিবারিক সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। আর যার জেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়বে। ফলে, কম বয়স থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। যাতে ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের সমস্যা না হয়। খাওয়ার দিকে তাই বিশেষ নজর দিতে হবে। খাবারে নুন, মশলা ও তেলের পরিমাণ কমাতে হবে। তেলে ভাজা একেবারেই বন্ধ করতে হবে। পাশপাশি, মিষ্টি খাওয়ার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ জরুরি। বিশেষত প্রিজারভেটিভ খাবার যেমন বার্গার, হটডগ, পিৎজা যেগুলোতে অতিরিক্ত নুন ও মশলা দিয়ে প্রাণীজ প্রোটিনের স্বাদ ধরে রাখা হয়, সেগুলো খাদ্যতালিকা থেকে সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে।
পাশপাশি ভারতীয়দের মধ্যে যোগাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। তরুণ প্রজন্মের ভারতীয়দের নিয়মিত যোগভ্যাসে অভ্যস্থ হতে হবে। এতে শরীর ও মন, দুই ভালো থাকবে। নিয়মিত হাঁটা, যোগাসন করার অভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।