img

Follow us on

Wednesday, Nov 13, 2024

Ramakrishna 186: “ঠাকুর ভাবে মগ্ন...খুলির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া বলিতেছেন, আ মরি! আ মরি! আমার রোমাঞ্চ হচ্ছে”

Kathamrita: “নিধুবনে শ্যামবিনোদিনী ভোর”…‘কথামৃত’ থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী

img

শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।

  2024-11-06 10:39:58

ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

১৮৮৩, ১৫ই এপ্রিল

ভক্তসঙ্গে সংকীর্তনানন্দে—সমাধিমন্দিরে

এইবার সংকীর্তন আরম্ভ হইবে। খোল বাজিতেছে। গোষ্ঠ খোল বাজাইতেছে। এখনও গান আরম্ভ হয় নাই। খোলের মধুর বাজনা, গৌরাঙ্গমণ্ডল ও তাঁহাদের নামসংকীর্তন কথা উদ্দীপন করে। ঠাকুর ভাবে মগ্ন হইতেছেন। মাঝেমাঝে খুলির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া বলিতেছেন, “আ মরি! আ মরি! আমার রোমাঞ্চ হচ্ছে।”

গায়কেরা জিজ্ঞাসা কল্লেন, কিরূপ পদ গাহিবেন? ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) বিনীতভাবে বলিলেন “একটু গৌরাঙ্গের কথা গাও।”

কীর্তন আরম্ভ (Kathamrita) হইল। প্রথমে গৌরচন্দ্রিকা। তৎপরে অন্য গীত:

লাখবান কাঞ্চন জিনি। রসে ঢর ঢর গোরা মুঁজাঙ নিছনি ॥
কি কাজ শরদ কোটি শশী। জগৎ করিলে আলো গোরা মুখের হাসি ॥

কীর্তনে গৌরাঙ্গের রূপবর্ণনা হইতেছে। কীর্তনিয়া আখর দিতেছে।

(সখি! দেখিলাম পূর্ণশশী।) (হ্রাস নাই মৃগাঙ্ক নাই)
                (হৃদয় আলো করে।)

কীর্তনিয়া আবার বলছে, কোটি শশীর অমৃতে মুখ মাজা।

এইকথা শুনিতে শুনিতে ঠাকুর সমাধিস্থ হইলেন।

গান চলিতে লাগিল। কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) সমাধি ভঙ্গ হিল। তিনি ভাবে বিভোর হইয়া হঠাৎ দণ্ডায়মান হইলেন ও প্রেমোন্মত্ত গোপিকার ন্যায় শ্রীকৃষ্ণের রূপের বর্ণনা করিতে করিতে কীর্তনিয়ার সঙ্গে সঙ্গে আখর দিতেছেন:

(সখি! রূপের দোষ, না মনের দোষ?)
(আন্‌ হেরিতে শ্যামময় হেরি ত্রিভুবন!)

ঠাকুর নৃত্য করিতে করিতে আখর দিতেছেন। ভক্তেরা অবাক্‌ হইয়া দেখিতেছেন। কীর্তনীয়া আবার বলছেন। গোপীকার উক্তি — বাঁশি বাজিস না! তোর কি নিদ্রা নাই কো?

আখর দিয়া বলছেন:

(আর নিদ্রা হবেই বা কেমন করে!) (শয্যা তো করপল্লব!)
(আহার তো শ্রীমুখের অমৃত।) (তাতে অঙ্গুলির সেবা!)

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আসন পুনর্বার গ্রহণ করিয়াছেন। কীর্তন চলিতে লাগিল। শ্রীমতী বলছেন, চক্ষু গেল, শ্রবণ গেল, ঘ্রাণ গেল, ইন্দ্রিয় সকলে চলে গেল,—(আমি একেলা কেন বা রলাম গো)।

শেষে শ্রীরাধাকৃষ্ণের মিলন গান হইল:

ধনি মালা গাঁথে, শ্যামগলে দোলাইতে,
এমন সময়ে আইল সম্মুখে শ্যাম গুণমনি।

[গান—যুগলমিলন ]

নিধুবনে শ্যামবিনোদিনী ভোর।
দুঁহার রূপের নাহিক উপমা প্রেমের নাহির ওর ॥
হিরণ কিরণ আধ বরণ আধ নীল মণি-জ্যোতিঃ।
আধ গলে বন-মালা বিরাজিত আধ গলে গজমতি ॥
আধ শ্রবণে মকর-কুণ্ডল আধ রতন ছবি।
আধ কপালে চাঁদের উদয় আধ কপালে রবি ॥
আধ শিরে শোভে ময়ূর শিখণ্ড আধ শিরে দোলে বেণী।
করকমল করে ঝলমল, ফণী উগারবে মণি ॥

কীর্তন থামিল। ঠাকুর, ‘ভগবত-ভক্ত-ভগবান’ এই মন্ত্র উচ্চারণ (Kathamrita) করিয়া বারবার ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিতেছেন। চতুর্দিকে ভক্তদের উদ্দেশ করিয়া প্রণাম করিতেছেন ও সংকীর্তনভূমির ধূলি গ্রহণ করিয়া মস্তকে দিতেছেন।

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"

আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

bangla news

Bengali news

ramakrishna

madhyom news

news in bengali

Ramakrishna Paramahansa

Mahendranath Gupta

Sri Sri Ramakrishna

Kathamrita


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর