দেবী দশভূজা! অশুভের বিনাশে তাঁর হাতে কোন কোন অস্ত্র?
দশভৃজা দেবী দুর্গা।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বজননী দেবী দুর্গার কোনও নির্দিষ্ট রূপ নেই। তাঁকে কোনও এক রূপের আধারে ধরা যায় না বলেই তাঁর অনেক রূপ। দেবী দুর্গার এক নাম দশভূজা। তাঁর দশ হাতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র। নানা অস্ত্রে সজ্জিতা দেবী অশুভকে সংহার করতে মর্ত্যে আসেন। মানব-জাতির সকল অন্ধকার দূর করতে, অশুভের বিনাশে তিনি অস্ত্র হাতে তুলে নেন। জানেন কি দেবীর নানা অস্ত্রের মাহাত্ম্য?
দেবীকে রণসাজে সাজালেন কারা?
ত্রিশূল: দেবাদিদেব মহাদেব ত্রিশূল দান করেছিলেন মা দুর্গাকে। ত্রিশূলের তিনটি ফলা আসলে ‘ত্রিগুণ’-এর প্রতীক। প্রত্যেক জীবের মধ্যেই বর্তমান থাকে সত্ত্ব, রজঃ এবং তমঃ—এই ত্রিগুণ। সত্ত্ব হল ধর্ম জ্ঞান, রজঃ মানে অহঙ্কার এবং তমঃ মানে অন্ধকার।
সুদর্শন চক্র: ভগবান শ্রীবিষ্ণু তাঁর সুদর্শন চক্রটি দিয়েছিলেন দেবীকে। এই চক্র নির্দেশ করে, বিশ্ব নিয়ন্ত্রিত হয় দেবীর দ্বারা এবং ব্রহ্মাণ্ড আবর্তিত হয় সৃষ্টিকে কেন্দ্র করে।
পদ্ম: দেবীকে পদ্ম দিয়েছিলেন ব্রহ্মাদেব। পদ্ম হল ব্রহ্মের প্রতীক বা জ্ঞানের প্রতীক। অর্ধস্ফুট পদ্ম মানব চেতনে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের জাগরণকে নির্দেশ করে।
তির এবং ধনুক: পবনদেব ও সূর্যদেব দেবীকে দিয়েছিলেন তির ও ধনুক। তির ও ধনুক হল প্রাণশক্তির প্রতীক। ধনুক যেখানে সম্ভাব্য ক্ষমতাকে নির্দেশ করে, তির নির্দেশ করে গতিময়তা। একইসঙ্গে তির ও ধনুক দ্বারা বোঝানো হয় যে মা দুর্গা ব্রহ্মাণ্ডের সকল শক্তির উৎস।
অসি: গণেশদেব মা দুর্গাকে দিয়েছিলেন অসি। এই অস্ত্র জ্ঞান এবং ধীশক্তির প্রতীক। অসি দ্বারা বোঝানো হয়, জ্ঞানের তীক্ষ্ণতা এবং দীপ্তি নির্দেশ করে বুদ্ধিকে।
বজ্র: ইন্দ্রদেব মা দুর্গাকে দেন বজ্র অস্ত্রটি। বজ্র হল আত্মশক্তির প্রতীক। সামান্য মেঘের ঘর্ষণ থেকে যেভাবে অমিত বজ্রশক্তি উৎপন্ন হয় তেমনই আত্মশক্তি তৈরি হয় কর্ম থেকেই।
বর্শা: এই অস্ত্র পবিত্রতা এবং ভুল ও ঠিকের প্রতীক। অগ্নিদেব বর্শা প্রদান করেছিলেন মা দুর্গাকে।
সর্প: মহাদেব অস্ত্র হিসেবে মা দুর্গাকে প্রদান করেছিল সাপ। সর্প হল চেতনা ও শক্তির প্রতীক। দেবীর হাতে সাপ বোঝায়—চেতনার নিম্ন স্তর থেকেও সাধনার মাধ্যমে যে উচ্চতর পর্যায়ে পৌঁছনো যায়।
কুঠার: বিশ্বকর্মা কুঠার প্রদান করেছিলেন দেবীকে। অশুভের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক কুঠার। একই সঙ্গে যে কোনও পরিস্থিতিতে ভীত না হওয়ার প্রতীকও হল কুঠার।
শঙ্খ: বরুণ দেব মহামায়াকে দিয়েছিলেন শঙ্খ। যার ধ্বনি মঙ্গলময়। শঙ্খের আওয়াজে স্বর্গ, মর্ত্য ও নরক জুড়ে থাকা সব অশুভ শক্তি ভীত ও দুর্বল হয়ে পড়ে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।