Nilkontho Pakhi: দশমীর দিন নীলকণ্ঠ পাখির দেখা পাওয়াকে শুভ মনে করা হয়, কেন জানেন?
দুর্গাপুজোয় বিজয়া দশমীতে ওড়ানো হত নীলকন্ঠ পাখি (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপুজো (Durga Puja 2024) আর নীলকণ্ঠ পাখি ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত। এক সময় দুর্গাপুজোর পর এই পাখিকে উড়িয়ে দেওয়া বনেদি ও জমিদার পরিবারগুলির ঐতিহ্য ছিল। আর তা দেখতে ভিড় উপচে পড়়ত। কালের নিয়মে বিশেষ করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ফলে এটা এখন আর সম্ভব হয় না। তবুও এখনও বহু বনেদি বাড়িতে কাঠের বা মাটির নীলকণ্ঠ পাখি তৈরি করে সেটি প্রতিমা নিরঞ্জনের আগে জলে দেওয়ার প্রথা রয়েছে।
বিজয়া দশমীর দিন (Durga Puja 2024) নীলকণ্ঠ পাখির দেখা পাওয়াকে শুভ এবং সৌভাগ্যদায়ী বলে মনে করা হয়। কথিত আছে, এই পাখিটি দেখা গেলে সম্পদ বৃদ্ধি পায়, জীবনের সমস্ত অশুভ প্রভাব বিনষ্ট হয়। ফলস্বরূপ, বাড়িতে নিত্য শুভ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতে থাকে। নীলকণ্ঠ পাখি দেখার বিষয়ে বিভিন্ন ধারণা রয়েছে। নীলকণ্ঠ পাখি উড়ে যাও, সেই কৈলাসে যাও, খবর দাও, উমা আসছে। তখন নীলকণ্ঠ পাখি আগমনের বার্তা নিয়ে মহাদেবের কাছে এসেছিল। আরেকটি জনপ্রিয় বিশ্বাস হল, মনে করা হয়, রাবণবধের ঠিক আগে এই পাখিটির (Durga Puja 2024) দেখা পান রামচন্দ্র। আবার অন্য একটি পৌরাণিক মতে, রাবণবধের আগেও, সেতুবন্ধনের সময় হাজির হয়েছিল নীলকণ্ঠ পাখি। পথ দেখিয়ে রাম-সেনাকে লঙ্কায় নিয়ে গিয়েছিল এই পাখি। এরকম পৌরাণিক কাহিনি থেকেই এই পাখির মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত জায়গায়। তখন থেকেই মনে করা হয়, এই পাখির দর্শন অত্যন্ত শুভ।
পৌরানিক মতে, লঙ্কা বিজয়ে রাম ব্রাহ্মণ হত্যার পাপ করেছিলেন। কারণ দশানন রাবণ ছিলেন ব্রাহ্মণ। তখন লক্ষ্মণ সহ রামচন্দ্র শিবের পুজো করেছিলেন এবং ব্রাহ্মণকে বধ করার পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। সেই সময় শিব নীলকণ্ঠ পাখির (Nilkontho Pakhi) রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন বলে অনেকের বিশ্বাস রয়েছে। নীলকণ্ঠ অর্থ, যার গলা নীল। দেবাদিদেব মহাদেব সমুদ্র মন্থন করার সময় বিষ পান করেছিলেন। কণ্ঠে সেই বিষকে ধারণ করার ফলে মহাদেবের কণ্ঠ নীল হয়ে যায়। তাই শিবের আর একটি নাম হল নীলকণ্ঠ। নীলকণ্ঠ পাখিকে (Durga Puja 2024) মর্ত্যলোকে শিবের প্রতিনিধি মানা হয় এবং দেবাদিদেব মহাদেবের রূপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনশ্রুতি অনুসারে, শিব পৃথিবীতে নীলকণ্ঠ পাখি রূপেই ঘোরাফেরা করেন।
নীলকণ্ঠ পাখির বিজ্ঞানের ভাষায় নাম ইন্ডিয়ান রোলার। এই পাখিটিকে কৃষকদের মিত্রও বলা হয়। কারণ, নীলকণ্ঠ পাখি জমিতে ফসলের সাথে জড়িত পোকামাকড় খেয়ে কৃষকদের উপকার করে থাকে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, এক সময় দুর্গাপুজোর পর কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়িতে (Durga Puja 2024) নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হত বিজয়া দশমীর দিনে। তা দেখতে ভিড়ও হত। এখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ফলে এটা সম্ভব হয় না। শুধু শোভাবাজার নয় রাজ্যের অধিকাংশ জায়গায় আর এই পাখি ওড়ানো হয় না। তবে, প্রতীকী মেনে প্রথাটিকে বনেদি বাড়িতে ধরে রাখা হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।