Kuthi Ghat: বরানগর কুঠিঘাটে কৃপাময়ী কালী মন্দির কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
বরানগরের কুঠিঘাটে কৃপাময়ী কালীবাড়ি (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বরানগর-মালপাড়ার (Baranagar) কুঠিঘাট অঞ্চলের কৃপাময়ী কালীবাড়ি দেবী দর্শনে আসেন বহু ভক্ত। এই মন্দিরও দেখার মতো। তবে, এই মন্দির কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা এখনকার প্রজন্মের কাছে অজানা। এই প্রতিবেদনে কালীবাড়ি তৈরির ইতিহাস তুলে ধরা হল।
শোভাবাজার (Baranagar) অঞ্চলের বাসিন্দা জয়নারায়ণ মিত্র (Joy Mitra Kalibari) ছিলেন সে যুগের এক স্বনামধন্য বিত্তবান বাবু মানুষ। বাড়িতে দোল- দুর্গোৎসবের মতো অনুষ্ঠান হত মহা সমারোহে। তাঁর অর্থ-বিত্ত নিয়ে অনেক গল্প আছে। নাম উহ্য রেখে হুতোম পেঁচার নকশাতেও জয় মিত্রের দুর্গাপুজোর এই বর্ণনা আছে। যাইহোক, ১৮৫৫ সালে দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণির ভবতারিণী কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারও আগে ১৮৪৮ সালে বরানগর কুঠিঘাট (Kuthi Ghat) এলাকায় এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি কালী ভক্ত ছিলেন। তাই, গঙ্গার ধারে মন্দির স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। কৃপাময়ী কালীর বিগ্রহ যুক্ত একটা নবরত্ন মন্দির ও বারোটা আটচালা শিবমন্দির নিয়ে এই মন্দির-চত্বর নির্মাণ করা হয়। প্রতিষ্ঠাতার নাম অনুসারে এই কৃপাময়ী কালীর মন্দিরটি 'জয় মিত্রের মন্দির' নামেই পরিচিত। খুবই প্রাচীন এই মন্দিরে আগে বিভিন্ন পুজোয় খুব সমারোহ হত। এখনও বারোমাস নিত্যপুজো এবং কালীপুজো হলেও আগের সে রমরমা আর নেই। বস্তুত মূল কোনও কালী মন্দিরের সঙ্গে চার-ছয়-আট-বারো বা তারও বেশি আটচালা শিবমন্দির যুক্ত যে সমস্ত 'টেম্পল-কমপ্লেক্স' সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে দেখা যায়, এটাও তার ব্যাতিক্রম নয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় এক সময়ে জীর্ণতার ছাপ লেগেছিল এই মন্দিরগুলোর গায়ে। তবে কয়েক বছর আগে বিপুল অর্থব্যয় করে সংস্কার করার ফলে সৌন্দর্য অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে কৃপাময়ী কালী মন্দিরের।
স্থাপত্যশৈলীর বিচারে কৃপাময়ী মন্দির 'নবরত্ন' শ্রেণির। রত্ন' শব্দটি মন্দির নির্মাণ শিল্পে কথাটি চূড়ার সমার্থক। ঢালু ছাদ ও বাঁকানো কার্নিসযুক্ত মন্দির শীর্যের ওপর চুড়া বসিয়ে এই রীতির মন্দির নির্মিত হয়। কৃপাময়ী কালীর নবরত্ন শৈলীর মন্দির (Baranagar) হলেও এর স্থাপত্য অন্যান্য নবরত্ন মন্দিরের থেকে কিছুটা অন্য রকম। এখানে চিরাচরিত বাঁকানো চালের শৈলী লঙ্ঘন করে দোতলা দালান মন্দিরের প্রতি তলে চারটে করে মোট আটটা রত্ন বা চূড়া বসিয়ে এবং একেবারে শীর্ষদেশে আকারে বড় আরও একটা রত্ন বসিয়ে নবরত্ন মন্দিরের চেহারা দেওয়া হয়েছে। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ এই মন্দিরে একাধিকবার এসেছেন বলে জানা যায়।
মন্দিরের (Baranagar) ঠিক সামনে একটা বড় নাটমন্দির ছিল। কিন্তু তার ছাদ ভেঙে পড়েছে বহুকাল আগে। টিকে ছিল শুধু গোলাকার থামগুলি। সম্প্রতি অবশ্য নতুন করে নির্মিত হয়েছে নাটমন্দির। কিন্তু তা পুরনো স্থাপত্যের সঙ্গে একেবারেই বেমানান। নবরত্ন মন্দিরের পাশে প্রতি সারিতে ছটা করে, মুখোমুখি দুসারি মোট বারোটা আটচালা শিবমন্দির রয়েছে। গর্ভগৃহে রক্ষিত শিবলিঙ্গগুলি 'অমরনাথ', 'বৈদ্যনাথ', 'পশুপতিনাথ', 'চন্দ্রনাথ', 'ভুবনেশ্বর' প্রভৃতি বিভিন্ন নামে পরিচিত।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।