Ghot Puja: সমুদ্র মন্থনে ওঠা বিষকে রাখার জন্য একটি বড় ঘটের আকৃতির পাত্র তৈরি করেছিলেন বিশ্বকর্মা, সেই থেকেই নাকি ঘটের প্রচলন....
বলা হয়, এই ঘট হল আমাদের দেহের প্রতিরূপ (প্রতীকী ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: যে কোনও পুজোতে ঘট অপরিহার্য। ঘট ছাড়া কোনও পুজো হয় না। ঘট (Ghot Puja) বিসর্জন হলেই দেবতার বিসর্জন হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হয়। ঘট এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? সমস্ত ধরনের পুজো (Durga Puja 2024), যে দেবতার উদ্দেশে পুজো, সবটাই ধারণ করে থাকে ঘট। বলা হয় ঘটই হল আমাদের দেহের প্রতিরূপ। দেহকে তাই দেহ ঘট বলা হয়ে থাকে। ঘটের বিভিন্ন অংশের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণের আগে, জেনে নেওয়া যাক ঘটের প্রথম ব্যবহার সম্পর্কে প্রচলিত এক পৌরাণিক গল্প। সমুদ্র মন্থনের কথা কমবেশি সকলেই জানি আমরা। ক্ষীরসাগরে সমুদ্রমন্থনের প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ সময় ধরে চলেছিল। এক্ষেত্রে মন্দর পর্বত মন্থনদণ্ড হিসেবে এবং নাগরাজ বাসুকী মন্থনের দড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। মণি, মাণিক্য, রত্ন সবকিছুর সঙ্গে উঠেছিল তীব্র বিষ। যাকে হলাহল বলা হয়ে থাকে। এই বিষকে রাখার জন্য একটি বড় ঘটের আকৃতির পাত্র তৈরি করেছিলেন বিশ্বকর্মা। সেই থেকেই নাকি ঘটের প্রচলন শুরু। এবার ঘটের বিশ্লেষণ করা যাক।
পঞ্চগুড়ির দ্বারা ঘটের পিঠ (Durga Puja 2024) তৈরি করা হয়। এই পঞ্চগুড়ি হল ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম-এর প্রতীক। এক কথায় পঞ্চ মহাভূত। মৃত্তিকা পিঠের উপরে দেওয়া হয় পঞ্চশস্য। এগুলি হল মানুষের পাঁচটা বৃত্তি-কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ ও মৎসর্য্য-এর প্রতীক। ঘটের ভিতরে দেওয়া হয় পঞ্চরত্ন। এগুলি চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, ত্বক ও জিহ্বা-এই পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের প্রতীক। এর ওপরে ঘটটি স্থাপন করা হয়।
প্রথমেই বলা হয়েছে, ঘটকে দেহের প্রতিরূপ মানা হয়। তাই দেহ গঠনে যা যা উপাদানের প্রয়োজন হয়, সবটাই ঘটে রাখতে হয় প্রতীক হিসেবে। ঘটকে জল পূর্ণ করে রাখতে হয়। জল হল এখানে দেহরস বা রক্তের প্রতিরূপ।
আমাদের নজর নিশ্চয়ই এড়িয়ে যায় না, যখন ঘটের ওপর আমরা পঞ্চপত্র বা পাঁচটি পাতা দেখতে পাই। এই পাতা হল মানবদেহের গ্রীবার প্রতীক।
ঘটের (Ghot Puja) শীর্ষে থাকে নারকেল। অনেকে লক্ষ্য করে থাকবেন, মানবদেহের মুখের আকৃতির মতো হয় নারকেল। নারকেলেও চোখ-নাকের আকৃতি থাকে। ঘটের শীর্ষে নারকেল দেওয়া হয় মুখমণ্ডলের প্রতীক হিসেবে। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীরা মনে করেন, ঘটে স্বয়ং দেব-দেবীরা অবস্থান করেন। প্রতিমার প্রতীক হিসেবে ঘট পুজো করা হয়। সাকার রূপে থাকে দেবদেবীর প্রতিমা এবং নিরাকার রূপে থাকে ঘট। অনেক বাড়িতেই প্রতিমা ছাড়া দুর্গাপুজো বা যে কোনও পুজো হয় শুধুমাত্র ঘট স্থাপনের দ্বারা।
-ঘট স্থাপনে দরকার হয় মাটি। গঙ্গা মাটি হলে ভালো হয় বলে মনে করেন হিন্দু পণ্ডিতরা। গঙ্গা মাটি না পেলে পবিত্র কোনও পুকুরের মাটি লাগে।
-ঘটের মধ্যে দেওয়ার জন্য দরকার পঞ্চপাতা (Durga Puja 2024)। পাতাগুলি যেন একত্রে পাঁচটি বা সাতটি থাকে।
-পণ্ডিতদের মতে তেল, ঘি এবং সিঁদুরের গুঁড়ো একত্রে মিশিয়ে দেওয়ার পরে সেই মিশ্রণের ফোঁটা লাগিয়ে দিতে হয় প্রত্যেক পাতায়। ডাবের ওপর স্বস্তিক চিহ্ন আঁকতে হয়। ডাবের ওপরে রাখতে হয় একটি নতুন গামছা। চারদিকে চারটি তীর কাঠি পুঁতে কাঠিগুলিতে বাঁধতে হয় লাল ধাগা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।