Sundarbans: রাজবাড়ি থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই ধ্বংসস্তূপে পরিণত! তবুও নিয়মনিষ্ঠার সঙ্গে হয়ে চলেছে মা দুর্গার আরাধনা
মা দুর্গার মূর্তি (বাঁ দিকে), ভগ্নপ্রায় জমিদার বাড়ি (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: একটু একটু করে সময় যত এগিয়েছে, বেড়েছে পুজোর (Durga Puja 2024) বয়স। এই বছর ৩০৬ তম বর্ষে পদার্পণ করল ঘোষবাড়ির দুর্গাপুজো। ১১৫২ সালে ভগীরথ ঘোষ এই ঘোষবাড়ির পুজোর সূচনা করেন। শোনা যায়, সে যুগে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা প্রায়ই বন্যার কবলে পড়ত। এর পাশাপাশি বর্গিদের আক্রমণও চলত সমানতালে। আর সেই বন্যার প্রকোপের হাত থেকে রক্ষা পেতে ও বর্গিদের আক্রমণ থেকে নিজেদের, প্রজাদের ও সকল গ্রামবাসীর সুরক্ষার্থে করঞ্জলী অঞ্চলে সেই সময় জমিদার ভগীরথ ঘোষ ধুমধাম করে শুরু করেন দুর্গাপুজো। শোনা যায়, সেই সময় জমিদার ভগীরথ ঘোষ কুলপি সহ আশপাশের বেশ কিছু জায়গা কিনে প্রচুর ভূসম্পত্তির মালিক হয়ে উঠেছিলেন। সুবিশাল ছিল তাঁর রাজ্যপাট, ছিল প্রজাবর্গ।
আর হয় না পাঁঠা বলি (Durga Puja 2024)
এই দুর্গাপুজোর সময় নাকি দূরদূরান্তের প্রজারা আসতেন এই জমিদার বাড়িতে। পুজোর ক'টা দিন তাঁদের থাকা-খাওয়ার জন্য ছিল আলাদা আলাদা ঘর, আলাদা আলাদা ব্যবস্থাপনা। এই পুজোকে কেন্দ্র করে ছিল বলিদান প্রথা। আর তার জেরেই মাংস মহাপ্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করতে পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে প্রজারা জড়ো হতেন। পাশাপাশি ভোগপ্রসাদ তৈরির জন্য ছিল বিশাল বিশাল উনুন। সময়ের সঙ্গে রাজবাড়ি থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে কালক্রমে করোনা মারণব্যাধির সময় থেকে ঘোষ পরিবারের সদস্যরা পাঁঠা বলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। তাই সেই সময় থেকে আর হয় না পাঁঠা বলি।
তৎকালীন সময়ে দুর্গাদালানের সামনে অনুষ্ঠিত হত নাটক, যাত্রা থেকে শুরু করে নানা অনুষ্ঠান (Durga Puja 2024)। ঘোষবাড়ির প্রবেশের সম্মুখে বাঁদিকে তাকালেই চোখে পড়বে সেই যাত্রাদলের ভগ্নপ্রায় গ্রিনরুমের দৃশ্য। এখন সেসবই অতীত। তবে সেই সময়কার জৌলুশ কালক্রমে ধরে রাখা সম্ভব না হলেও এখনও নির্দিষ্ট রীতি মেনে শ্রদ্ধা, নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁরা পুজো করে চলেছেন প্রত্যেক বছর। তবে দুর্গাপুজোর পাশাপাশি দুর্গাদালানের পাশেই প্রতিষ্ঠিত রয়েছে 'শ্যামসুন্দর জীউ'-এর মন্দির, যেখানে নিত্যপুজোর পাশাপাশি তিনদিন সাড়ম্বরে পালিত হয় রাস উৎসব। জমিদার আর নেই, জমিদারের জমিদারিত্ব অনেকাংশ কমে গিয়েছে। তবে বংশধরেরা এখনও পর্যন্ত নিয়মনিষ্ঠার সঙ্গে মা দুর্গার আরাধনা করে চলেছেন। দূরদূরান্তের সমস্ত আত্মীয় পুজোর সময় উপস্থিত হন এই ঘোষ পরিবারে। পুজোর চারটে দিন খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে গমগম করে এই ঘোষ পরিবার।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।