Jute Craft: এখানে মা দুর্গা উঠে যেতে বসা শিল্পের পুনরুজ্জীবনের বার্তাবাহক
পাট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এ এক অন্য দুর্গা (Durga Puja 2024)। এখানে মা শুধু মূর্তি নন। তিনি একটি সম্প্রদায়ের কাছে ভবিষ্যৎ জীবন ধারণের আশা ও ভরসার প্রতীক। একটি উঠে যেতে বসা শিল্পের পুনরুজ্জীবনের বার্তাবাহক। শিল্পী এখানে মূর্তি গড়েছেন এক অনন্য ভাবনা নিয়ে। মূল বিষয়ে ঢোকার আগে একটু পিছন ফিরে তাকানো যাক। আমরা অনেকেই জানি, স্বাধীনতার পর দেশভাগের ফলে পাট চাষের অধিকাংশ জমিই চলে গিয়েছিল বাংলাদেশের ভাগে। উল্টোদিকে আবার বেশির ভাগ পাটকল চলে এসেছিল ভারতের দিকে বা পশ্চিমবঙ্গে। মুর্শিদাবাদ জেলায় চাষিদের মধ্যে পাট চাষের আগ্রহ ছিল প্রবল। কিন্তু হলে কী হবে, আখ চাষের মতো পাট চাষেও মূল্য না পেয়ে এই চাষ থেকে তাঁরা ধীরে ধীরে সরে যেতে থাকেন। কিন্তু চিরদিনই তো সমান যায় না। এরপর পলিথিন বা প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে ফের তাঁরা আশার আলো দেখতে শুরু করেন। সবার মনেই আশা জাগে, বোধহয় পাঠ শিল্প এবার ঘুরে দাঁড়াবে। ঘুরে দাঁড়াবে কি না, সেটা এই মুহূর্তে লাখ টাকার প্রশ্ন। সেদিকে না গিয়ে পরিবেশ সচেতনতার কথা মাথায় রেখে বহরমপুরের রাজেশ দাস এবার কান্দির এক পুজো কমিটির জন্য মা দুর্গার চিন্ময়ী রূপ তুলে ধরছেন পাঠ শিল্পের মাধ্যমেই।
রাজেশ দাস প্রতি বছরই মা দুর্গার মূর্তিতে অভিনবত্ব তুলে ধরেন। এবার তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম শিল্প পাটকে নিয়ে খুব সুন্দর দুর্গা প্রতিমা কান্দির এক পুজো কমিটির জন্য তৈরি করছেন, যার প্রস্তুতি শেষের দিকে। কিন্তু কীভাবে এই কাজটা করছেন তিনি? দেখা গেল, তিনি এবার পাটের তৈরি বস্তা এবং দড়ি দিয়েই মা দুর্গার মূর্তি তৈরি করছেন। প্রতিমা তৈরি করতে তাঁর সময় ব্যয় হয়েছে সাড়ে তিন মাস। এখন কাজ (Durga Puja 2024) প্রায় শেষের দিকে। তিনি বলেন, বর্তমানে পলিথিনের রমরমা অবস্থায় পাট শিল্প বিলীনের পথে। তাই এই পাটকে মা দুর্গার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে এবছর পাটের দুর্গা প্রতিমার তিনি তৈরি করলেন, যাতে মা দুর্গার সংস্পর্শে এসে পাট আবার তার শ্রেষ্ঠ আসন নিতে পারে এবং পাট চাষিরাও উৎসাহিত হয়ে ওঠেন।
তিনি বলেন, পাট শিল্পীরা যাতে আবার পাট চাষে উৎসাহ ফিরে পান, সেটাই মায়ের মাধ্যমে আমার আবেদন। আমি চাই আমার কর্ম মানুষের মধ্যে জাগ্রত হয়ে থাকুক। এটা তো অর্থ দিয়ে বিচার করা যাবে না। আমি চাই আমার কর্ম (Jute Craft) মানুষ দেখুক, আমার যেটুকু পারিশ্রমিক সেটুকু পেলেই আমি খুশি। যারা ক্ষুদ্র শিল্পী তারাও হারিয়ে যাওয়া পাট শিল্পে মনোনিবেশ করে নানান ধরনের জিনিস তৈরি করুক এবং এইসব নিয়ে ভাবুক। সেই কারণেই প্রতি বারই আলাদা আলাদা নতুনত্ব জিনিস দিয়ে পরিবেশ সচেতনতার মাধ্যমে মা দুর্গার চিন্ময়ী রূপ (Durga Puja 2024) ফুটিয়ে তুলি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।