মা সব সময় জলেও রয়েছেন, স্থলেও রয়েছেন! কোথায় জানেন?
শিবপুরের হাজার হাত কালী। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হাওড়ার কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম শিবপুরের হাজার হাত কালী মন্দিরের পুজো (Kali Puja 2023)। শিবপুরের মন্দিরতলা এলাকায় এই কালী ঠাকুরের নাম অনুসারে এলাকার নাম হয়েছে হাজার হাত কালীতলা। কালীপুজোর দিন বিশেষ পুজো হয় এখানে। হাজার হাত কালীর এক অদ্ভুত রূপ। দেবীর বাঁ হাতে খড়্গ, ডান হাতে পঞ্চশূল, বাঁ পা সিংহের উপরে ও ডান-পা পদ্মফুলের উপরে। দুটি পা দু-দিকে থাকার অর্থ, মা সব সময় জলেও রয়েছেন, স্থলেও রয়েছেন। আর ডান হাতে পঞ্চশূল দিয়ে মা সকলকে রক্ষা করছেন। আর যদি কেউ ভুল করে বা ভুল পথে যায়, তাহলে মা তাঁকে খড়্গ দেখিয়ে সচেতন করার বার্তাও দিচ্ছেন। মা কালীর এই রূপ সচরাচর দেখা যায় না।
তন্ত্র মতে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী (Kali Puja 2023)
তবে দক্ষিণ ভারতে বিশেষ জনপ্রিয় হাজার হাত কালী। হাওড়ার শিবপুরে হাজার হাত কালীতলায় প্রায় ২৫ ফুট উঁচু মায়ের এই মূর্তি রয়েছে। শোনা যায়, এখনও পর্যন্ত কেউ মায়ের হাজারটি হাত গুনতে পারেননি। গোনা বারণও রয়েছে। প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী, স্থানীয় মুখোপাধ্যায় বাড়ির ছেলে তান্ত্রিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে মা চণ্ডী স্বপ্নাদেশ দিয়ে কালীর এই রূপ দেখান এবং মন্দির তৈরির আদেশ দেন। সেই স্বপ্নাদেশ মোতাবেক তিনি মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দেবীর এই রূপের পুজো (Kali Puja 2023) করতে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। তবে এই মন্দির নির্মাণের বিপুল ব্যয়ভার বহন করার সাধ্য ছিল না তান্ত্রিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় বা তাঁর পরিবারের। আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের এই ইচ্ছাপূরণের জন্য এগিয়ে আসেন স্থানীয় ধনী হালদার পরিবার। তাদের চেষ্টায় ১৮৭০ সালে স্থাপিত হয় হাজার হাত কালী মন্দির এবং দেবীর এই বিশেষ রূপ এখানে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। সেই থেকে তন্ত্র মতে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী।
কিছু প্রার্থনা করলে সেটি পূর্ণ হয় (Kali Puja 2023)
বলিপ্রথা এখানে নেই এবং প্রাচীন প্রথা মেনে আজও মুখোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা এখানে পুজো করে আসছেন। মায়ের পুজো ও মঙ্গলারতিতে যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সেজন্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মায়ের মন্দিরের নামে বেশ কিছু সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন। সেই সম্পত্তি থেকেই আয় যা আসে, তা থেকে মায়ের পুজো করা হয় ও মন্দিরের সংস্কার করা হয়। দৈনন্দিন পুজোর পাশাপাশি বুদ্ধপূর্ণিমা ও দীপাবলিতে এখানে বিশেষ পুজো হয়। দেওয়া হয় বিশেষ ভোগ। সেই উপলক্ষ্যে প্রচুর জনসমাগম হয়। কালীপুজোর দিনে পুণ্যার্থীদের ভিড় এতটাই হয় যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করতে হয়। বিশ্বাস, মায়ের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সেটি পূর্ণ হয়। কালীপুজোর দিন খিচুড়ি, পায়েস পোলাও, রাইস, মাছ, মিষ্টি সহ একাধিক নানা প্রকারের ভোগ দেওয়া হয় দেবীকে। ৩ সময় পুজো হয় ভোরবেলা, দুপুরবেলা ও রাত্রিবেলা। ফল-মিষ্টি দিয়ে পুজো (Kali Puja 2023) করা হয় মাকে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।