img

Follow us on

Monday, Oct 14, 2024

Durga Puja: মন্ডপ হোক বা বাড়ি দশমীতে সিঁদুর খেলাই রীতি! জানেন এদিন কেন সিঁদুর খেলা হয়? 

রীতি অনুযায়ী, মা দুর্গা যখন তার মাতৃগৃহ ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে যান, তখন তাকে সিঁদুর দিয়ে সাজাতে হয়।

img

দেবী বরণ।

  2022-10-05 10:06:22

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: দশমীতে সিঁদুর খেলার রীতি রয়েছে। বারোয়ারী মন্ডপ হোক অথবা বাড়ির পুজো, শাড়ি পড়ে মাতৃ জাতিকে সিঁদুর খেলতে দেখা যায়। শুধুমাত্র বিবাহিত বা প্রচলিত ভাষায় সধবা মহিলারা নন, এখন অবিবাহিত মহিলারা , প্রচলিত ভাষায় যাদের কুমারী মেয়ে বলা হয় তাঁদেরকেও দেখি সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতে। গালে সিঁদুর মেখে ,হাতে প্রসাদের রেকাবি নিয়ে সেলফি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করাটাও এখন রীতি হয়ে গেছে। পুজো মানে তো প্রেমের মরসুম। মন্ডপের পুষ্পাঞ্জলিতে শাড়ি পাঞ্জাবিতে প্রেমিক প্রেমিকাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ে। দশমীর দিন তাই প্রেমিকের হাতে সিঁদুরের ছোঁয়া না পেলে প্রেমটাও ঠিক জমে না।

সিঁদুর খেলার প্রচলন ঠিক কবে থেকে তার সঠিক কোনও তথ্য-প্রমাণ নেই। ইতিহাসবিদ ও শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদের কেউ কেউ বলেন দুশো বছর আগে সিঁদুর খেলার প্রচলন হয়েছিল। তখন বর্ধিষ্ণু জমিদার পরিবারগুলিতে দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের আগে বাড়ির মহিলারা একে অপরকে সিঁদুরে রাঙিয়ে স্বামী ও পরিবার পরিজনদের মঙ্গল কামনা করতেন।  আবার অন্য  একটি মত অনুযায়ী, সিঁদুর খেলার ঐতিহ্য চারশো বছরের পুরনো। অন্য কোনও কারণ নয় শুধুমাত্র খেলার ছলেই এই প্রথার চল হয়। মায়ের বিসর্জনের দিন সকলের মনই ভারাক্রান্ত থাকে। তাই ওইদিন একটু আনন্দ-উল্লাসের জন্যই সিঁদুর খেলার প্রবর্তন হয়। সেই ঐতিহ্যই সমান ভাবে চলছে আজও।

পুরাণ মতে  সিঁদুর ব্রহ্মের প্রতীক। বিবাহিত রমণীরা সেই ব্রহ্মস্বরূপ সিঁদুর সিঁথিতে ধারণ করে থাকেন স্বামী ও পরিবারের মঙ্গলকামনায়। শ্রীমদ্ভগবত অনুসারে, গোপিনীরা কাত্যায়নী ব্রত পালন করতেন। যমুনা নদীর তীরে মাতার মাটির মূর্তি স্থাপন করে, ধূপ ধুনো জ্বালিয়ে এই ব্রত পালিত হতো।  এরপর গোপীনিরা নাকি সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতেন। একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে তাঁরা আসলে শ্রীকৃষ্ণের মঙ্গল কামনা করতেন বলেই কথিত রয়েছে।

আরও পড়ুন: জানেন বিজয়া দশমী কেন বলা হয়?

এই দিনে বিবাহিত মহিলারা প্রথমে মা দুর্গার উদ্দেশে সিঁদুর অর্পণ করেন। মহিলারা পান, মিষ্টি, সিঁদুর নিয়ে দেবীকে নিবেদন করেন। রীতি অনুযায়ী, মা দুর্গা যখন তার মাতৃগৃহ ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে যান, তখন তাকে সিঁদুর দিয়ে সাজাতে হয়। এরপর বিবাহিতারা একে অপরের গায়ে মুখে সিঁদুর লাগান এবং একে অপরকে দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা জানান। কথিত আছে যে এই সিঁদুর লাগালে বিবাহিতরা সৌভাগ্যবতী হওয়ার বর পান। বাঙালি মহিলাদের মধ্যে সিঁদুর খেলার সাথে ধুনুচি নাচও দেখা যায়। মনে করা হয় মা দুর্গা ধুনুচি নাচে খুশি হন। প্রাচীনকালে লাল সিঁদুরকে ভারতীয় নারীরা বেছে নিয়েছিলেন তাঁদের অন্যতম প্রসাধনী হিসেবে। আর বিবাহিতা মহিলাদের কপালে সিঁদুর থাকার অর্থ হল তাঁরা সন্তান ধারণের উপযুক্ত। এই বিশ্বাস থেকেই লাল রঙের সিঁদুর পরার রীতি চলে আসছে মনে করা হয়‌।

পৌরাণিক মত অনুযায়ী, মানব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্ন দেবতা বাস করেন। যেমন আমাদের কপালে থাকেন স্বয়ং ব্রহ্মা, তিনি আবার সৃষ্টির দেবতা। তাই ব্রহ্মাকে তুষ্ট করতেই কপালে লাল সিঁদুর পড়েন সকলে। শক্তির সাধক তান্ত্রিকরাও কপালে রক্তবর্ণ সিঁদুর ধারণ করে থাকেন। আসলে ব্রহ্মাকে তুষ্ট রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা। এমনটাও হতে পারে স্বয়ং সৃষ্টি কর্তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের জন্য হয়তো সিঁদুর খেলার সূচনা হয়েছিল প্রাচীন ভারতে‌। যে সময়ই সিঁদুর খেলার প্রচলন হয়ে থাকুক, যে উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকুক, দশমীতে একে অপরকে সিঁদুর মাখানোটা  এখন ছোটখাটো উৎসব বা অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে, অত্যন্ত আনন্দের সাথে, বছরের পর বছর ধর্মের এই রীতি, এই ঐতিহ্য পালন করে চলে চলেছেন মাতৃজাতি।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

Tags:

Durga Puja

Durga puja 2022

Bijoya Dashmi

Shindoor khela


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর