img

Follow us on

Friday, Dec 27, 2024

Naga sadhu: মুঘল-ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সনাতনধর্ম রক্ষার জন্য লড়াই করেছিলেন নাগা সন্ন্যাসীরা!

Sanatan Dharma: জুনা আখড়া নির্মাণ করেছিলেন নাগা সাধুরা, কেন জানেন?

img

কুম্ভ মেলায় নাগা সাধুরা। সংগৃহীত চিত্র।

  2024-12-25 16:01:08

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতে বহিরাগত বর্বর আক্রমণকারী পাঠান, মুঘল এবং ব্রিটিশদের বিরদ্ধে প্রত্যক্ষ লড়াই করেছিলেন নাগা সাধুরা (Naga sadhu)। জুনাগড়ের অত্যাচারী নিজাম শাসক সাধুদের বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছিলেন। বহু সাধু সন্ন্যাসীদের হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাঁরাই তৈরি করেছিলেন জুনা আখড়া। যুগে যুগে যখনই সনাতন ধর্ম (Sanatan Dharma) গভীর সঙ্কটে পড়েছে নাগারা রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। মুসলমান আক্রমণ এবং লুটের হাত থেকে অনেক মন্দির ও মঠ রক্ষা করেছিলেন তাঁরা। আফগান পাঠান শাসক আহমেদ শাহ আবদালি মথুরা-বৃন্দাবন লুণ্ঠন করতে এলে নাগা সাধুরা বিরাট প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রও ধারণ করেন নাগা সন্ন্যাসীরা। 

সনাতন ধর্মের রক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে (Naga sadhu)

১৪৪ বছর পর এবার উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হবে মহাকুম্ভ। ইতিমধ্যেই বিশ্বের এই বৃহৎ ধর্মীয় (Sanatan Dharma) সমাবেশে অনেক আখড়ার মুনি, ঋষি, সাধু-সন্ন্যাসীরা আসতে শুরু করেছেন। ভারতীয় মার্শাল আর্টিস্ট এবং ধর্মীয় সন্ন্যাসীদের জন্য সম্প্রদায়িক ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিক পরম্পরা মেনে মঠ কেন্দ্রীক একটি আখড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে ভক্তদের থাকা-খাওয়া এবং প্রশিক্ষণের সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে। এখানে কুম্ভমেলার অনুষ্ঠানের সঙ্গে মার্শাল আর্ট অনুশীলনের একটি বিরাট জায়গা ঠিক করা হয়েছে। অনেকেই প্রশিক্ষণ নেবেন আবার দিয়েও থাকবেন প্রশিক্ষণ। মূল লক্ষ্য হল হিন্দু সমাজের আত্মরক্ষা। সাধারণত নাগারা (Naga sadhu) তাঁদের গলায়, শরীরের চারপাশে রুদ্রাক্ষ এবং অন্যান্য অলঙ্কার পরিধান করেন। তাঁদের হাতে থাকে তলোয়ার, শঙ্খ এবং ত্রিশূলও। 

সব রকম অপশক্তির সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত

এই আখড়ার মধ্যে ভৈরব আখড়া অন্যতম। এটিকে পঞ্চ দশনম জুনা আখড়াও বলা হয় এবং এটি ১৩টি আখড়ার মধ্যে সবচেয়ে বড়। এটি নাগা সন্ন্যাসীদের (Naga sadhu) একটি প্রধান আখড়া। এখানকার সাধুরা যোদ্ধা সন্ন্যাসী। ভগবান শিবের উপাসক তাঁরা। সন্ন্যাসীদের দেহে ছাই-মাখার জন্য বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। হিন্দু ধর্মের আধ্যাত্মিকতা এবং পরাক্রমের গৌরবময় ইতিহাস ধারণ করেন তাঁরা। নাগা সাধুরা সর্বদা তলোয়ার, ত্রিশূল, বর্শা বহন করে থাকেন। তাঁরা মুঘল থেকে ব্রিটিশ পর্যন্ত সমস্ত বহিঃশত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। সনাতন হিন্দু (Sanatan Dharma) ধর্ম রক্ষার জন্য সব রকম অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকেন এই সাধুরা। এই জুনা আখড়ায় একটি অস্ত্রাগারও রয়েছে, যেখানে ৪০০ বছরের পুরনো অস্ত্রও সংরক্ষিত রয়েছে। নাগা সাধুরা মহাকুম্ভ উদযাপনের সময় এই অস্ত্রগুলি নিয়ে আসেন এবং প্রদর্শনী করেন। 

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"

১১৪৫ সালে জুনা আখড়া প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়

জুনা আখড়া হল শৈব সম্প্রদায়ের সাতটি আখড়ার একটি। ১১৪৫ সালে উত্তরাখণ্ডের কর্ণ প্রয়াগে প্রথম এই মঠ নির্মাণ হয়েছিল। আবার কেউ কেউ মনে করেন এই মঠ ১২৫৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৮৬০ সালে সরকারি নথিভুক্ত হয় আখড়া। ভগবান শিব বা তাঁর রুদ্র অবতার, ভগবান দত্তাত্রেয়, জুনা আখড়ার মূর্তি। এর সদর দফতর এবং প্রধান কেন্দ্র বারাণসীতে অবস্থিত। আরও একটি মন্দিরের আশ্রম হরিদ্বারের মহামায়া মন্দিরের কাছে নির্মিত হয়েছিল। এখন এই নাগাদের (Naga sadhu) আখড়াগুলোতে প্রায় ৫ লাখ নাগা সাধু রয়েছেন। নাগা সাধুরা হিন্দু ধর্মের উত্থানকে সাহায্য করার জন্য ধর্মগ্রন্থগুলিতে যেমন পারদর্শী, ঠিক তেমনি যুদ্ধ-অস্ত্রশস্ত্রেও প্রশিক্ষিত তাঁরা। তখন থেকেই আখড়া চলছে তাঁদের। বলা হয়ে থাকে আদি শঙ্করাচার্যের নির্দেশনায় গঠিত হয়েছিল এবং পরে মুসলিম আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধেও অনেক যুদ্ধ করেছিল এই আখড়ার সন্ন্যাসীরা।

জুনা আখড়ার ইতিহাস

জানা গিয়েছে, নাগা সাধুরা (Naga sadhu) গুজরাটের জুনাগড়ের নিজামের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন। নিজাম ও তাঁর বাহিনী নাগাদের দ্বারা পরাজিত হয়েছিল। তিনি সাধুদের সামরিক দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এই শাসককে সন্ন্যাসীদের সামনে মাথা নত হতে হয়েছিল এবং একটি চুক্তিতে আমন্ত্রণ জানাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। জুনা আখড়ার মহারাজ মহন্ত হরি গিরি বলেন, “আখড়ার সন্ন্যাসীরা (Sanatan Dharma) একটি চুক্তির জন্য নিজামের কাছে গিয়েছিলেন। জুনাগড় সন্ন্যাসীদের হাতে তুলে দেওয়ার অজুহাতে একটি নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে সেই খাবারে বিষ মিশিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছিল শয়তান শাসক। এর ফলে শত শত সন্ন্যাসী প্রাণ হারিয়েছিলেন। যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাঁরাই জুনা আখড়া তৈরি করেছিলেন।”

জাহাঙ্গীরের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন নাগারা

একবার মুঘল শাসক জাহাঙ্গীর প্রয়াগরাজ কুম্ভমেলায় যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে গুজব উঠেছিল। তখন শৈব ও বৈষ্ণব তপস্বীরা একসঙ্গে একটি দেওয়াল নির্মাণ করেন এবং তা থেকে গোপন যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন সন্ন্যাসীরা (Naga sadhu)। একজন সন্ন্যাসী জাহাঙ্গীরকে মারতে ছুরিও ব্যবহার করেছিলেন। মুঘলদের প্রতি নাগাদের ক্রোধ ছিল অদম্য। পঞ্চ দশনম জুনা আখড়ার অষ্ট কৌশল মহন্ত যোগানন্দ গিরি বলেন, “যে নাগা সন্ন্যাসীরা (Sanatan Dharma) অস্ত্র বহন করেন, তাঁরা মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। একই ভাবে ব্রিটিশ শাসন কালেও লড়াই করেছিলেন তাঁরা। অস্ত্রগুলিকে আমরা বিরাট সম্মানের সঙ্গে রাখি।”

প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। আর মাত্র হাতে কয়েকটা দিন বাকি। মকর সংক্রান্তি থেকে শুরু হবে পুণ্যস্নান। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশ সরকার কড়া নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় আয়োজনে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং এলাকা পরিদর্শন করে সব রকম প্রস্তুতি নিরীক্ষণ করেছেন। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি ভক্ত সমাগম হবে এই রাজ্যে।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

bangla news

Bengali news

Sanatan Dharma

news in bengali

Mahakumbh Mela 2025

Naga sadhu


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর