Kathamrita: “মায়াতে সংসারী জীব কামিনি-কাঞ্চনে বদ্ধ”……‘কথামৃত’ থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী
শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।
শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ ও কথোপকথন
চতুর্থ পরিচ্ছদের
তমেব সূক্ষ্ম ত্বং স্থূলা ব্যক্তাব্যক্তস্বরূপিণী।
নিরাকারপি সাকারা কস্তাং বেদিতুমর্হতি।।
(মহানির্বাণতন্ত্র, চতুর্থোল্লাস, ১৫)
বেদ ও তন্ত্র সমন্বয়—আদ্যাশক্তি ঐশ্বর্য
(সহাস্যে)—হ্যাঁ গো! গিন্নিদের ওই রকম একটা হাঁড়ি থাকে। ভিতরে সমুদ্রের ফেনা, নীল বড়ি, ছোট-ছোট পুঁটলি বাঁধা শশাবিচি, কুমড়াবিচি, লাউবিচি—এই সব রাখে, দরকার হলে বার করে। মা ব্রহ্মময়ী সৃষ্টি-নাশের পর ওই রকম সব বীজ কুড়িয়ে রাখেন। সৃষ্টির পর আদ্যাশক্তি জগতের ভিতরেই থাকেন! জগৎপ্রসব করেন, আবার জগতের মধ্যে থাকেন। বেদে আছে ঊর্ণনাভির কথা; মাকড়সা আর তার জাল। মাকড়সা ভিতর থেকে জাল বার করে, আবার নিজে সেই জালের উপর থাকে। ঈশ্বর (Ramakrishna) জগতের আধার আধেয় দুই।
কালীব্রহ্ম—কালী নির্গুণা ও সগুণা
কালী কি কালো? দূরে তাই কালো, জানতে পারলে কালো নয়।
আকাশ দূর থেকে নীলবর্ণ। কাছে দেখ, কোন রঙ নাই। সমুদ্রের জল দূরে থেকে নীল কাছে গিয়ে হাতে তুলে দেখ, কোন রঙ নাই।
এই কথা (Ramakrishna) বলিয়ে প্রেমোন্মত্ত হইয়া শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গান ধরিলেনঃ
মা কি আমার কালো রে।
কালোরূপে দিগম্বরী, হৃদপদ্ম করে আলো রে।।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
ত্রিভির্গুণয়ৈর্ভাবৈরেভিঃ সর্বমিদং জগৎ।
মোহিততং নাভিজানাতি মামেভ্যঃ পরমব্যয়ম্।।
(গীতা—৭।১৩।)
শ্রীরামকৃষ্ণ (কেশবাদির প্রতি)—বন্ধন আর মুক্তি—দুয়ের কর্তাই তিনি। তাঁর মায়াতে সংসারী জীব কামিনি-কাঞ্চনে বদ্ধ, আবার তাঁর দয়া হেলেই মুক্ত। তিনি (Ramakrishna) ভববন্ধনের বন্ধনহারিণী।
এই বালিয়া (Ramakrishna) গন্ধর্বনিন্দিতকণ্ঠে রামপ্রসাদদের গান গাহিতেছেন;
শ্যামা মা উড়াচ্ছে ঘুড়ি (ভবসংসার বাজার মাঝে)।
(ওই যে) আশা-বায়ু ভরে উড়ে, বাঁধা তাহে মায়া দড়ি।।
কাক গণ্ডি মণ্ডি গাঁথা, পঞ্জরাদি নানা নাড়ী।
ঘুড়ি স্বগুণে নির্মাণ করা, কারিগরি বাড়াবাড়ি।।
বিষয়ে মেজেছ মাঞ্জা, কর্কশ হয়েছে দড়ি।
ঘুড়ি লক্ষের দুটা-একটা কাটে, হেসে দাও মা হাত-চাপড়ি।।
প্রসাদ বলে, দক্ষিণা বাতাসে ঘুড়ি যাবে উড়ি।
ভবসংসার সমুদ্রপারে পড়বে গিয়ে তাড়াতাড়ি।।
আরও পড়ুনঃ “পৃথিবী ছিল না, নিবিড় আঁধার, তখন কেবল মা নিরাকার মহাকালী—মহাকালের সঙ্গে বিরাজ করছিল”
আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।