মুর্শিদাবাদ জেলার কাগ্রামে অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব জগদ্ধাত্রী পুজো! কেন জানেন?
Jagadhatri_Puja_2023
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জগদ্ধাত্রী পুজোর কথা শুনলেই আমাদের সবার মনে আসে কৃষ্ণনগর এবং চন্দননগরের নাম। কিন্তু জানেন কি, মুর্শিদাবাদ জেলার কাগ্রামে অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব এই জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja 2023)? কাগ্রাম কান্দি মহকুমার সালার থানায় অন্তর্ভুক্ত একটি প্রাচীন গ্রাম। এই গ্রামে বসবাস করেন ব্রাহ্মণ, শাক্ত এবং বৈষ্ণব পরিবার। শোনা যায়, গ্রাম্য দেবী কংকচণ্ডীর নাম অনুসারে এই গ্রামের নাম কাগ্রাম। এই গ্রামে দুর্গাপুজো এবং কালীপুজো হলেও শ্রেষ্ঠ উৎসব জগদ্ধাত্রী পুজো। ২২ টি পাড়ায় এই পুজো হচ্ছে। গত বছর পুজোর সংখ্যা ছিল ২৬ টি। এবার একটি বেড়ে হয়েছে ২৭ টি। তার মধ্যে নটি পারিবারিক পুজো এবং ১৮টি সর্বজনীন। মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে শুরু হয় পুজো। পুজোর ভোগে থাকে বৈচিত্র। সপ্তমীতে ভাত, শাক ভাজা, মাছ, তরকারি, চাটনি। অষ্টমীতে খিচুড়ি, পোলাও, ভাজা, তরকারি। আর নবমীতে লুচি ও সুজি। আগে পশু বলি হলেও এখন চালকুমড়ো বলি হয় বলে জানান উদ্যোক্তারা।
পারিবারিক থেকে সর্বজনীন (Jagadhatri Puja 2023)
জানা যায়, এখানকার রায়পাড়ার জগদ্ধাত্রী পুজো প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম। এটা পারিবারিক পুজো হলেও পরবর্তীতে কিছু ঘটনা ঘটায় তা সর্বজনীন হয়ে ওঠে। এই পুজোকে কেন্দ্র করে এক কাহিনী শোনা যায়। এখানকার পুজো শুরু করেন শম্ভুনাথ রায়। সেই পরিবারের এক সদস্য বলেন, রায়বাড়িতে আগে দুর্গাপুজো, কালীপুজোর সঙ্গে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়। কিন্তু এই পুজো শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর কোনও না কোনও দুর্ঘটনা ঘটত। সেই সময় পুজোর উদ্যোক্তারা নবদ্বীপের পণ্ডিত সমাজের কাছে গিয়ে এই ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা বলেন, একই বাড়িতে তিনটে শক্তির পুজো করা উচিত নয়। যদি করতে হয়, তাহলে চাঁদা তুলে করতে হবে। সেই থেকে এই পুজো সর্বজনীন (Jagadhatri Puja 2023) হয়ে থাকে।
ভোররাত পর্যন্ত বিসর্জন (Jagadhatri Puja 2023)
এই পুজোর সংকল্প হয় মহিলাদের নামে। প্রহর ভাগ করে সকালেই ষষ্ঠী পুজো করা হয় এবং সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী- এই চারটি তিথিতে ভাগ করে পুজো করা হয় বলে জানান উদ্যোক্তারা। আজ বুধবার গ্রামের সমস্ত প্রতিমা ভোররাত পর্যন্ত বিসর্জন চলবে বলে জানা যায়। এখানকার সমস্ত প্রতিমা সাবেকি। পুজোর প্রধান আকর্ষণ হল বিভিন্ন ধরনের বাজনা। পুজোমণ্ডপে ঢাকের বাদ্যি বাজলেও অনেকে ব্যান্ডের দল, সানাই সহ বহু ধরনের বাজনার আয়োজন করে। বেশ কিছু পুজো কমিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে। এর সঙ্গে বাউল গানও থাকে বলে জানান পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা (Jagadhatri Puja 2023)। পুজোর দিন প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। সেই জন্য পুজো কমিটি দর্শনার্থীদের বিশ্রাম নেওয়ারও ব্যবস্থা করেন। কিছু পুজো কমিটি আহারেরও ব্যবস্থা রাখেন। এই পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে বসেছে বিরাট মেলা। সেখানে নাগরদোলা থেকে আরম্ভ করে নানা ধরনের জিনিস এবং খাবারের দোকান বসেছে। এছাড়া গ্রামে পুলিশ ও একাধিক মেডিকেল ক্যাম্প বসেছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।