Siddhidata: গণেশ চতুর্থী পালনে পরিবারে আসে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি…
সিদ্ধিদাতা গণেশ। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সিদ্ধিদাতা (Siddhidata) গণেশকে সঙ্কট মোচক বলা হয়। জীবনের সকল বাধা দূর করেন গণপতি বাপ্পা। আবার ভারতের জাতীয়তাবোধের উন্মেষের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত গণেশ পুজো। পরাধীন ভারতে মহারাষ্ট্রে গণপতি উৎসব (Ganesh Chaturthi 2024) শুরু করেছিলেন লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক। হিন্দু জাতীয়তাবাদী উৎসব হিসেবে তা ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিল। বাল গঙ্গাধর তিলকের আগে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজও সপ্তদশ শতকে গণেশ উৎসব করেছিলেন। গণপতির প্রতিমা, গেরুয়া পতাকা ও বাজনার সহযোগে শোভাযাত্রার মাধ্যমে গণেশ উৎসব পালন করা হয়। পিছিয়ে নেই বাংলাও। বিগত বছরগুলিতে গণেশ চতুর্থী পালন লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে। প্যান্ডেল, প্রতিমা, চোখ ধাঁধানো আলোর মালা, এসব দিয়েই বাঙালি সমাজ মেতে ওঠে গণপতি বাপ্পার আরাধনায়। আসুন জেনে নিই গণেশ পুজোর মাহাত্ম্য।
২০২৪ সালের গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi 2024) পড়েছে আজ, ৭ সেপ্টেম্বর, শনিবার। তবে পুজোর তিথির ৬ সেপ্টেম্বর থেকেই পড়েছে। শুক্রবার, দুপুরে ৩টে ৩১ মিনিট থেকে এই পুজোর মাহেন্দ্রক্ষণ শুরু এবং তিথি শেষ হচ্ছে ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা ৩৭ মিনিটে। আবার উদয়া তিথি অনুসারে গণেশ চতুর্থী ৭ সেপ্টেম্বর পালিত হবে। কলকাতায় গণেশ চতুর্থীর পুজো করা হবে দৃক পঞ্জিকা অনুসারে। এই পঞ্জিকা মতে ৭ সেপ্টেম্বর বেলা ১১.০৩ মিনিট থেকে শুরু হবে তিথি এবং দুপুর ১.৩৪ মিনিট পর্যন্ত চলবে পুজো। অপর দিকে সাধারণ পুজোর সময় সকাল ১০.২০ মিনিট শুরু হবে আর এবং চলবে দুপুর ১২.৪৯ মিনিট পর্যন্ত।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi 2024) হল গণপতি (Siddhidata) বাপ্পার জন্মতিথি। এদিনই মা পার্বতীর কোলে এসেছিলেন গণেশ। ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথি (Ganesh Chaturthi 2024) তাই গণেশ চতুর্থী নামে জনপ্রিয়। এই দিনটি আবার বিনায়ক চতুর্থী নামেও পরিচিত। ভক্তদের বিশ্বাস, গণেশের পুজো ঘরে সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি বয়ে নিয়ে আসে। তবে গণেশ চতুর্থী নিয়ে পুরাণেও মতভেদ দেখা যায়। শিব পুরাণে ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থীকে গণেশের জন্মতিথি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। অন্যদিকে, আবার গণেশ পুরাণ অনুযায়ী, পার্বতী নন্দনের আবির্ভাব ঘটেছিল ভাদ্রের শুক্ল চতুর্থীতে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, ভাদ্রমাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থীতে রাতে চাঁদ দর্শন নিষিদ্ধ। বিশ্বাস করা হয় যে, এই রাতে যে ব্যক্তি চাঁদের দিকে তাকায়, সে মিথ্যা কলঙ্ক পায়।
স্কন্দপূরাণ মতে, শ্রী গণেশ (Ganesh Chaturthi 2024) জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে। সমস্ত দেবদেবীর মধ্যে গণেশের পুজো প্রথমে করা হয়। এর নেপথ্যে এক বিশেষ কারণ রয়েছে। কথিত আছে, ভগবান শিব গণেশকে বর দিয়েছিলেন। তাতে বলা হয়, যে কোনও শুভ কাজে এবং আচার-অনুষ্ঠানে প্রথমেই ভগবান গণেশের বন্দনা করা হবে। গণেশের পুজো করলে সমস্ত বাধা দূর হয়। লৌকিক বিশ্বাস যে ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী থেকে এই মাসের চতুর্দর্শী তিথি পর্যন্ত ভগবান গণেশ পৃথিবীতে ১০ দিন অবস্থান করেন। গণেশ চতুর্থীতে মণ্ডপে এবং বাড়িতে গণেশ স্থাপন করা হয়। কথিত আছে গণেশের পুজো করলে জীবন থেকে মানসিক চাপ দূর হয়, সুখ ও সমৃদ্ধি আসে।
আরও পড়ুনঃ “খুব রোখ না হলে, চাষার যেমন মাঠে জল আসে না, সেইরূপ মানুষের ঈশ্বরলাভ হয় না”
গণেশ চতুর্থীর (Ganesh Chaturthi 2024) দিন সকালে স্নান সেরে বাড়ির মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানো হয়। এরপর পুজো ও ব্রতর সঙ্কল্প নেওয়া হয়। এই দিনে শুভ সময়ে গণেশের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভক্তদের ইচ্ছানুযায়ী, গণপতির মূর্তি স্থাপন করা হয়। এরপর গঙ্গাজল দিয়ে প্রতিমার অভিষেক পর্ব চলে। সেই সঙ্গে গণেশকে ফুল ও দূর্বা ঘাস অর্পণ করা হয়। দূর্বা ভগবান গণেশের খুব প্রিয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, দূর্বা নিবেদন করলে ভগবান গণেশ প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের সমস্ত কষ্ট দূর করেন। ভগবান গণেশের পুজোর সময় ঠাকুরকে সিঁদুর লাগানো হয়। প্রিয় ভোগ মোদক বা লাড্ডু নিবেদন করা হয়। পুজো শেষে আরতি করে প্রণাম করা হয়। শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।