Thanthaniya Kalibari: ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে কবে থেকে কালী পুজো শুরু জানেন? নামকরণই বা হল কীভাবে?
ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির মা কালী। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বৃহৎ বঙ্গ হল শক্তি সাধনার প্রধান কেন্দ্র। দেবী পার্বতীর ৫১ পীঠের মধ্যে অধিকাংশ বঙ্গের ভূ-মণ্ডলে পড়েছে। শাক্তির আরাধনার সঙ্গে তন্ত্র সাধনা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। দেবী দুর্গার আরেক রুদ্র রূপ হল মা কালী। মায়ের শাক্ত গীতিকা বাংলার ঘরে ঘরে পড়া হয় এবং গান গাওয়া হয়। দেবী কালীকথার মধ্যে নানা লৌকিক এবং অলৌকিক আধ্যাত্মিক বিশ্বাস-আস্থার প্রসঙ্গ জড়িয়ে রয়েছে এক এক জায়গায়। সাধারণত কালীপুজো সারা বছর ধরেই বিভিন্ন অমাবস্যায় অনুষ্ঠিত হয়। তবে কার্তিক মাসের অমাবস্যায় কালীপুজো (Kali Puja 2024) সবচেয়ে প্রসিদ্ধ। পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় কালী মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম হল ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি (Thanthaniya Kalibari)। ভক্তদের বিশ্বাস, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। দেবীর আশীর্বাদে ভক্তদের মনস্কামনা পূরণ হয় বলেও বিশ্বাস। এই কালীমন্দিরের অবস্থান উত্তর কলকাতার কলেজ স্ট্রিট থেকে একটু দূরেই বিধান সরণিতে।
নিশ্চয়ই পাঠকের প্রশ্ন রয়েছে, কীভাবে এই মন্দিরের নাম হল ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি? জনশ্রুতি রয়েছে, জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যখন কেউ যেতেন, তখন দূর থেকেও শোনা যেত এই কালী মন্দিরের (Kali Puja 2023) ঘণ্টাধ্বনি। ঠনঠন আওয়াজ থেকেই এলাকার নাম হয় ঠনঠনিয়া। উত্তর কলকাতার এই কালীপুজোতে (Thanthaniya Kalibari) দেবী পূজিতা হন সিদ্ধেশ্বরী রূপে। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ইতিহাসও। কথিত আছে, কামারপুকুর থেকে যখন কিশোর গদাধর চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় আসেন, তখন মন্দিরের কাছেই ঝামাপুকুরে থাকতেন তিনি। ঠনঠনিয়া কালীমন্দিরে দেবী মূর্তির সামনে বসে গানও গাইতেন গদাধর। দক্ষিণেশ্বেরে গিয়ে রামকৃষ্ণ পরমহংস হওয়ার পরেও বেশ কয়েকবার এখানে এসেছেন তিনি। আবার গবেষকদের মতে, সাধক রামপ্রসাদও জড়িত ছিলেন এই সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের সঙ্গে।
কথিত আছে, কলকাতার সুতানুটি গ্রাম একেবারে জঙ্গল অধ্যুষিত ছিল। নদীর পাশেই অরণ্যবেষ্টিত এক শ্মশানে তান্ত্রিক উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী তৈরি করেন সিদ্ধেশ্বরী কালী মূর্তি, যা বর্তমানে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির (Kali Puja 2024) অধিষ্ঠাত্রী দেবী। সেটা ছিল আনুমানিক ১৭০৩ সাল অর্থাৎ আজ থেকে ৩২০ বছর আগে। তান্ত্রিক উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারীর কালীপুজোর প্রায় ১০০ বছর পরে জনৈক শঙ্কর ঘোষ নামের এক ব্যবসায়ী সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তির মন্দিরটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে শঙ্কর ঘোষের বংশধররাই এখন এই মন্দিরের সেবায়েত রয়েছেন।
১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে মূর্তি নির্মাণ হয়
জনশ্রুতি অনুসারে আরও জানা গিয়েছে, ১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে জনৈক তান্ত্রিক মাটি দিয়ে সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তি গড়েন। ১৮০৬ খ্রিষ্টাব্দে শঙ্কর ঘোষ নামে জনৈক ধনাঢ্য ব্যক্তি বর্তমান কালীমন্দির (Kali Puja 2024) ও পুষ্পেশ্বর শিবের আটচালা মন্দির নির্মাণ করেন। নিত্যপূজার ব্যয়ভার গ্রহণ করেন। এখানে মায়ের মূর্তি মাটির, প্রতি বছর মূর্তি সংস্কার করা হয়। ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে (Thanthaniya Kalibari) জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণীর পুজো, কার্তিক অমবস্যায় আদিকালীর পুজো ও মাঘ মাসে রটন্তী কালীর পুজো হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।