img

Follow us on

Monday, Nov 18, 2024

Maa Jagadhatri: সারদা মায়ের জন্মভিটেতেও পুজো হয় দেবী জগদ্ধাত্রীর! জানেন এর পিছনের গল্প?

১৮৭৭ সালে  জয়রামবাটিতে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো। পুজোতে দক্ষিণেশ্বর থেকে এসে অংশগ্রহণ করেন স্বয়ং সারদাদেবীও।

img

দেবী জগদ্ধাত্রী।

  2022-11-02 18:26:21

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান গদাধর চট্টোপাধ্যায় পরবর্তীকালে হয়েছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। তাঁর সহধর্মিণী সারদা দেবী বলতেন "আমি সকলের মা"। বাস্তবিকই তিনি ঠাকুরের শিষ্যদের মা হয়ে উঠেছিলেন। আজও ঠাকুরের সঙ্গেই তিনি ঘরে ঘরে পূজিতা হন। রামকৃষ্ণ-সারদা দেবী, মাতা কালীর আরাধনা করতেন। কিন্তু জানেন সারদা মায়ের নামের সাথে জগদ্ধাত্রী পুজোও সম্পর্কিত। সারদা মায়ের  জন্মভিটে জয়রামবাটির জগদ্ধাত্রী পুজো বিশেষ প্রসিদ্ধ। ১৮৫৩ সালের ২২ ডিসেম্বর  বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর মহকুমার অন্তর্গত প্রত্যন্ত গ্রাম জয়রামবাটির এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে সারদা দেবীর জন্ম হয়। সারদা দেবীর মাতার নাম ছিল শ্যামাসুন্দরী দেবী।

আরও পড়ুন: রাত পোহালেই জগদ্ধাত্রীর আরাধনায় মাতবে বাঙালি! জানেন কে এই পুজোর শুরু করেন?

কথিত আছে, সারদাদেবীর মা শ্যামাসুন্দরী দেবী খুব অল্প বয়সেই বিধবা হন‌। বিধবা শ্যামাসুন্দরী দেবীর পক্ষে সংসারের ভরণপোষণ কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। সাংসারিক চাপে শ্যামাসুন্দরী দেবী বাধ্য হয়ে গ্রামের এক ধনী ব্রাহ্মণের বাড়িতে ধান ভানার কাজ বেছে নেন, যদিও  মা সারদা ততদিনে রামকৃষ্ণ জায়া হয়ে গিয়েছেন। শোনা যায়, মা সারদা দক্ষিণেশ্বর থেকে বাপের বাড়ি এলে,  শ্যামাসুন্দরী দেবীকে ধান ভানার কাজে সাহায্য করতেন। জয়রামবাটিতে সেসময় কালীপুজোতে গ্রামের জনৈক ব্রাহ্মণ নব মুখার্জী, প্রত্যেক গ্রামবাসীর ঘর থেকে মা কালীর পুজোর জন্য নৈবেদ্যের চাল নিতেন। হঠাৎ সে বছর কোনও এক অজ্ঞাত কারণে নব মুখার্জী শ্যামাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে চাল নৈবেদ্য নিতে অস্বীকার করেন। এই ঘটনায় শ্যামাসুন্দরী দেবী অত্যন্ত মর্মাহত হন। অভাবের সংসার হলেও তিনি মা কালীর উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য অর্পণ করতে অপারগ নন। এই ভাবনায় শ্যামাদেবী একরাশ দুঃখ নিয়ে সারারাত কাঁদতে থাকেন। নিদ্রাহীন রাত্রিতে  হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন, তাঁর পাশে এক দেবী এসে তাঁকে বলছেন - 'কাঁদছ কেন মেয়ে? তোমার নৈবেদ্য মা কালীর পুজোর জন্য নেয়নি তো কী হয়েছে, আমি তোমার নৈবেদ্য গ্রহণ করবো'। শ্যামাদেবীর বিশ্বাসে আবির্ভূত এই দেবী ছিলেন স্বয়ং মাতা জগদ্ধাত্রী। সেই বছরই অর্থাৎ ১৮৭৭ সালে  জয়রামবাটিতে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো। পুজোতে দক্ষিণেশ্বর থেকে এসে অংশগ্রহণ করেন স্বয়ং সারদাদেবীও। শোনা যায় এই পুজোর কথা শুনে উচ্ছ্বসিত হয়ে  রামকৃষ্ণদেব বলেছিলেন- "মা আসছে, যা যা খুব মঙ্গল হবে তোদের।"

আরও পড়ুন: কার্তিক মাসে গ্রাম বাংলায় পালিত হয় 'যমপুকুর ব্রত'! জানেন এর নেপথ্য গল্প?

কথিত আছে, এই জগদ্ধাত্রী পুজোর পরই শ্যামাদেবীর সংসারে উন্নতি আসে। অভাব মিটে  যায়। সারদা দেবীও প্রতিবছর  জয়রামবাটিতে গিয়ে পুজোর খুঁটিনাটি সমস্ত ব্যাপার দেখতেন । শোনা যায়, প্রথম বছর প্রতিমা নিরঞ্জনের দিন বৃহস্পতিবার ছিল। তাই সারদা দেবী লক্ষ্মীবারে বিসর্জন করতে দেননি জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। পরদিন সংক্রান্তি ও তার পরদিন মাস পয়লা থাকায় ওই দুই দিনও বিসর্জন হয়নি। বিসর্জন হয় চতুর্থ দিনে।
তাঁর প্রয়াণের পরেও বন্ধ হয়নি পুজো। আজও মহাসমারোহে জয়রামবাটিতে আরাধিতা হন দেবী জগদ্ধাত্রী। এরপর ১৯২৩ সালে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী সারদানন্দজীর উদ্যোগে জয়রামবাটিতে প্রতিষ্ঠা করা হয় মিশন। এখন পুজোর দায়িত্বে রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তদের সমাগম হয়।

Tags:

MAA SARADA

jagadhatri

tories-about-goddess-jagadhatri


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর