মকর সংক্রান্তিকে হিন্দু ধর্মের পবিত্র তিথি মানা হয়
মকর সংক্রান্তিতে পূণ্য স্নান
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: আজ মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti)। হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন শাস্ত্রে এই দিনটির গুরুত্ব সম্পর্কে লেখা রয়েছে। যেমন জ্যোতিষশাস্ত্রে মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti) হল এক বিশেষ দিন যে দিন সূর্য ধনু রাশি থেকে মকর রাশিতে প্রবেশ করে। সৌর ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি বছর ১৪ জানুয়ারী মকর সংক্রান্তি উৎসব পালিত হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে এই বছর সূর্য ১৪ জানুয়ারী রাত ৮.২১ টায় মকর রাশিতে প্রবেশ করবে। এদিন বাঙলার ঘরে ঘরে পিঠে পুলি খাওয়ার রীতি রয়েছে। গ্রাম বাংলায় পৌষবুড়িও করে শিশুরা।
শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, মকর সংক্রান্তিকে (Makar Sankranti) কেন্দ্র করে সারা দেশ জুড়ে পালিত হয় নানা উৎসব। যেমন তামিলনাড়ুতে হয় পোঙ্গল, মূলত এই উৎসব হল দেবরাজ ইন্দ্রের পূজা। আবার পাঞ্জাব হরিয়ানাতে হয় লোহরি, আগুন জ্বালিয়ে তার চারপাশে এদিন মহিলারা গান গাইতে গাইতে ঘোরেন এবং আগুনে চিড়ে, মুড়ি ইত্যাদি আহুতি দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশে এই উৎসব খিচড়ি উৎসব নামে পরিচিত। এদিন ভক্তরা গঙ্গাস্নান করেন। মাঘ মেলার শুরু হয় সেখানে। গুজরাটে এদিন ঘুড়ি ওড়ানোর রীতি দেখা যায়, বড়রা ছোটদের উপহার দেয়। গুজরাটে এই উৎসব উত্তরায়ণ নামে প্রসিদ্ধ। আসামে, মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti) উৎসব মাঘ বিহু এবং ভোগালী বিহু নামে পরিচিত।
মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti) থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন শুরু হয় এবং এদিনই বসন্তের আগমন ঘটে। এমনটাই জানা যায় বিভিন্ন হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী। মকর সংক্রান্তির (Makar Sankranti) পরথেকেই দিনের দৈর্ঘ্য বড় হতে থাকে এবং রাত ছোট হতে থাকে।
মকর সংক্রান্তিতে (Makar Sankranti) সূর্য দক্ষিণায়ন থেকে উত্তরায়ণে যায়। হিন্দু ধর্ম শাস্ত্রে দক্ষিণায়ণ হল দেবতাদের রাত এবং উত্তরায়ণ হল দেবতাদের দিন। এই দিনে পূজা ও দান করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, এই দিনে দান করলে এর ফল বহুগুণ হয়।
পুরাণ মতে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকালে নিজের প্রাণত্যাগ করার জন্য মকর সংক্রান্তির (Makar Sankranti) তিথিকেই নির্বাচন করেছিলেন পিতামহ ভীষ্ম।
পুরাণ মতে, এই তিথিতেই ভগীরথের পিছু চলতে চলতে কপিল মুনির আশ্রম হয়ে সাগরে মিশে যান গঙ্গা। তাই এই উপলক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা হয়। কপিল মুনির আশ্রমে লক্ষ লক্ষ ভক্তদের ভিড় দেখা যায় এদিন। মকর সংক্রান্তির (Makar Sankranti) পূণ্য স্নান করেন ভক্তরা।
পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী, শনিদেব কালো তিল দিয়ে সূর্য পুজো করেন। শনির পুজোয় প্রসন্ন সূর্য আশীর্বাদ করেন তাঁকে। আশীর্বাদে তিনি বলেন, শনির অপর ঘর মকরে যখন তিনি প্রবেশ করবেন সেদিন মর্ত্য লোক ধন-ধান্যে ভরে যাবে। সূর্যের মকরে প্রবেশ করার তিথিই মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti) নামে পরিচিত।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
Tags: