Kathamrita: “ঈশ্বর বিদ্যাসাগর যেরূপ কাজ করছে সে খুব ভাল”…‘কথামৃত’ থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।
শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে
সপ্তম পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ২২শে জুলাই
দক্ষিণেশ্বর-কালীবাটীতে ভক্তসঙ্গে ব্রহ্মতত্ত্ব ও আদ্যাশক্তির বিষয়ে
কথোপকথন—বিদ্যাসাগর ও কেশব সেনের কথা
জ্ঞানযোগ ও নির্বাণমত
একটি বাগানে ছিল। আমার পণ্ডিত দেখবার ইচ্ছা হল। হৃদেকে পাঠিয়ে দিলুম জানতে, অভিমান আছে কি না? শুনলাম, পণ্ডিতের (Kathamrita) অভিমান নাই। আমার সঙ্গে দেখা হল। এত জ্ঞানী আর পণ্ডিত, তবু আমার মুখে রামপ্রসাদের গান শুনে কান্না! কথা কয়ে এমন সুখ কোথাও পাই নাই। আমায় বললে, ‘ভক্তের সঙ্গ করব এ-কামনা ত্যাগ করো, নচেৎ নানারকমের লোক তোমায় পতিত করবে।’ বৈষ্ণবচরণের গুরু উৎসবানন্দের সঙ্গে লিখে বিচার করেছিল, আমায় আবার বললে, আপনি একটু শুনুন। একটা সভায় বিচার হয়েছিল—শিব বড়, না, ব্রহ্মা বড়। শেষে ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরা পদ্মলোচনকে জিজ্ঞাসা (Kathamrita) করলে। পদ্মলোচন এমনি সরল, সে বললে, ‘আমার চৌদ্দপুরুষ শিবও দেখে নাই, ব্রহ্মাও দেখে নাই।’ কামিনী-কাঞ্চনত্যাগ শুনে আমায় একদিন বললে, ‘ও-সব ত্যাগ করেছ কেন? এটা টাকা, এটা মাটি—এ ভেদবুদ্ধি তো অজ্ঞান থেকে হয়।’ আমি কি বলব—বললাম, কে জানে বাপু, আমার টাকা-কড়ি ও-সব ভাল লাগে না।”
বিদ্যাসাগরের দয়া—কিন্তু অন্তরে সোনা চাপা
“একজন পণ্ডিতের ভারী অভিমান ছিল। ঈশ্বরের (Kathamrita) রূপ মানত না। কিন্তু ঈশ্বরের কার্য কে বুঝবে? তিনি আদ্যাশক্তিরূপে দেখা দিলেন। পণ্ডিত অনেকক্ষণ বেহুঁশ হয়ে রইল। একটু হুঁশ হবার পর, কা! কা! কা! (অর্থাৎ কালী) এই শব্দ কেবল করতে লাগল।”
ভক্ত—মহাশয়, বিদ্যাসাগরকে দেখেছেন(Kathamrita), কিরকম বোধ হল?
শ্রীরামকৃষ্ণ—বিদ্যাসাগরের পাণ্ডিত্য আছে, দয়া আছে, কিন্তু অর্ন্তদৃষ্টি নাই। অন্তরে সোনা চাপা আছে, যদি সেই সোনার সন্ধান পেত, এত বাহিরের কাজ যা কচ্ছে সে-সব কম পড়ে যেত; শেষে একেবারে ত্যাগ হয়ে যেত। অন্তরে হৃদয়মধ্যে ঈশ্বর আছেন—এ-কথা জানতে পারলে তাঁরই ধ্যান চিন্তায় মন যেত। কারু কারু নিষ্কামকর্ম অনেকদিন করতে করতে শেষে বৈরাগ্য হয়, আর ওইদিকে মন যায়; ঈশ্বরে মন লিপ্ত হয়।
“ঈশ্বর বিদ্যাসাগর যেরূপ কাজ করছে সে খুব ভাল (Kathamrita)। দয়া খুব ভাল। দয়া আর মায়া অনেক তফাত। দয়া ভাল, মায়া ভাল নয়। মায়া আত্মীয়ের উপর ভালবাসা—স্ত্রী, পুত্র, ভাই, ভগিনী, ভাইপো, ভাগনে, বাপ, মা এদেরই উপর। দয়া সর্বভূতে সমান ভালবাসা।”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।