img

Follow us on

Thursday, Nov 21, 2024

August Kranti Day: তমলুকে গড়ে ওঠে পরাধীন ভারতের স্বাধীন সরকার, ফিরে দেখা অগাস্ট ক্রান্তি দিবস

Quit India Movement: ৮২ বছর আগে এমন দিনে উত্তাল ছিল মহারাষ্ট্র থেকে বাংলা, জেনে নিন ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ইতিহাস...

img

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শহিদ মাতঙ্গিনী হাজরা।

  2024-08-09 12:50:52

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সাল ১৯৪২। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (Second World War) চলছে। হিটলারের জার্মানি এবং তার সহযোগী দেশগুলি যুদ্ধজয়ের বিচারে সাফল্যের শীর্ষে। সবে সোভিয়েতের উপর হামলা করেছে অক্ষসেনা। টালমাটাল হচ্ছে ব্রিটিশরা। ঠিক সেই সময়েই ভারতেও তুঙ্গে উঠল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ঢেউ (Indian National Movement)। অগাস্ট ক্রান্তি দিবস (August Kranti Day), যা কুইট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট (Quit India Movement) দিবস নামে পরিচিত, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক পর্ব। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে ১৯৪২ সালের ৮ অগাস্ট মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে এই আন্দোলন শুরু হয়। এখনও প্রতিবছর পালিত হয় ভারত ছাড়ো আন্দোলন দিবস। স্মরণ করা হয় ওই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অসংখ্য নাম জানা-না জানা মানুষদের। শ্রদ্ধা জানানো হয় তাঁদের ত্যাগের প্রতিও। এই বছর, কুইট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের ৮২তম বার্ষিকী উদযাপন করছে দেশ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের পটভূমি

ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, ১৯৪২ সালের মার্চ মাসে ক্রিপস মিশনের ব্যর্থতার পর ব্রিটিশ শাসনের প্রতি ভারতীয়দের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ থেকে কুইট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের (Quit India Movement) উৎপত্তি হয়। ১৯৪২ সালের ৮ অগাস্ট, তৎকলীন বোম্বেতে (অধূনা মুম্বই) অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির অধিবেশনে কুইট ইন্ডিয়া প্রস্তাব গৃহীত হয়। ব্রিটিশদের ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার ডাক দেন মহাত্মা গান্ধী (Mahatma Gandhi)। মহাত্মা গান্ধীর “করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে” স্লোগানকে সম্বল করেই শুরু হয়েছিল ভারতজোড়া এই অহিংস আন্দোলন। 

আন্দোলনের বিস্তার

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য নির্বিশেষে এই আন্দোলনে (August Kranti Day) যোগ দিয়েছিলেন প্রায় সকলে। আইন অমান্য, মিছিল, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-ধর্মঘট সম্বল করেই দেশের নানা প্রান্তে ঢল নেমেছিল স্বাধীনতাকামী ভারতবাসীর। নেতারা গ্রেফতার হলেও স্বাধীনতাকামী যে কোনও ভারতীয় এই আন্দোলনে নামবেন এবং নেত্বত্ব দেবেন এমন সিদ্ধান্তই পাশ হয়েছিল কংগ্রেসের বোম্বে অধিবেশনে। ৯ অগাস্টই গ্রেফতার হয়ে যান কংগ্রেসের প্রথম সারির সকল নেতা। মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, আবুল কালাম আজাদ-সহ প্রায় সকলেই গ্রেফতার হয়ে যান। তারপরেও চলেছে আন্দোলন। তার কদিনের মধ্যেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। অধিকাংশ এলাকাতেই সেই অর্থে স্থানীয় নেতৃত্ব বা কোনওরকম নেতৃত্ব ছাড়াই আন্দোলন গড়ে ওঠে। 

পরাধীন ভারতে স্বাধীন সরকার

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের (Quit India Movement) আঁচ দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনের পটভূমিতেই পরাধীন ভারতে প্রথম গড়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষের স্বাধীন সরকার। বাংলার তমলুকেই প্রথম গড়ে ওঠে স্বাধীন সরকার। ১৯৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলন বা অগাস্ট আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতবর্ষের নানা জায়গায় মহাভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন সরকার গঠিত হয়। ভারতবর্ষের বেশ কিছু জায়গায় স্বাধীন জাতীয় সরকার গঠিত হয়। মহারাষ্ট্রের সাতারা, উত্তরপ্রদেশের বলিয়া ও বাংলার বুকে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার তমলুক মহকুমায় গঠিত হয় তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার। 

কঠোর দমন নীতি

প্রথম থেকেই এই আন্দোলন (August Kranti Day) দমাতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেছিল ব্রিটিশরা (British Rule in India)। শুরু হয়েছিল 'অপারেশন জিরো আওয়ার'। শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার হয়েছিলেন। মৃত্যু হয়েছিল, জেলে গিয়েছিলেন বহু সাধারণ মানুষও। এই আন্দোলনে যোগ দিয়ে শহিদ হয়েছিলেন বাংলার নারী-পুরুষও। আন্দোলন চলাকালীন তমলুকে একটি মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন বিপ্লবী মাতঙ্গিনী হাজরা। প্রবল অত্যাচারের কারণেই হয়ত ১৯৪৪ সালে সেই অর্থে গতি হারায় এই আন্দোলন। কিন্তু ততদিনে স্বাধীনতা আন্দোলন তার সর্বোচ্চ গতি পেয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ছোট বালুকণার মধ্যেও অসীমের স্পর্শ পেতেন, প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা কবিগুরুকে

আন্তর্জাতিক স্তরে প্রভাব

আন্তর্জাতিক স্তরে, কুইট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের (August Kranti Day) প্রতি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়িয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ব্রিটিশ রাজের শেষ কটা বছরে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছিল ভারত ছাড়ো আন্দোলন। ব্রিটিশদের হাত থেকে যে মুক্তি মেলা সম্ভব, সেই বিশ্বাস এবং তার জন্য লড়াই করার জেদ আপামর ভারতবাসীর মনে গেঁথে দেওয়ার জন্য ভারত ছাড়ো আন্দোলনের গুরুত্ব রয়েছে। এর কয়েক বছর পরেই ১৯৪৭ সালে দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত স্বাধীনতা পায় ভারত। তবে সইতে হয় দেশভাগের যন্ত্রণা। যা আজও ভারতীয়দের মনে এক গভীর ক্ষত। অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন এখনও দেখে আসমুদ্র হিমাচল।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

Mahatma Gandhi

bangla news

INDEPENDENCE DAY

Quit India Movement

Indian National Movement

August Kranti Day


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর