Yogini Ekadashi: হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, এর অনেক মাহাত্ম্য রয়েছে। পদ্মপুরাণ অনুযায়ী সমস্ত পাতকের নাশ করে যোগিনী একাদশী...
যোগিনী একাদশীর ব্রত...
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আষাঢ় মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে বিষ্ণুর উদ্দেশে যোগিনী একাদশী (Yogini Ekadashi) ব্রত রাখা হয়। এবছর, আগামী ২৪ জুন, শুক্রবার এই ব্রত পালিত হবে। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, একাদশী তিথি ২৩ জুন বৃহস্পতিবার রাত ০৯:৪১ মিনিটে শুরু হচ্ছে। একাদশী তিথি শেষ হবে ২৪ জুন শুক্রবার রাত ১১.১২টায়।
যোগিনী একাদশীর শুভক্ষণ—
একাদশী তিথি শুরু- ২৩ জুন, রাত ৯টা ৪১ মিনিট।
একাদশী তিথি সমাপ্ত- ২৪ জুন, রাত ১১টা ১২ মিনিটে।
আরও পড়ুন: এবছর অম্বুবাচী শুরু কবে? জেনে নিন এই বিশেষ উৎসবের মাহাত্ম্য
পদ্মপুরাণ অনুযায়ী সমস্ত পাতকের নাশ করে যোগিনী একাদশী। এটি শরীরের সমস্ত আধি-ব্যাধি নষ্ট করে সুন্দর রূপ, গুণ ও যশ প্রদান করে। ৮৮ হাজার ব্রাহ্মণদের ভোজন করালে যে ফল পাওয়া যায়, তার সমান ফল লাভ সম্ভব এই একাদশী ব্রত করলে। এই একাদশী বড়সড় পাপ নাশ করে দেয় এবং মহান পুণ্য দেয়। এই একাদশীর কাহিনী পড়লে ও শুনলে ব্যক্তি সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়ে যায়।
এদিন বিষ্ণুর আরাধনা করা উচিত। হলুদ বস্ত্র ধারণ করে বিষ্ণুর পুজো করা উচিত। হলুদ ফুল, পঞ্চামৃত, তুলসী এবং চন্দন অর্পণ করা উচিত নারায়ণকে। এর পর বিষ্ণু সহস্ত্রনামাবলী পাঠ করতে পারেন। এ ছাড়াও ১০৮ বার "ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায় নমঃ" মন্ত্র জপ করলে সুফল পতে পারেন।
এই দিনের পালনীয় কর্তব্য—
যাঁরা একাদশী ব্রত পালন করেন, এদিন উপবাস করেন তাঁরা। যাঁরা পুরনো পাপ থেকে মুক্তি পেতে চান, তাঁদের জন্য এই একাদশী পালন করা জরুরী, এর ফলে স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। এদিন বিষ্ণু মন্ত্র বা বিষ্ণু সহস্রনাম জপ করতে হয়। বলা হয়, যোগিনী একাদশী পালন করলে ৮৮ জন ব্রাহ্মণভোজন করানোর পুণ্যলাভ হয়। হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি এই মহাপাপবিনাশকারী ও পুন্যফলপ্রদায়ী যোগিনী একাদশীর কথাপাঠ এবং শ্রবণ করে সে অচিরেই সর্বপাপ থেকে মুক্ত হয়।
আরও পড়ুন: বাড়িতে তুলসী মঞ্চ সঠিক নিয়মে রেখেছেন তো? নয়তো হতে পারে অমঙ্গল!
এই তিথির গুরুত্ব—
১. বাড়িতেই এই তিথি পালন করে লাভ করুন ১০ বছরের পূণ্য লাভ। এই একাদশীতে ভগবান বিষ্ণুর পাশাপাশি মহাদেবী লক্ষ্মীরও পুজো করতে পারেন।
২. এই পুজোয়, দক্ষিণমুখী শঙ্খগুলিতে জাফরান মিশ্রিত দুধ রাখুন এবং সেই দিয়েই আরাধ্য ঈশ্বরের অভিষেক করুন। এই অভিষেক গোপালও খুব পছন্দ করেন।
৩. বাড়িতে গোপাল থাকলে এদিনে গোপালকেও মাখন ও মিছরি দিয়ে পুজো দিতে পারেন।
৪. বিশেষ এই একাদশী তিথিতে শিবলিঙ্গ তামার পাত্র দিয়ে জল অর্পণ করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
৫. সেই সঙ্গে শিব লিঙ্গে জল ঢালার সময় ওম নম: শিবায় মন্ত্র জপ করুন। এই মন্ত্র কমপক্ষে ১০৮ বার উচ্চারণ করা প্রয়োজন।
৬. পাশাপাশি শিবলিঙ্গে বিল্বপত্র এবং ধুতরা ফুল অর্পণ করুন। প্রদীপ এবং কর্পূর জ্বালিয়ে আরতি করুন।
৭. এই একাদশীর তিথিতে বজরঙ্গবলীর সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে হনুমান চালিশা পাঠ করুন।
৮. পুজোর পরে দুঃস্থদের অর্থ ও খাদ্যশস্য দান করা উচিত। এই তিথিতে সকাল বেলায় স্নান সেরে তুলসী গাছে জল অর্পণ করুন।
৯. পাশাপাশি সূর্যাস্তের সময় তুলসীর গাছে প্রদীপ জ্বালান এবং তুলসী মঞ্চ তিন বা পাঁচ বার প্রদক্ষিণ করুন।
আরও পড়ুন: বাড়িতে শঙ্খ আছে! সঠিক ব্যবহারের নিয়ম জানেন তো?
উপবাস ও পুজো বিধি—
১) যোগিনী একাদশীর উপবাস একাদশীর ব্রাহ্মমুহূর্ত যেদিন থাকে সেদিন থেকে শুরু হয় অথবা দশমীর রাত থেকে শুরু হয়।
২) দশমীর রাতে উপবাসের শুরু ফলে ব্রহ্মচর্য পালন করা উচিত। সম্ভব হলে মাটিতে ঘুমনো উচিত।
৩) খুব সকালে উঠে স্নান সারার পর শুদ্ধ মনে ব্রত পালন শুরু করুন।
৪) ঘট প্রতিষ্ঠা করুন এবং এতে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করুন।
৫) প্রয়োজনে নারায়ণের প্রতিমা অর্পণ করে তাতে ফুল, ধূপ, প্রদীপ ইত্যাদি দিয়ে আরতি করুন।
৬) যোগিনী একাদশীর ব্রত কথা দিনের বেলা শুনতে হবে।
৭) ঘরে নারায়ণের মূর্তি না থাকায় অনেকে বট গাছেও পুজো করেন।
৮) রাতে জাগরণও পালন করা উচিত। এইভাবে এই ব্রত পালনের ফলে আপনার জীবনের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং সাত্ত্বিক জীবন যাপন করতে সক্ষম হবেন।