Kathamrita: “সেজোবাবুকে ধরলুম দীন মুখুজ্জের বাড়ি যাব”…‘কথামৃত’ থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী
শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ৫ই জুন
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম প্রেমোন্মাদ কথা
পূর্বকথা—দেবেন্দ্র ঠাকুর, দীন মুখুজ্জে ও কোয়ার সিং
আজও অমাবস্যা, মঙ্গলবার, ইং ৫ই জুন, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ। শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) কালীবাড়িতে আছেন। রবিবারেই ভক্ত-সমাগম বেশি হয়, আজ মঙ্গলবার বলিয়া বেশি লোক নাই। রাখাল ঠাকুরের কাছে আছেন। হাজরাও আছেন, ঠাকুরের ঘরের সামনে বারান্দায় আসন করিয়াছেন (Kathamrita) । মাস্টার গত রবিবারে আসিয়াছেন ও কয়দিন আছেন।
সোমবার রাত্রে মা-কালীর নাটমন্দিরে কৃষ্ণযাত্রা হইয়াছিল। ঠাকুর খানিকক্ষণ শুনিয়াছিলেন। এই যাত্রা রবিবার রাত্রে হইবার কথা ছিল, কিন্তু হয় নাই বলিয়া সোমবারে হইয়াছে।
মধ্যাহ্নে খাওয়া-দাওয়ার পর ঠাকুর নিজের প্রেমোন্মাদ অবস্থা আবার বর্ণনা করিতেছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—কি অবস্থাই গিয়েছে। এখানে খেতুম না। বরাহনগরে, কি দক্ষিণেশ্বরে, কি এঁড়েদয়ে, কোন বামুনের বাড়ি গিয়ে পড়তুম। আবার পড়তুম অবেলায়। গিয়ে বসতুম, মুখে কোন কথা নাই। বাড়ির লোক কোন কথা জিজ্ঞাসা করলে কেবল বলতুম, আমি এখানে খাব। আর কোন কথা নাই। আলমবাজারে রাম চাটুজ্যের বাড়ি যেতুম। কখনও দক্ষিণেশ্বরে সাবর্ণ চৌধুরীদের বাড়িতে। তাদের বাড়ি খেতুম বটে, কিন্তু ভাল লাগত না—কেমন আঁষ্টে গন্ধ!
“একদিন ধরে বসলুম, ‘দেবেন্দ্র ঠাকুরের বাড়ি যাব।’ সেজোবাবুকে বললুম (Kathamrita), দেবেন্দ্র ঈশ্বরের (Ramakrishna) নাম করে, তাকে দেখব, আমায় লয়ে যাবে? সেজোবাবু—তার আবার ভারী অভিমান, সে সেধে লোকের বাড়ি যাবে? এগু-পেছু করতে লাগল। তারপর বললে, ‘হাঁ, দেবেন্দ্র আর আমি একসঙ্গে পড়েছিলুম, তা চল বাবা, নিয়ে যাব।’
“একদিন শুনলুম বাগবাজারের পোলের কাছে দীন মুখুজ্জে বলে একটি ভাল লোক আছে — ভক্ত। সেজোবাবুকে ধরলুম দীন মুখুজ্জের বাড়ি যাব। সেজোবাবু কি করে, গাড়ি করে নিয়ে গেল। বাড়িটি ছোট, আবার মস্ত গাড়ি করে এক বড় মানুষ এসেছে। তারাও অপ্রস্তুত, আমরাও অপ্রস্তুত। তার আবার ছেলের পৈতে। কোথায় বসায়? আমরা পাশের ঘরে যাচ্ছিলুম, তা বলে উঠল ও ঘরে মেয়েরা, যাবেন না। মহা অপ্র্রস্তুত। সেজোবাবু ফেরবার সময় বললে, ‘বাবা! তোমার কথা আর শুনব না।’ আমি হাসতে লাগলুম।
“কি অবস্থাই গেছে। কুমার সিং সাধু-ভোজন করাবে, আমায় নিমন্ত্রণ কল্লে। গিয়ে দেখলুম, অনেক সাধু এসেছে। আমি বসলে পরে সাধুরা কেউ কেউ পরিচয় জিজ্ঞাসা (Kathamrita) কল্লে; যাই জিজ্ঞাসা করা, আমি আলাদা বসতে গেলুম। ভাবলুম, অত খবরে কাজ কি। তারপর যেই সকলকে পাতা পেতে খেতে বসালে, কেউ কিছু না বলতে বলতে আমি আগে খেতে লাগলুম। সাধুরা কেউ কেউ বলতে লাগল শুনতে পেলুম, ‘আরে এ কেয়া রে’।”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।