Basanti Puja 2024: সমগ্র কাশী ধামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন মাতা অন্নপূর্ণা, আজ তাঁর পুজো
দেবী অন্নপূর্ণা (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চৈত্র মাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে পূজিতা হন দেবী অন্নপূর্ণা (Annapurna Puja 2024)। তবে এর পাশাপাশি গ্রাম বাংলাতে নবান্ন উৎসবের সময়ও অন্নপূর্ণা পুজোর রীতি দেখা যায়। সেটা অগ্রহায়ণ মাসে সম্পন্ন হয়। মনে করা হয় বাংলায় অন্নপূর্ণা দেবীর মাহাত্ম্য প্রচারিত হয়েছে কাশী থেকেই। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির দর্শন করতে গেলে পুজো দিতে হয় মা অন্নপূর্ণাকে। হিন্দুদের বিশ্বাস, বাবা বিশ্বনাথ কাশীধামের নির্মাণকর্তা এবং মা অন্নপূর্ণা সমগ্র কাশী ধামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। চলতি বছরে শ্রী শ্রী অন্নপূর্ণা পুজো আজ, মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বাসন্তী পুজোর চলার অষ্টমীতেই পূজিতা হন মা অন্নপূর্ণা। চৈত্র নবরাত্রির অষ্টমীতে অন্নপূর্ণা পুজোর (Annapurna Puja 2024) পরের দিন অনুষ্ঠিত হয় রামনবমী।
অন্নপূর্ণা পুজোর দিনে কাশী ধামে আয়োজিত হয় অন্নকূট উৎসব। আমিষ ভোজন, মাদক পান, ধূমপান প্রভৃতি থেকে দূরে থাকেন এই দিন ভক্তরা। কাউকে কোনওরকম কটু কথাও বলেন না ভক্তরা। যাতে তাদের ব্যবহারে কেউ অন্য কেউ কষ্ট পায়। এদিন ভক্তরা ব্রত পালন করেন এবং মিথ্যা কথা বলেন না। সাদা পোশাকে পুজোয় (Annapurna Puja 2024) দিতে দেখা যায় ভক্তদের। হিন্দুদের বিশ্বাস অন্নকূট উৎসবে কোনও ভিক্ষুককে পিতলের পাত্রে আতপ চাল দান করলে অত্যন্ত শুভ ফল পাওয়া যায়।
দেবী অন্নপূর্ণার (Annapurna Puja 2024) যে কোনও বিগ্রহ দেখলেই বোঝা যায়, তাঁর হাত থেকে অন্ন গ্রহণ করছেন দেবাদিদেব মহাদেব। বাংলাতে ভরতচন্দ্র রায়গুনাকর দেবী অন্নপূর্ণার কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানে মা অন্নপূর্ণার মাহাত্ম্যও বর্ণনা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্ন শব্দের অর্থ হল ধান আর পূর্ণা শব্দের অর্থ পূর্ণ। প্রচলিত অনেক কাহিনী রয়েছে মা অন্নপূর্ণাকে নিয়ে। তার মধ্যে অন্যতম হলো কাশীর পৌরাণিক আখ্যান।
পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, শিব পার্বতী বিবাহের পরে দাম্পত্য জীবন সুখেই কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু শিবের আর্থিক অনটনের কারণে দাম্পত্য সমস্যা শুরু হয়। সে সময়ে ভোলেনাথের সঙ্গে মা পার্বতীর (Annapurna Puja 2024) মতবিরোধ শুরু হয় মাতা পার্বতী কৈলাস ত্যাগ করেন। মাতা পার্বতীর এই সিদ্ধান্তের পরেই দেখা যায় মহামারি এবং নানা সংকট ভক্তরা তখন আকুল হয়ে পড়েন। তাঁরা দেবাদিদেব মহাদেবকে ডাকতে থাকেন। সেই সময়ই ভিক্ষার ঝুলিকে কাঁধে তুলে নেন মহাদেব। কিন্তু দেবীর মায়ায় কোথাও ভিক্ষা জোটে না। মহাদেব তখন জানতে পারেন কাশীতে এক নারী সকলকে অন্ন দান করছেন। তখন ভোলেনাথ সেখানে উপস্থিত হন। চিনতে পারেন তিনি মাতা অন্নপূর্ণাকে (Annapurna Puja 2024)। মহাদেব মায়ের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করেন এবং সেই ভিক্ষা গ্রহণ করেই মহামারি এবং খাদ্যাভাব থেকে ভক্তকুলকে রক্ষা করেন বলে মনে করা হয়। চৈত্র মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সেখানে মানে কাশী ধামে মায়ের আবির্ভাব হয়েছিল বলে মানা হয়। তাই তখন থেকেই সেখানে মায়ের পুজো প্রচলন। অন্য আরেকটি পৌরাণিক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। সেই পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে দেবী পার্বতীর মায়ায় কোথাও ভিক্ষা পাননি দেবাদিদেব মহাদেব। তবে তা বুঝতে পারেন শিব। কৈলাসে ফিরে পায়েস পিঠে খেয়ে তৃপ্ত হন দেবাদিদেব। তখন থেকেই নাকি অন্নপূর্ণা পুজোর প্রচলন।
মা অন্নপূর্ণাকে মা দুর্গার আরেক রূপ মানা হয়। বাংলার অন্নদামঙ্গল কাব্যে প্রথম মেলে এই দেবীর (Annapurna Puja 2024) উল্লেখ। শক্তির অপর রূপ মানা হয় মা অন্নপূর্ণাকে তিনি সকলের অন্ন যোগান। মা অন্নপূর্ণার প্রিয় ভোগ হল- মুগের ডাল, ভাত, শাক, ভাজা, মোচার ঘন্ট, আর ছানার ডালনা। ভক্তদের বিশ্বাস, এইভাবে সাজিয়ে মাকে ভোগ নিবেদন করলে তিনি খুশি হন এবং বছরভর সুখ ও শান্তি সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে ভক্তের জীবন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।