Sundarbans: এই জাগ্রত কালীমন্দিরে নিজেদের মনস্কামনা জানাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন বহু মানুষ
কালীপুজোর দিন জাঁকজমকের সঙ্গে গঙ্গাসাগরে আদি কালীমন্দিরে পূজিত হন মা কালী। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাঘের হাত থেকে বাঁচতেই আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই কালীপুজো (Kali Puja 2024)। এখনও রীতি মেনেই হয় এই পুজো। ভৌগোলিক পরিবর্তনের ফলে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গজিয়ে উঠেছিল একটি দ্বীপ, বর্তমানে যার নাম সাগরদ্বীপ। আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ বছর আগে এই দ্বীপ গড়ে উঠেছিল। তৎকালীন সময়ে এই দ্বীপ ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল। রুটিরুজির টানে সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজন এখানে এসে সুন্দরবন থেকে কাঠ সংগ্রহ করতেন। এছাড়াও এই দ্বীপের মধ্যে এসে মধু সংগ্রহ করতেন উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজন। সেই সময় এই দ্বীপ এত আধুনিক হয়নি। তৎকালীন সময়ে জঙ্গলের হিংস্র জীবজন্তুর হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে একটি বটবৃক্ষের তলায় পুজো-অর্চনা করে জঙ্গলে যেতেন এলাকাবাসী। জঙ্গলের এই নিয়ম দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলে আসছিল। তৎকালীন সময়ে হিংস্র জীবজন্তুর আক্রমণে মৃত্যু হত সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজনের। এই বটবৃক্ষের তলায় পুজো-অর্চনা দেওয়ার পর থেকে হিংস্র জীবজন্তুদের আক্রমণের ফলে প্রাণ হারানোর সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল বলে মানুষের বিশ্বাস।
এর পর বেশ কয়েকজন উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষ জঙ্গল পরিষ্কার করে এই সাগরদ্বীপেই বসবাস শুরু করেন। এমনই এক অলৌকিক মন্দির রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরের ধসপাড়া এলাকায়। এলাকায় এই মন্দির আদি কালীমন্দির নামে পরিচিত। তৎকালীন সময়ে সাগরদ্বীপের এক বাসিন্দা, অমূল্যকুমার পান্ডা স্বপ্নাদেশ পান কালীমাতার। এরপর তিনি ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে মন্দির তৈরি করে দেবীমূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন। এর পর থেকে ওই মন্দিরে কালীপুজো (Kali Puja 2024) হয়ে আসছে আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ বছর ধরে। গঙ্গাসাগর এলাকায় এই মন্দির আদি কালীমন্দির নামে পরিচিত। এই জাগ্রত কালীমন্দিরে নিজেদের মনস্কামনা জানাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন পুজো দিতে। প্রতি বছর কালীপুজোর দিন জাঁকজমকের সাথে গঙ্গাসাগরে আদি কালীমন্দিরে পূজিত হন মা কালী।
প্রতিদিনই এই মন্দিরে নিত্যপুজোর ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহে মঙ্গল ও শনিবার বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। এই মন্দিরের প্রধান সেবায়েত প্রকাশ পন্ডা বলেন, "সাগরদ্বীপ যখন থেকে গড়ে উঠেছিল, তার পর থেকেই এই মন্দিরে কালীমায়ের পুজো (Kali Puja 2024) শুরু হয়েছিল। আমাদের পূর্বপুরুষ এই মন্দিরে মায়ের সেবা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। বংশপরম্পরায় এখন আমি এই মন্দিরের প্রধান সেবায়েত। এই মন্দিরের মা খুবই জাগ্রত। মায়ের কাছে পুজো দিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ ছুটে আসেন। মা করুণাময়ী সবার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা মধুসূদন মণ্ডল বলেন, এই বটগাছের নীচেই মায়ের মূর্তি ছিল এবং মা একজনকে স্বপ্নাদেশ দেন যে এখানেই তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পুজো করার জন্য। তৎকালীন সময় এই এলাকা ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল। আমরা প্রত্যেকদিন বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেতাম (Sundarbans)। কিন্তু মায়ের আশীর্বাদে আমাদের কোনও প্রকার ক্ষতি হয়নি। এই মা খুবই জাগ্রত। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই মায়ের কাছে পুজো দিতে আসেন। কালীপুজোর সময় বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা করা হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।