img

Follow us on

Friday, Nov 22, 2024

Kali Puja 2023: বাস্তবেই ছিলেন ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী! জানুন তাঁদের কালীপুজোর কথা

Devi Chaudhurani Kali Puja: এই পুজোর বিশেষ রীতি হল ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি উচ্চারণ...

img

দেবী চৌধুরানী কালী মন্দির (ছবি-সংগৃহীত)

  2023-11-05 16:47:36

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আনন্দমঠের পর এটাই ছিল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত দ্বিতীয় কোনও উপন্যাস, যেখানে ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রাম এবং চরমপন্থী জাতীয়তাবাদ স্থান পেয়েছিল। বুঝতেই পারছেন, এখানে ‘দেবী চৌধুরানী’ উপন্যাসের কথাই বলা হচ্ছে। ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে লিখিত এই উপন্যাসের চরিত্র হরবল্লভের পুত্রবধূ মানে ব্রজেশ্বরের স্ত্রী প্রফুল্ল-র শ্বশুরবাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়া এবং জঙ্গলের মধ্যে ডাকাত দলের সর্দার ভবানী পাঠকের সুনিপুণ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ‘দেবী চৌধুরানী’ হয়ে ওঠার গল্প প্রত্যেক বাঙালির কাছেই এভারগ্রিন। কখনও পুরনো হয় না (Kali Puja 2023)‌।

কাল্পনিক নয়, বাস্তবিক চরিত্র

শার্লক হোমসের লন্ডনের ঠিকানায় (২২১বি বেকার স্ট্রিট) এক সময় প্রচুর চিঠি পাঠাতেন পাঠকরা। তাঁরা ভাবতেন আর্থার কোনান ডায়েল সৃষ্ট এই চরিত্র কাল্পনিক নয় বরং বাস্তবিক। শার্লক হোমস তো কাল্পনিক ছিল। কিন্তু জানেন কি, ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানী সত্যি-সত্যিই ঐতিহাসিক চরিত্র ছিলেন এবং তাঁরা মা কালীর আরাধনা করতেন! তাঁদের প্রচলিত কালীপুজো (Devi Chaudhurani Kali Puja) আজও ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে। শুধু তাই নয়, জলপাইগুড়িতে রয়েছে একটি মন্দির যেখানে ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর মূর্তিও রয়েছে।

উত্তরবঙ্গের দেবী চৌধুরানী মন্দির

জলপাইগুড়ি জেলার শিকারপুর চা বাগান ঘেরা ছোট্ট গ্রামে রয়েছে ঐতিহাসিক দেবী চৌধুরানী মন্দির। পাশাপাশি দুটি মন্দির রয়েছে এখানে। তার মধ্যে একটি মা কালীর মন্দির (Devi Chaudhurani Kali Puja)। কালী মন্দিরের পাশের মন্দিরে একটি পুরুষ ও নারী মূর্তি রয়েছে। পাশাপাশি বাঘ, শিয়াল ও আরও কিছু বিগ্রহ আছে। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন এটি শিব-পার্বতীর মন্দির। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, বিগ্রহটি ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর। মূলত, দেবী চৌধুরানীর মন্দিরের খ্যাতিতেই বিভিন্ন প্রান্তের গবেষকরা এখানে আসেন। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে এটি বাড়তি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। 

তবে এখানকার কালী মন্দিরও জাগ্রত ও প্রসিদ্ধ বলেই স্থানীয় ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে। এই মন্দিরে রীতিমতো নিয়ম ও নিষ্ঠার সঙ্গে বছরে দুবার কালীপুজো হয়। একবার আষাঢ় মাসে, আরেকবার কার্তিক মাসে। বরং এখানকার কালীপুজোর আলাদা রোমাঞ্চ রয়েছে ভক্তদের কাছে। ঝোপ-জঙ্গলে ভরা, অরণ্যের মাঝে এই কালী মন্দিরের অবস্থান। শহরের কোলাহল থেকে নির্জন বনে দেবীর উপাসনা ভক্তদের মধ্যে ‘দেবী চৌধুরানী’ উপন্যাসকে জীবন্ত করে তোলে‌। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ সারারাত জেগে এই পুজো দেখতে যান।

মালদায় কালী মাতা ঠাকুরানি মন্দির

অন্যদিকে, মালদার রতুয়া ২ নম্বর ব্লকের গোবরজনা গ্রামের কালী মাতা ঠাকুরানি মন্দির (Devi Chaudhurani Kali Puja)। প্রচলিত বিশ্বাস মতে, ঘন অরণ্যে ঘেরা ছিল গোবরজনা গ্রাম। পাশেই বয়ে চলেছে কালিন্দী নদী। জনশ্রুতি যে, একবার ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানী বজরা নিয়ে যাচ্ছিলেন কালিন্দী নদী বেয়ে। তাঁদের গন্তব্য ছিল উত্তরবঙ্গ। কিন্তু তাঁদের বজরা মাঝ পথেই থেমে গিয়েছিল নদীর এক বালিয়াড়িতে। দেবী চৌধুরানী স্বপ্নাদেশ পেলেন মা কালীর। তিনি সেখানে তাঁদের পুজো নিতে চান। ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানী সেখানেই মায়ের মূর্তি তৈরি করে পুজো সম্পন্ন করলেন। এই পুজোয় আজও লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়‌। 

যদিও, ধুমধাম করে সম্পন্ন হওয়া গোবরজনার এই কালীপুজো দেবী চৌধুরানীই যে চালু করেছিলেন, তা অনেকেই আবার মানতে চান না‌। ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রিক ছিল না‌। রাঢ়বঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে এই দুই গুরু-শিষ্যার নাম। গবেষকরা মনে করেন, দেবী চৌধুরানী যে বজরা নিয়ে ডাকাতি করতে যেতেন, সেই বজরা নিয়ে ভেসে এসে দামোদরের পারে গভীর জঙ্গলে আস্তানা গড়ে তুলেছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই জায়গা থেকেই নিজের কাজ চালিয়ে যেতেন ঐতিহাসিক দুই চরিত্র ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানি।

দুর্গাপুরে ভবানী মাতার মন্দির

বর্তমান দুর্গাপুরের অম্বুজা কলোনিতে রয়েছে ভবানী মাতার মন্দির। এই মন্দিরটি ভবানী পাঠকের মন্দির বলে জনশ্রুতি রয়েছে। একটা সময় এই মন্দিরে এসে আত্মগোপন করেছেন বহু বিপ্লবী। এমনকী, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর এখানে এসে রাত্রিযাপনের কথাও প্রচলিত রয়েছে। দুর্গাপুরের এই এলাকায় জঙ্গল ঘেরা পরিবেশের এই মন্দিরে অনেক ভক্ত আসেন ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর মন্দির দর্শন করতে। তারাপীঠের মায়ের রীতি মেনে শ্যামাকালী পুজোর আগের নিশিরাতে ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী আরাধিত এই মা কালীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়। এই পুজোর বিশেষ রীতি হল ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি উচ্চারণ।

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

bangla news

news in bengali

kali puja 2023

devi chaudhurani bhawani pathak

devi chaudhurani kali puja

bhawani pathak kali puja

devi chaudhurani history

kali pujo 2023

bhawani pathak history


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর