Kathamrita: “তুমি আদ্যাশক্তি মা জিতেন্দ্রিয় নারী”…‘কথামৃত’ থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী
শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।
শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ২১শে জুলাই
শ্রীযুক্ত অধর সেনের বাটীতে কীর্তনানন্দে
রামালাল (Ramakrishna) আবার গাইলেন:
ভবদারা ভয়হরা নাম শুনেছি তোমার,
তাইতে এবার দিয়েছি ভার তারো তারো না তারো মা।
তুমি মা ব্রহ্মাণ্ডধারী ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপিকে,
কে জানে তোমারে তুমি কালী কি রাধিকে,
ঘটে ঘটে তুমি ঘটে আছ গো জননী,
মূলাধার কমলে থাক মা কুলকুণ্ডলিনী।
তদূর্ধ্বেতে আছে মাগো নামে স্বাধিষ্ঠান,
চতুর্দল পদ্মে তথায় আছ অধিষ্ঠান,
চর্তুদলে থাক তুমি কুলকুণ্ডলিনী,
ষড়দল বজ্রাসনে বস মা আপনি।
তদূর্ধ্বেতে নাভিস্থান মা মণিপুর কয়,
নীলবর্ণের দশদল পদ্ম যে তথায়,
সুষুম্নার পথ দিয়ে এস গো জননী,
কমলে কমলে থাক কমলে কামিনী।
তদূর্ধ্বেতে আছে মাগো সুধা সরোবর,
রক্তবর্ণের দ্বাদশদল পদ্ম মনোহর,
পাদপদ্মে দিয়ে যদি এ পদ্ম প্রকাশ।
(মা), হৃদে আছে বিভাবরী তিমির বিনাশ।
তদূর্ধ্বেতে আছে মাগো নাম কণ্ঠস্থল,
ধূম্রবর্ণের পদ্ম আছে হয়ে ষোড়শদল।
সেই পদ্ম মধ্যে আছে অম্বুজে আকাশ,
সে আকাশ রুদ্ধ হলে সকলি আকাশ।
তদূর্ধ্বে ললাটে স্থান মা আছে দ্বিদল পদ্ম,
সদায় আছয়ে মন হইয়ে আবদ্ধ।
মন যে মানে না আমার মন ভাল নয়,
দ্বিদলে বসিয়া রঙ্গ দেখয়ে সদায়।
তদূর্ধ্বে মস্তকে স্থান মা অতি মনোহর,
সহস্রদল পদ্ম আছে তাহার ভিতর।
তথায় পরম শিব আছেন আপনি,
সেই শিবের কাছে বস শিবে মা আপনি।
তুমি আদ্যাশক্তি মা জিতেন্দ্রিয় নারী,
যোগীন্দ্র মুনীন্দ্র ভাবে নগেন্দ্র কুমারী।
হর শক্তি হর শক্তি সুদনের এবার,
যেন না আসিতে হয় মা ভব পারাবার।
তুমি আদ্যাশক্তি মাগো তুমি পঞ্চতত্ত্ব,
কে জানে তোমারে তুমি তুমিই তত্ত্বাতীত।
ওমা ভক্ত জন্য চরাচরে তুমি সে সাকার,
পঞ্চে পঞ্চ লয় হলে তুমি নিরাকার।
নিরাকার সচ্চিদানন্দ দর্শন—ষট্চক্রভেদ—নাদভেদ ও সমাধি
শ্রীযুক্ত রামলাল যখন গাহিতেছেন (Kathamrita):
“তদূর্ধ্বেতে আছে মাগো নাম কণ্ঠস্থল,
ধূম্রবর্ণের পদ্ম আছে হয়ে ষোড়শদল।
সেই পদ্ম মধ্যে আছে অম্বুজে আকাশ,
সে আকাশ রুদ্ধ হলে সকলি আকাশ।”
তখন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) মাস্টারকে বলিতেছেন—
“এই শুন, এরই নাম নিরাকার সচ্চিদানন্দ-দর্শন। বিশুদ্ধচক্র ভেদ হলে সকলি আকাশ।”
মাস্টার—আজ্ঞে হাঁ।
শ্রীরামকৃষ্ণ—এই মায়া-জীব-জগৎ পার হয়ে গেলে তবে নিত্যতে পৌঁছানো যায়। নাদ ভেদ হলে তবে সমাধি হয়। ওঁকার সাধন করতে করতে নাদ ভেদ হয়, আর সমাধি হয়।
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।