প্রায় ৩৫০ বছর ধরে মহাপ্রভু এখানে জামাই আদর পেয়ে থাকেন
প্রায় ৩৫০ বছর ধরে মহাপ্রভু এখানে জামাই আদর পেয়ে থাকেন
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে পালিত হয় জামাইষষ্ঠী। মেয়ে এবং জামাইয়ের মঙ্গল কামনায় মা-বাবারা নানারকম ঘরোয়া আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন এদিন। সকালের জলখাবার থেকে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজে জামাইয়ের পাত নানা রকম ব্যঞ্জন দিয়ে সাজানো থাকে। সাধারণভাবে এটাই জামাইষষ্ঠীর রীতি। তবে নবদ্বীপে একটু অন্যভাবে এই জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। সেখানে মহাপ্রভুর (Mahaprabhu) মন্দিরে এদিন নিমাই কোনও অবতার নন, বরং ঘরের জামাই। জানা যায়, এই মন্দিরের সেবায়েতরা হলেন বংশ পরম্পরায় মহাপ্রভুর স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়ার ভাইদের উত্তরসূরী। প্রায় ৩৫০ বছর ধরে মহাপ্রভু এখানে জামাই আদর পেয়ে থাকেন। রেকাবি ভর্তি নানারকম ব্যঞ্জন তো থাকেই, সঙ্গে এদিন নিমাইকে দেওয়া হয় নতুন পোশাক এবং স্থানীয় প্রবীণরা ষাটের পাখায় বাতাসও দেন নিমাইকে (Mahaprabhu)।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার জামাই ষষ্ঠী! কেন পালিত হয় এই তিথি? কীভাবে হল চালু এই প্রথা?
মরসুমি ফল আম, জাম, লিচু এসব তো থাকেই। পাশাপাশি রুপোর বাটিতে ক্ষীর এবং গ্লাসে জল দিয়ে প্রথমে ঘুম ভাঙানো হয় মহাপ্রভুর (Mahaprabhu)। তারপরে চিঁড়ে, মুড়কি, দই, আম, কাঁঠাল এবং মিষ্টির ফলাহার। এটা অবশ্য নিমাইয়ের জলখাবার। মধ্যাহ্ন ভোজনে থাকে নানা রকমের তরকারি, থোর বেগুন পাতুরি, ছানার ডালনা, লাউ, চাল কুমড়ো, পোস্ত দিয়ে রাঁধা সব নিরামিষ পদ। এরপর দুপুরে একটু জিরিয়ে নেওয়ার পালা। দিবানিত্রা সম্পন্ন হলে ভোগ দেওয়া হয় ছানা এবং মিষ্টির। রাতের মেনুতে থাকে গাওয়া ঘি'তে ভাজা লুচি, তার সঙ্গে মালপোয়া এবং রাবড়ি। সবশেষে মুখশুদ্ধি হিসেবে দেওয়া হয় খিলিপান। এই মন্দিরে জামাইষষ্ঠীর ভোগের বিশেষত্ব হল আমক্ষীর, যা আমের রসে ক্ষীর মিশিয়ে তৈরি হয়।
জামাইকে পোশাক দিতে কোনও কার্পণ্য করেন না শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শ্রীচৈতন্যদেবের বিগ্রহকে সাদা সিল্কের ধুতি, পাঞ্জাবি এবং গলায় উত্তরীয় পরিয়ে সাজানো হয়। আদর-কদর চলতে থাকে। জামাইষষ্ঠীর সকালে বিষ্ণুপ্রিয়ার পরিবারের প্রবীণ মহিলারা মহাপ্রভুকে নতুন পাখা দিয়ে ষাটের বাতাস দেন। হলুদের টিপ পরিয়ে দেওয়া হয় নিমাইয়ের কপালে। হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে দেওয়া হয় হাতে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।