Kathamrita: “ভক্তিই সার; ঠিক ভক্তের কোন ভয় ভাবনা নাই”…‘কথামৃত’ থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী
শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে
চতুর্দশ পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ১৭ই জুন
শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে
তান্ত্রিকভক্ত ও সংসার—নির্লিপ্তেরও ভয়
ঠাকুর (Ramakrishna) আবার গান গাহিতেছেন:
ত্রিসন্ধ্যা যে বলে কালী, পূজা সন্ধ্যা সে কি চায় ৷
সন্ধ্যা তার সন্ধ্যানে ফিরে, কভু সন্ধি নাহি পায় ॥
গয়া গঙ্গা প্রভাসাদি কাশী কাঞ্চী কেবা চায় ৷
কালী কালী কালী বলে আমার অজপা যদি ফুরায় ॥
“তাঁতে মগ্ন হলে আর অসদ্বুদ্ধি, পাপবুদ্ধি থাকে না।”
তান্ত্রিকভক্ত—আপনি যা বলেছেন “বিদ্যার আমি” থাকে।
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—বিদ্যার আমি, ভক্তের আমি। দাস আমি, ভাল আমি থাকে। বজ্জাত আমি চলে যায়। (হাস্য)
তান্ত্রিকভক্ত—আজ্ঞা, আমাদের অনেক সংশয় চলে গেল।
শ্রীরামকৃষ্ণ—আত্মার সাক্ষাৎকার হলে সব সন্দেহ ভঞ্জন হয়।
তান্ত্রিকভক্ত ও ভক্তির তমঃ—হাবাতের সংশয়—অষ্টসিদ্ধি
“ভক্তির তমঃ আন। বল, কি! রাম বলেছি (Ramakrishna), কালী বলেছি, আমার আবার বন্ধন; আমার আবার কর্মফল।”
ঠাকুর (Ramakrishna) আবার গান গাহিতেছেন:
আমি দুর্গা দুর্গা বলে মা যদি মরি
আখেরে এ-দীনে না তারো কেমনে, জানা যাবে গো শংকরী।
নাশি গো ব্রাহ্মণ, হত্যা করি ভ্রূণ, সুরাপান আদি বিনাশী নারী;
এ-সব পাতক না ভাবি তিলেক (ও মা) ব্রহ্মপদ নিতে পারি।
শ্রীরামকৃষ্ণ আবার বলিতেছেন—বিশ্বাস! বিশ্বাস! বিশ্বাস! গুরু বলে দিয়েছেন, রামই সব হয়ে রয়েছেন; ‘ওহি রাম ঘট্ ঘট্মে লেটা!’ কুকুর রুটি খেয়ে যাচ্ছে। ভক্ত বলছে, ‘রাম! দাঁড়াও, দাঁড়াও রুটিতে ঘি মেখে দিই’ এমনি গুরুবাক্যে বিশ্বাস।
“হাবাতেগুলোর বিশ্বাস হয় না! সর্বদাই সংশয়! আত্মার সাক্ষাৎকার না হলে সব সংশয় যায় না।
“শুদ্ধাভক্তি—কোন কামনা থাকবে না, সেই ভক্তি দ্বারা তাঁকে শীঘ্র পাওয়া যায়।
“অণিমাদি সিদ্ধি—এ-সব কামনা। কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন, ভাই, অণিমাদি সিদ্ধাই, একটিও থাকলে ঈশ্বরলাভ হয় না; একটু শক্তি বাড়তে পারে।”
“তান্ত্রিকভক্ত—আজ্ঞে, তান্ত্রিক ক্রিয়া আজকাল কেন ফলে না?
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সর্বাঙ্গীণ হয় না, আর ভক্তিপূর্বক হয় না—তাই ফলে না।
এইবার ঠাকুর কথা সাঙ্গ করিতেছেন। বলিতেছেন (Ramakrishna), ভক্তিই সার; ঠিক ভক্তের কোন ভয় ভাবনা নাই। মা সব জানে। বিড়াল ইঁদুরকে ধরে একরকম করে, কিন্তু নিজের ছানাকে আর-একরকম করে ধরে।
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।