img

Follow us on

Thursday, Nov 21, 2024

Durga Puja 2024: মহা তৃতীয়ায় আরাধিত হন মাতা চন্দ্রঘণ্টা, কেন দেবীর এমন নামকরণ?

Devi Chandra Ghanta: তাঁর ঘণ্টার শব্দেই দৈত্যদের প্রাণ ভয়ে খাঁচাছাড়া হওয়ার অবস্থা হয়েছিল....

img

রাজা ইন্দ্র ঐরাবৎ হাতির গলার ঘণ্টা থেকে একটি নিয়ে দেবীর হাতে দিয়েছিলেন বলে পুরাণে উল্লেখ রয়েছে (ফাইল ছবি)

  2024-10-04 16:29:16

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহিষাসুরের দখলে তখন সম্পূর্ণ স্বর্গরাজ্য। দেবতা, মুনি, ঋষি কেউই রম্ভা পুত্রের ভয়ঙ্কর বীভৎস অত্যাচারে টিকতে পারছেন না। দেবতারা পরাস্ত এবং বিতাড়িত। ব্রহ্মার বরদানে মহিষাসুরকে প্রতিহত করার কেউ নেই। মহিষাসুর জানতেন ব্রহ্মার আশীর্বাদে কোনও পুরুষ তাঁকে হত্যা করতে পারবে না। বিতাড়িত দেবতামু, নি, ঋষিরা শরণাপন্ন হলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের। মহিষাসুরের অত্যাচারের কাহিনি শোনার পর ক্রোধান্বিত হলেন ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। ক্রোধাগ্নির প্রচণ্ড তেজ সম্মিলিত হয়ে মহর্ষি কাত্যায়ন ঋষির আশ্রমে সৃষ্টি হল এক নারীর। তিনি মা দুর্গা (Durga Puja 2024)।

রাজা ইন্দ্র ঐরাবৎ হাতির গলার ঘণ্টা থেকে একটি নিয়ে দেবীর (Durga Puja 2024) হাতে দিলেন

নবরাত্রির ন'দিনে মা দুর্গা নয়টি রূপ ধারণ করে অসুরদের সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধ করেছিলেন। নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিতা হন মাতা চন্দ্রঘণ্টা (Devi Chandra Ghanta)। প্রবল তেজসম্পন্ন এই দেবী (Durga Puja 2024) মাতা চন্দ্রঘণ্টা, ঘণ্টা বাজিয়ে অসুরদের সতর্ক করেন। এখনকার ভাষায় ওয়ার্নিং বলা যেতে পারে। তাই দেবীর নাম চন্দ্রঘণ্টা। কালিকাপুরাণে দেবীর এমন নামকরণের উল্লেখ পাওয়া যায়। কাত্যায়ন মুনির আশ্রমে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের তেজ থেকে সৃষ্ট নারী মূর্তিকে যখন সমস্ত দেবতা একে একে অস্ত্র দ্বারা সজ্জিত করছিলেন, তখন দেবতাদের রাজা ইন্দ্র তাঁর বাহন ঐরাবৎ হাতির গলার ঘণ্টা থেকে একটি ঘণ্টা নিয়ে দেবীর একটি হাতে দিলেন।

ঘণ্টার শব্দেই দৈত্যদের প্রাণ ভয়ে খাঁচাছাড়া অবস্থা হয়েছিল

পুরাণে উল্লেখ রয়েছে, অসুরদের সঙ্গে প্রবল যুদ্ধ চলাকালীন মাতা (Durga Puja 2024) চন্দ্রঘণ্টার এই তীব্র ঘণ্টানাদ বিকট শব্দ সৃষ্টি করেছিল। সেই ঘণ্টার শব্দেই দৈত্যদের প্রাণ ভয়ে খাঁচাছাড়া  হওয়ার অবস্থা হয়েছিল। অসুরদের অশুভ শক্তিকে হরণ করার জন্যই মাতা চন্দ্রঘণ্টা ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন। পৌরাণিক কাহিনিতে এও দেখা যাচ্ছে যে, যুদ্ধ শেষে মাতার এই ঘণ্টার শরণাপন্ন হচ্ছেন দেবতা, মুনি, ঋষিরা। তাঁরা বলছেন, “সা ঘণ্টা পাতু নো দেবি পাপেভ্যো নঃ সুতাম্ইব”। যার অর্থ বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায়, হে মা, তোমার এই প্রবল ঘণ্টাধ্বনি যেভাবে অসুরদের শক্তি ক্ষয় করে, তাদের দুর্বল করেছিল, ঠিক সেভাবেই এই ঘণ্টা যেন আমাদের ভিতরে থাকা সমস্ত পাপবোধকে হরণ করে নেয়। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, কল্যাণকারী মাতা (Devi Chandra Ghanta) তাঁদের জীবন থেকে সমস্ত পাপবোধ, ভয়, শত্রুতা, বাধা-বিঘ্ন হরণ করে নেন।

দেবী চন্দ্রঘণ্টা আসলে হিমালয়কন্যা ও শিবের স্ত্রী মাতা পার্বতী

পৌরাণিক কাহিনিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, দেবী চন্দ্রঘণ্টা আসলে হিমালয়কন্যা ও শিবের স্ত্রী মাতা পার্বতী। শিব-পার্বতীর বিবাহ পণ্ড করতে তারকাসুর দৈত্য, দানবদের মিলিত এক বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করে। এই অবস্থায় বিবাহকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে দেবী পার্বতী, মাতা চন্দ্রঘন্টার রূপ ধারণ করেন। তিনি ছিলেন বাঘের পিঠে সওয়ার। চন্দ্রের মতো বিশালাকার ঘণ্টা তিনি বাজাতে থাকেন। ঘণ্টার তীব্র আওয়াজে ভীতগ্রস্ত হয়ে দানবরা রণে ভঙ্গ দেয়। একটি পৌরাণিক মত অনুযায়ী, দেবী পার্বতী এক্ষেত্রে কোনও উগ্র ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেননি। কারণ জন্মের পর যখন দশম মহাবিদ্যা ও বিশ্বরূপ দেবী পার্বতী তাঁর পিতা এবং মাতাকে দর্শন করিয়েছিলেন, তখন দেবী পার্বতীকে তাঁর মাতা মেনকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিয়ে নিয়েছিলেন যে যখন দেবী পার্বতী নিজ পিতৃগৃহে অবস্থান করবেন, তখন কোনও অবস্থাতেই তিনি উগ্র রূপ ধারণ করবেন না এবং তৃতীয় চক্ষুকে লুকিয়ে রাখবেন। অর্থাৎ মাতা পার্বতী (Durga Puja 2024) পিতৃগৃহে থাকলে শান্ত হিমালয় কন্যা হিসেবেই থাকবেন।

কল্যাণ প্রদানকারী মাতা চন্দ্রঘণ্টা

কল্যাণ প্রদানকারী মাতা চন্দ্রঘণ্টার বাহন বাঘ অথবা সিংহ। তিনি ত্রিনয়নী এবং কপালে ঘণ্টার আকৃতির অর্ধচন্দ্রের অবস্থান। মাতা চন্দ্রঘণ্টা আসুরিক শক্তিকে ধ্বংস করতে বা বিনাশ করতে সদা প্রস্তুত। তাঁর ভক্তদের বিশ্বাস মাতা চন্দ্রঘণ্টা জীবনের সকল বাধাবিঘ্ন দূর করে চলার পথকে সুগম করে তোলেন। এই দেবীর পছন্দের রঙ কমলা বলেই মনে করেন ভক্তরা। তাই এই নির্দিষ্ট রঙের পোশাক পরিধান করে মাতা চন্দ্রঘণ্টার আরাধনা করলে সুফল বা শুভফল মেলে বলে ভক্তদের ধারণা। মাতার উদ্দেশে তাঁর ভক্তরা সাধারণত দুগ্ধজাত ভোগ নিবেদন করেন মায়ের নৈবেদ্যতে, এটা সাধারণত মিষ্টি, ক্ষীর বা রাবড়ি হয়। ভক্তদের বিশ্বাস এতে মাতা চন্দ্রঘণ্টা প্রসন্ন হন।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

bangla news

Bengali news

madhyom bangla

Durga Pujo

bengal durga puja

hindu festivals

durga puja 2024

ma durga

ma mahamaya

festivals of bengal

Devi Chandra Ghanta


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর