img

Follow us on

Friday, Nov 22, 2024

Sri Aurobindo: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও প্রাসঙ্গিক শ্রী অরবিন্দর জীবনদর্শন! আজ তাঁর ১৫০তম জন্মজয়ন্তী

গীতার নিষ্কাম কর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি তরুণ সমাজকে দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।

img

শ্রী অরবিন্দ ঘোষ।

  2022-08-14 18:13:06

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ তাঁর হয়ে আলিপুর বোমা মামলা লড়ার সময়ে সওয়াল-জবাবের সূত্রে আদালতে দাঁড়িয়ে শ্রী অরবিন্দকে 'জাতীয়তাবাদের দ্রষ্টা এবং দেশপ্রেমের কবি' (prophet of nationalism and poet of patriotism) বলে চিহ্নিত করেছিলেন! সত্যই শ্রী অরবিন্দ ভারতীয় সংস্কৃতির এক উজ্জ্বলতম নাম। আজ থেকে ১৫০ বছর আগে ১৮৭২ সালের ১৫ অগাস্ট কলকাতায় তাঁর জন্ম হয়। মা স্বর্ণলতাদেবী রাজনারায়ণ বসুর কন্যা। বাবা কৃষ্ণধন ঘোষ তৎকালীন বাংলার রংপুর জেলার জেলা সার্জন। বাবা সন্তানদের ভারতীয় প্রভাবমুক্ত এক সম্পূর্ণ ইংরেজি ধরনে শিক্ষাদানের পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই মতো ১৮৭৭ সালে দুই অগ্রজ মনমোহন এবং বিনয়ভূষণ-সহ অরবিন্দকে দার্জিলিংয়ের লোরেটো কনভেন্টে পাঠান। পরে ইংল্যান্ড। কিন্তু কৈশোর-উত্তীর্ণ অরবিন্দের মনে তখন ভারতমাতার আহ্বান। ১৮৯৩ সালের ফেব্রুয়ারি, ভারতে ফিরে বারোদায় স্টেস সার্ভিসে যোগ দিলেন অরবিন্দ। এখানেই তিনি ভারত-সংস্কৃতির উপর গভীর অধ্যয়ন শুরু করেন। শেখেন সংস্কৃত, হিন্দি, বাংলা। বরোদাতেই তাঁর সাহিত্য-প্রতিভারও উন্মেষ। বারোদা থেকেই তাঁর প্রথম কাব্য সঙ্কলন প্রকাশিত হয়।

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে স্বদেশী আন্দোলন শুরু হলে বরোদার চাকরি ছেড়ে তিনি বাংলায় আসেন। তৎকালীন ভারতে সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদী মতবাদের অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। ভারতীয় যুব সমাজকে নিজের লেখা, বক্তব্যের মাধ্যমে বিপ্লবী মতাদর্শে দীক্ষিত করার কাজ  শুরু করেন অরবিন্দ। দেশমাতৃকার মুক্তিই তখন তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। অরবিন্দ জাতীয়তাবাদকে ধর্মের আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।  দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি ততদিনে বিপ্লবী গুপ্ত সংগঠনগুলির নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। গীতার নিষ্কাম কর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি তরুণ সমাজকে দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।  ১৯০৮-এ আলিপুর বোমা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার হন তিনি। ১৯০৯ সালে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান অরবিন্দ। কিন্তু জেলে থাকার সময়ই তাঁর রাজনৈতিক ভাবাদর্শে আধ্যাত্মিকার সংস্পর্শ ঘটে। নিভৃত কারাবাসেই তিনি নারায়ণের দর্শন পান। তাঁর জীবনে পরিবর্তন শুরু হয়। আধ্যাত্মিকতার টানেই তিনি ১৯১০-এ রাজনীতি ত্যাগ করে পুদুচেরি চলে যান। বিপ্লবী অরবিন্দ পরিণত হন ‘ঋষি অরবিন্দে’।

আরও পড়ুন: ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী, চিনে নিন ‘ভারতীয় বিজ্ঞানের মহাত্মা গান্ধী’কে

পুদুচেরিতেই আশ্রম স্থাপন করে যোগসাধনার মাধ্যমে জীবনদর্শন পরিবর্তনের পথ বেছে নেন তিনি। পুদুচেরিতে এক নতুন শিক্ষাপদ্ধতির সূচনা করেন ঋষি অরবিন্দ। সমাজদর্শন নিয়ে তাঁর অভিমত স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও খুব প্রাসঙ্গিক। শ্রী অরবিন্দ তাঁর সময়ের প্রচলিত শিক্ষার বিরুদ্ধা-চরণ করেন। তিনি  শিশুদের মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে, সমাজের চাহিদা মিটিয়ে  আধ্যাত্মিকতার পথে নিয়ে যাওার কথা বলেন। তাঁর মতে শিক্ষার প্রথম উদ্দেশ্য একটি শিশুর সম্পূর্ণ শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটান। শ্রী অরবিন্দ বলেন যে নৈতিক এবং মানসিক বিকাশ ছাড়া মানসিক উন্নয়ন মানব অগ্রগতির জন্য ক্ষতিকারক হবে। তাঁর লেখা থেকে আমরা তাঁর জীবন দর্শন ও শিক্ষা সম্পর্কে জানতে পারি। তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল: Essays on the Gita, The Foundations of Indian Culture, The Life Divine (১৯৩৯), Savitri (১৯৫০), Mother India, The Significance of Indian Art, Lights on Yoga, A System of National Education, The Renaissance in India!

দেশ স্বাধীন হওয়ার তিন বছর পর, তাঁর বয়স তখন প্রায় আটাত্তর। ১৯৫০ এর ৫ ডিসেম্বর মধ্যরাতে হঠাৎ করে চলে গেলেন যোগী অরবিন্দ। পাঁঁচ দিন পর তার দেহ সমাধিস্থ করা হয় পুদুচেরিতে তাঁর আশ্রমের এক গাছতলায়। যে গাছের ফুল আজও ঝরে পড়ে তার সমাধির ওপর। আর এক পুরাতন বটগাছ যেভাবে তার শাখা-প্রশাখা দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যায়, ঠিক সেভাবেই অরবিন্দের লেখনি, তাঁর আদর্শ , তাঁর চিন্তাধারা ভারতের আগামী প্রজন্মের ধারক ও বাহক হয়ে ওঠে। 

Tags:

INDEPENDENCE DAY

India at 75

Sri Aurobindo

Sri Aurobindo on 150th birth anniversary


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর