img

Follow us on

Thursday, Sep 19, 2024

Ramakrishna 137: “তিনি লাউ কুমড়ো ফল দেন না—তিনি অমৃত ফল দেন—জ্ঞান, প্রেম, বিবেক, বৈরাগ্য”

Kathamrita: “কলিতে অন্নগত প্রাণ—কলিতে নারদীয় ভক্তি”……‘কথামৃত’ থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী

img

শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।

  2024-09-18 16:00:56

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে শ্রীযুক্ত রাখাল, প্রাণকৃষ্ণ, কেদার প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে

প্রথম পরিচ্ছেদ

১৮৮৩, ১লা জানুয়ারি

দক্ষিণেশ্বরে প্রাণকৃষ্ণ, মাস্টার প্রভৃতি সঙ্গে

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) কালীবাড়ির সেই পূর্বপরিচিত ঘরে ভক্তসঙ্গে বসিয়া আছেন। নিশিদিন হরিপ্রেমে—মার প্রেমে—মাতোয়ারা!

মেঝেতে মাদুর পাতা; তিনি সেই মাদুরে আসিয়া বসিয়াছেন (Kathamrita)। সম্মুখে প্রাণকৃষ্ণ ও মাস্টার। শ্রীযুক্ত রাখালও ঘরে আছেন। হাজরা মহাশয় ঘরের বাহিরে দক্ষিণ-পূর্ব বারান্দায় বসিয়া আছেন। শীতকাল—পৌষ মাস; ঠাকুরের গায়ে মোলস্কিনের র‌্যাপার। সোমবার, বেলা ৮টা। ১৮ই পৌষ, কৃষ্ণা অষ্টমী। ১লা জানুয়ারি, ১৮৮৩।

এখন অন্তরঙ্গ ভক্তগণ অনেকেই আসিয়া ঠাকুরের সহিত মিলিত হইয়াছেন। ন্যূনাধিক এক বৎসর কাল নরেন্দ্র, রাখাল, ভবনাথ, বলরাম, মাস্টার, বাবুরাম, লাটু প্রভৃতি সর্বদা আসা-যাওয়া করিতেছেন। তাঁহাদের বৎসরাধিক পূর্ব হইতে রাম, মনোমোহন, সুরেন্দ্র, কেদার আসিতেছেন।

প্রায় পাঁচ মাস হইল, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) বিদ্যাসাগরের বাদুড়বাগানের বাটীতে শুভাগমন করিয়াছিলেন। দুই মাস হইল শ্রীযুক্ত কেশব সেনের সহিত বিজয়াদি ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে নৌযানে (স্টীমার-এ) আনন্দ করিতে করিতে কলিকাতায় গিয়াছিলেন।

শ্রীযুক্ত প্রাণকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় কলিকাতার শ্যামপুকুর পল্লীতে বাস করেন। তাঁহার আদি নিবাস জনাই গ্রামে। Exchange-এর বড়বাবু। নিলামের কাজ তদারক করেন। প্রথম পরিবারের সন্তান না হওয়াতে, তাঁহার মত লইয়া দ্বিতীয়বার দার পরিগ্রহ করিয়াছেন। তাঁহারই একমাত্র পুত্রসন্তান হইয়াছে। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে প্রাণকৃষ্ণ বড় ভক্তি করেন। একটু স্থূলকায়, তাই ঠাকুর মাঝে মাঝে মোটা বামুন বলিতেন (Kathamrita)। অতি সজ্জন ব্যক্তি। প্রায় নয় মাস হইল ঠাকুর তাঁহার বাটীতে ভক্তসঙ্গে নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিয়াছিলেন। প্রাণকৃষ্ণ নানা ব্যঞ্জন ও মিষ্টান্নাদি করিয়া অন্নভোগ দিয়াছিলেন।

ঠাকুর মেঝেতে বসিয়া আছেন। কাছে এক চ্যাঙড়া জিলিপি—কোন ভক্ত আনিয়াছেন। তিনি একটু জিলিপি ভাঙিয়া খাইলেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (প্রাণকৃষ্ণের প্রতি সহাস্যে)—দেখছ আমি মায়ের নাম করি বলে—এই সব জিনিস খেতে পাচ্ছি! (হাস্য) কিন্তু তিনি লাউ কুমড়ো ফল দেন না—তিনি অমৃত ফল দেন—জ্ঞান, প্রেম, বিবেক, বৈরাগ্য।

ঘরে একটি ছয়-সাত বছরের ছেলে প্রবেশ করিল। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) বালকাবস্থা। একজন ছেলে যেমন আর একজন ছেলের কাছ থেকে খাবার লুকিয়ে রাখে—পাছে সে খাইয়া ফেলে, ঠাকুরেরও ঠিক সেই অপূর্ব বালকবৎ অবস্থা হইতেছে। তিনি জিলিপির চ্যাংড়াটি হাত ঢাকা দিয়া লুকাইতেছেন। ক্রমে তিনি চ্যাংড়াটি একপার্শ্বে সরাইয়া রাখিয়া দিলেন।

প্রাণকৃষ্ণ গৃহস্থ বটেন, কিন্তু তিনি বেদান্তচর্চা করেন—বলেন(Kathamrita), ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা; তিনিই আমি—সোঽহম্‌। ঠাকুর তাঁহাকে বলেন, কলিতে অন্নগত প্রাণ—কলিতে নারদীয় ভক্তি।

সে যে ভাবের বিষয়, ভাব ব্যতীত অভাবে কে ধরতে পারে!—

বালকের ন্যায় হাত ঢাকিয়া মিষ্টান্ন লুকাইতে লুকাইতে ঠাকুর সমাধিস্থ হইলেন।

আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

bangla news

Bengali news

ramakrishna

madhyom news

news in bengali

Ramakrishna Paramahansa

Mahendranath Gupta

Sri Sri Ramakrishna

Kathamrita