বেতলা অরণ্যের সঙ্গেই ঘুরে নিন নেতারহাট
এই সেই নেতারহাটের সান সেট পয়েন্ট 'ম্যাগনোলিয়া পয়েন্ট'। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডের লাতেহার জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এখানকার অন্যতম জনপ্রিয় এবং অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক পর্যটনকেন্দ্র হল নেতারহাট। বিশেষ করে যাঁরা বেতলা অরণ্যে গিয়েছেন, নেতারহাট (Netarhat) না গেলে ভ্রমণটাই যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সাধারণত বেতলা আর নেতারহাট একসঙ্গেই বেড়িয়ে নেন প্রকৃতিপ্রেমিক পর্যটকেরা। বেতলা থেকে নেতারহাটের সড়কপথে দূরত্ব প্রায় ১২০ কিমি। পথ হল এই রকম-বেতলা-কেড়-ছুপাদোহর-গাড়ু-মারুমার-বারেসাদ (এখান থেকেই জঙ্গলের ভিতরে রয়েছে আর একটি স্পট 'সুগাবাধ')।
বারেসাদ থেকে মহুয়াডার। এখানে থেকে বাঁ দিকের উঁচু-নিচু, জঙ্গলাকীর্ণ পথে খানিকটা পথ গেলে দেখা যাবে এক অপূর্ব জলপ্রপাত 'লোধ ফলস'। মহুয়াডার থেকে প্রায় ১৪ কিমি দূরে অবস্থিত এই জলপ্রপাতটি বুরহা নদীর জলধারা থেকে সৃষ্ট। এটি ঝাড়খণ্ডের উচ্চতম এবং ভারতের ২১ তম উচুঁ ফলস। প্রায় ১৪৩ মিটার উচ্চতা থেকে পাহাড়ের কঠিন পাথরের বুকে ধাক্কা খেতে খেতে নেমে এসেছে জলধার, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আসামান্য।
মহুয়াডার থেকে আরও প্রায় ১৯ কিমি পথ নেতারহাট। নেতারহাটের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্পট হল সান সেট পয়েন্ট, যার অপর নাম 'ম্যাগনোলিয়া পয়েন্ট'। এই নামের পিছনে রয়েছে এক হৃদয়বিদারক ব্যর্থ প্রেমের গল্প। এক বৃটিশ তরুণী আর এক রাখাল যুবকের মধ্যেকার অসম প্রেম মেনে নিতে পারেননি তরুণীর উচ্চপদস্থ বৃটিশ রাজ কর্মচারীর বাবা। হঠাৎ-ই একদিন কোনও অজ্ঞাত কারণে নিখোঁজ হয়ে যান রাখাল যুবক। এর ঠিক পরেই সকলে দেখেন, এক বৃটিশ তরুণী প্রবল গতিতে ঘোড়া ছুটিয়ে এসে পাহাড়ের অতল খাদে মরণঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করলেন। সেই থেকে এই জায়গার নাম 'ম্যাগনোলিয়া পয়েন্ট'। কারণ, সেই বিরহের যন্ত্রণাকাতর বৃটিশ তরুণীর নাম ছিল যে 'ম্যাগনোলিয়া'। এখানে দাঁড়িয়ে চতুর্দিকে ঢেউ খেলানো পাহাড়ের সারির মধ্যে ধীরে চারদিকে রক্তিম আলো ছড়িয়ে সূর্যের অস্ত যাওয়ার মনোরম দৃশ্য দেখতেই মানুষ এখানে (Netarhat) আসেন। ঘুরে নেওয়া যায় আপার ঘাঘড়ি নামের একটি ছোট্ট, কিন্তু অপূর্ব সুন্দর ঝর্নাও।
নেতারহাটের অন্যতম আকর্ষণ প্রায় ১০ কিমি দূরের লোয়ার ঘাঘড়ি ফলস। ঘন অরণ্যের অভ্যন্তরে, নির্জন পরিবেশে এই ফলসটি। ঘাঘড়ি নদীর জলধারা থেকে সৃষ্ট এই ফলসটি ভারতের ৩৩ তম উচুঁ ফলস। প্রায় ৩২২ ফুট উচ্চতা নেমে এসেছে জলধারা। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। দেখে নিন এখানকার (Netarhat) ন্যাশপাতি বাগানগুলো, বিখ্যাত রেসিডেন্সিয়াল স্কুল প্রভৃতি।
দুভাবে ঘোরা যায় নেতারহাট-১) ট্রেনে বেতলা এসে গাড়ি নিয়ে নেতারহাট ঘুরে রাঁচি হয়ে ফেরা যায়। আবার রাঁচি গিয়ে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে নেতারহাট-বেতলা ঘুরে ট্রেনে কলকাতা ফিরে আসা যায়। আর এই পথে রয়েছে বেশ কিছু বন বাংলো, ট্রি হাউজ প্রভৃতি (Netarhat)। এগুলোর বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ: ডিএফও, ডাল্টনগঞ্জ অথবা ফোন করুন ০৯৯৫৫৫২৭৩৭১ নম্বরে। আর নেতারহাটে আছে জেটিডিসি-র হোটেল বনবিহার (ফোন ০৯১০২৪০৩৮৮২) অথবা কলকাতায় এদের অফিস ১২-এ, ক্যামাক স্ট্রিট, কল-১৭ থেকে। আর জঙ্গল সাফারি প্রভৃতির জন্য যোগাযোগ করতে পারেন ০৬২০৬২২০৩১৪ নম্বরে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।