লাতেহার মানেই কি শুধু বেতলা অরণ্য অথবা নেতারহাট?
এই মন্দিরের টানেই দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা, সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের নিকটতম প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) লাতেহার জেলা বিখ্যাত তার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এখানকার গভীর-অগভীর অরণ্য, বন্যপ্রাণী, ঝর্ণা, পাহাড় সহজেই যে কোনও প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকের হৃদয় জয় করে নিতে পারে। কিন্তু লাতেহার মানেই কি শুধু বেতলা অরণ্য অথবা নেতারহাট? এর বাইরেও এই অঞ্চলে রয়েছে এমন কিছু স্থান, যেগুলির আকর্ষণও কিন্তু কোনও অংশে কম নয়।এমনই একটি স্থান হল টোরির উগ্রতারা ছিন্নমস্তা মন্দির বা উগ্রতারা নগর ভগবতী মন্দির। প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন এই মন্দিরটি ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে নির্মাণ করেন টোরির রাজা। স্বয়ং রানী অহল্যা বাই এই মন্দিরে পুজো দিয়ে গিয়েছেন। ঝাড়খণ্ডের অন্যতম শক্তিপীঠ বলে এই মন্দিরকে মান্যতা দেন ভক্তজনেরা। এখানে টানা ১৬ দিন ধরে দুর্গাপুজো হয়, যা সচরাচর অন্য কোথাও দেখা যায় না।
মন্দির স্থাপনের পর থেকেই এখানকার পরম্পরা অনুযায়ী 'জিউনিয়া তেওহার'-এর দ্বিতীয় দিন মায়ের পবিত্র কলস স্থাপন করা হয় এবং মা অষ্টাদশভূজার পুজো শুরু হয়। তার পর থেকে ভক্তি সহকারে এবং বিবিধ আচার মেনে ১৬ দিন ধরে মায়ের পুজো হয়। এই সময় দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এই মন্দিরে। শুধু মাত্র ঝাড়খণ্ড থেকেই নয়, এখানে পুজো দিয়ে মনস্কামনা পূর্ণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে ভক্তরা আসেন পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা থেকেও। মূলত মিছরি এবং নারকেল দিয়ে মায়ের পুজো দেওয়া হয়। তবে পশুবলি দেওয়ার প্রথাও আছে এখানে।
লাতেহার শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৩৮ কিমি। চটকা-চতরা মূখ্য মার্গে (Jharkhand) অবস্থিত এই মন্দিরে পৌঁছনোর সড়ক পথ আছে। টোরি শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০ কিমি। আর রাঁচি থেকে টোরির দূরত্ব প্রায় ৮৫ কিমি। যাওয়া যায় বেতলা অরণ্য থেকেও। বেতলা থেকে যেতে সময় লাগে প্রায় তিন-চার ঘণ্টা। এই সমগ্র পথেই রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি পর্যটন স্থল। ঘুরে নেওয়া যায় সেগুলোও। আর যাতায়াতের পথের দৃশ্যও বেশ মনোরম।
যাতায়াত-রাঁচি বা বেতলা, দুই জায়গা থেকেই এই মন্দির দর্শন করে আবার ফিরে গিয়ে রাত্রিবাস করা যায় রাঁচি বা বেতলায়। সেক্ষেত্রে ট্রেনে এসে রাঁচি বা বেতলা থেকে গাড়ি নিয়ে আসাই সুবিধার।
থাকা খাওয়া-রাঁচিতে রয়েছে প্রচুর হোটেল। এছাড়াও এই পথে রয়েছে বেশ কিছু বন বাংলো। বুকিং করার জন্য যোগাযোগ করতে হবে ডিএফও-র সঙ্গে। প্রয়োজনে ফোন করা যেতে পারে ০৯৯৫৫৫২৭৩৭১ নম্বরে। আর গাড়ি বা জঙ্গল সাফারির জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে ০৬২০৬২২০৩১৪ নম্বরে (Jharkhand)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।