Bijoya Dashmi: 'দশমী' কথাটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিদায় বেলার যন্ত্রণা, আরও এক বছরের অপেক্ষা।
বিজয়া দশমীতেই ভেজা চোখে হিন্দুরা বিদায় জানায় তার ঘরের মেয়ে উমাকে (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দুধর্ম বিশ্বাস অনুসারে, মানুষের দেহ আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও মাটি-এই পাঁচ উপাদান দিয়ে তৈরি। একই ভাবে পাঁচ উপাদান দিয়েই তৈরি হয় প্রতিমাও (Durga Puja 2024)। মাটির মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার পর তাকে প্রতিমা বলে। পুজো শেষে বিদায় বেলায় সেই মূর্তি আবার প্রাণহীন হয়ে পড়ে। আর সেই মূর্তিকে (Bijoya Dashmi) আবার পঞ্চতত্ত্বে বিলীন করতেই বিসর্জনের রেওয়াজ রয়েছে। প্রতিমা পুজোর শেষ ধাপ হল বিসর্জন (Durga Visarjan)। পুজো শেষে প্রতিমাকে জলে বিসর্জন দিয়ে আবার প্রকৃতিতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সনাতন ধর্মে শুরু থেকেই গঙ্গাজলে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। হিন্দু শাস্ত্রবিদদের মতে, আমাদের হৃদয়ে যে নিরাকার ঈশ্বর রয়েছেন, উপাসনার জন্য মাটির প্রতিমা তৈরি করে তাকে সাকার রূপ দেওয়া হয়। পুজোর (Durga Puja 2024) শেষে পুনরায় সেই সাকার রূপকে বিসর্জন দিয়ে নিরাকার ঈশ্বরকে হৃদয়ে ফিরিয়ে আনা হয়। সেই কারণেই দুর্গাপুজোর সময় প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে পরের বছর আবার আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়।
'দশমী' কথাটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিদায় বেলার যন্ত্রণা। আরও এক বছরের অপেক্ষা। দুর্গাপুজোর আনন্দে তাল কাটে এই দশমীতেই। বাঙালিদের কাছে মা দুর্গা ঘরের মেয়ে। আর ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরলে যেমন আনন্দ উপচে পড়ে, ঠিক সেভাবেই চলে যাওয়ার সময় মন খারাপের সুর বাজে সানাইয়ে। বিজয়া দশমীতেই (Bijoya Dashmi) ভেজা চোখে হিন্দুরা বিদায় জানায় তার ঘরের মেয়ে উমাকে। ওই দিনই শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেন উমা। এই দিন বনেদি বাড়ির পুজোর পাশাপাশি বারোয়ারি পুজোতেও বাড়ির মহিলারা একে একে বরণ করেন প্রতিমাকে। তার পর চলে মহিলাদের সিঁদুর খেলা। কিছু বনেদি বাড়িতে প্রথা মেনে দেওয়া হয় কনকাঞ্জলি। এর পর প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে। সেখানে নৌকোতে চেপে বিসর্জন দেওয়া হয়।
দশমীকে ‘বিজয়া’ বলার পিছনে পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে। পুরাণের মহিষাসুর বধ কাহিনিতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে তাঁর বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিলেন দেবী দুর্গা। তাই তাকে 'বিজয়া' বলা হয়। এছাড়াও শ্রীশ্রীচণ্ডী কাহিনি অনুসারে, দেবীর আবির্ভাব হয় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে। পরে শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর বধ করেছিলেন তিনি। তাই বিজয়াকে দশমী বলা হয়। উত্তর ও মধ্য ভারতে এই দিনে দশেরা উদযাপিত হয়। তবে তার তাৎপর্য সম্পূর্ণ আলাদা। 'দশেরা' শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত শব্দ 'দশহর' থেকে। যার অর্থ দশানন রাবণের মৃত্যু। বাল্মীকি রামায়নে বলা হয়েছে, আশ্বিন মাসের ৩০ তম দিনে অযোধ্যা প্রত্যাবর্তন করেন রাম, সীতা, ও লক্ষণ। রাবণবধ ও রামচন্দ্রের এই প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যেই যথাক্রমে দশেরা (Durga Puja 2024) ও দীপাবলি পালন করা হয়ে থাকে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।