img

Follow us on

Thursday, Sep 19, 2024

Durga puja 2022: মহাষ্টমীর মাহাত্ম্য: জানুন মাতা পার্বতীর মহাগৌরী রূপের কাহিনী

নবরাত্রির অষ্টম দিনে পূজিতা হন মাতা মহাগৌরী। দেবী মহাগৌরী চতুর্ভূজা।  উপরের ডান হাতে রয়েছে ত্রিশূল এবং উপরের বাম হাতে ডমরু ।  নীচের হাত দুটি অভয়া এবং বরামুদ্রার ভঙ্গিমায় থাকে।

img

মাতা পার্বতীর মহাগৌরী রূপের কাহিনী

  2022-10-03 09:08:14

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়:  সারাদেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে নবরাত্রি (Navratri), চলছে বাঙালির সবথেকে বড়ো উৎসব দুর্গাপূজা (Durga puja)। নবরাত্রির অষ্টম দিনে পূজিতা হন মাতা মহাগৌরী। দেবী মহাগৌরী চতুর্ভূজা।  উপরের ডান হাতে রয়েছে ত্রিশূল এবং উপরের বাম হাতে একটি ডমরু ।  নীচের হাত দুটি অভয়া এবং বরামুদ্রার ভঙ্গিমায় থাকে। মাতা মহাগৌরীর এই রূপে দেবীর বাহন হল একটি ষাঁড়। দুর্গার এই রূপটিকে তাঁর গাত্র বর্ণের কারণে মহাগৌরী বলা হয়। পৌরাণিক মত অনুযায়ী,  দেবী শৈলপুত্রী (নবরাত্রির প্রথম দিনে এই মাতা পূজিতা হন) ১৬ বছর বয়সে অসামান্য সুন্দরী এবং গৌরবর্ণা  ছিলেন। এর ফলে তিনি দেবী মহাগৌরী হিসেবে পরিচিত হন। তাঁকে শঙ্খ, চাঁদ এবং সাদা ফুলের সাথে তুলনা করা হয়েছে। স্নিগ্ধতা, শুভ্রতার প্রতীক মানা হয় তাঁকে। আরেকটি পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী,  কালী রূপে মাতা পার্বতীর গাত্রবর্ণ সম্পূর্ণ কৃষ্ণ বর্ণে পরিবর্তিত হয়েছিল। নিজের পূর্ববর্তী বর্ণ ফিরে পেতে মাতা পার্বতী ব্রহ্মার তপস্যায় ব্রতী হয়েছিলেন‌।একাকী গভীর অরণ্য মাঝে , রোদ, ঝড়, বৃষ্টি, হি‌ংস্র জন্তুদের আক্রমণ - এসমস্ত কিছু উপেক্ষা করেই মাতা পার্বতী তপস্যা করছিলেন। অবশেষে ব্রহ্মা প্রসন্ন হয়ে আবির্ভূত হন এবং মাতা পার্বতী কে বরদান করেন যে মানস সরোবরে স্নান করলেই তিনি পূর্বের বর্ণ ফিরে পাবেন।  ব্রহ্মার কথামতো মানস সরোবরে স্নান করার পরেই মাতা পার্বতী তাঁর নিজের পূর্বের গাত্রবর্ণ ফিরে পান, অর্থাৎ পুনরায় গৌরবর্ণা হয়ে যান  এই গৌরবর্ণা মাতা পার্বতী তখন মহাগৌরী নামে প্রসিদ্ধ হন। অন্য একটি পুরাণ অনুযায়ী, হিমায়লকন্যা মাতা পার্বতী ছিলেন গৌরবর্ণা। 

শিবকে স্বামী রূপে , পতি রূপে পাওয়ার জন্য মহর্ষি নারদের পরামর্শ মতো তিনি গভীর তপস্যা শুরু করেন। গভীর অরণ্যে, সমস্ত আরাম, সুখ ত্যাগ করে ব্যাপক কৃচ্ছসাধনের মধ্যে দিয়ে এই তপস্যা চলতে থাকলো বছরের পর বছর ধরে। সূর্যের তাপ, শীতের হিমেল হাওয়া , বৃষ্টি  এবং ব্যাপক ঝড়ের মধ্যেও তপস্যায় ছেদ পড়লো না। কথিত আছে এইসময় মাতার সমস্ত অঙ্গ ধূলিকণা, মাটি, গাছের পাতা দিয়ে ঢাকা পড়ে গেছিল। গৌরবর্ণা মাতার সমস্ত শরীরের উপর একটি কৃষ্ণ বর্ণের আস্তরণ বা  ত্বক তৈরি হয়ে গেছিল। অবশেষে,  ভগবান শিব দেবীর তপস্যায় প্রসন্ন হয়ে মাতা পার্বতীর সম্মুখে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং মাতা কে আশ্বস্ত করেছিলেন যে তাঁকেই( ভগবান শিবকে) মাতা পার্বতী স্বামী রূপে ,পতি রূপে  লাভ করবেন। এরপর গঙ্গার পবিত্র জলরাশির দ্বারা ভগবান শিব, মাতা পার্বতী কে স্নান করিয়েছিলেন। তপস্যারত  অবস্থায় মাতার শরীরে যে ময়লার আবরণ তৈরী হয়েছিল, যার জন্য মাতা গৌরবর্ণা থেকে কৃষ্ণ বর্ণা হয়ে গেছিলেন। মহাদেব শিব তাঁকে স্নান করানোর পর মাতা পূর্বের মতো পুনরায় গৌরবর্ণা হয়ে ওঠেন। গৌরবর্ণা এই মাতাই মহাগৌরী নামে পরিচিত। যিনি নম্রতা, শুদ্ধতা, পবিত্রতার প্রতীক রূপে পূজিতা হন।

মাতা মহাগৌরী বিষয়ে আরও কথিত রয়েছে যে, একদিন দেবী, গৌরী রূপে আটবছরের  বালিকা সেজে শিবের সামনে নৃত্য করে তাঁকে আনন্দিত করছিলেন এরপরে শিব তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে দেবী পার্বতী নিজের রূপ প্রকাশ করেন।
শ্বেত বৃষ সমারূঢ়া শ্বেতাম্বর ধরা শুচিঃ,
মহাগৌরী শুভং দধান্মহোদৈ ব প্রমোদ্দা ।

যা দেবী সর্বভূতেষু মা মহাগৌরী রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ ॥
 - এই বৈদিক মন্ত্রের দ্বারাই মূলত মাতা মহাগৌরীর বন্দনা করা হয়‌ মহাষ্টমীর দিনে। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, মাতা সমস্ত অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেন এবং তাঁর আশীর্বাদে জীবন সম্পূর্ণভাবে সুখময় ও প্রেমময় হয়ে ওঠে। উজ্জ্বল সৌন্দর্যের প্রতীক এই দেবী অষ্টমীতে ভক্তদের দ্বারা আরাধিত হন। তাঁর নৈবেদ্যতে নারকেল রাখার রীতি রয়েছে। বিশ্বাস রয়েছে, মাতার আশীর্বাদ স্বরূপ ভক্তদের ভালো বিবাহ হয়।

সিঁদুর, মেহেন্দি, কাজল, টিপ, চুড়ি, পায়ের আংটি, চিরুনি, আলতা, আয়না, পায়ের পাতা, সুগন্ধি, কানের দুল, নাকের পিন, নেকলেস, লাল চুনরি, মহাভার, চুলের পিন ইত্যাদি দ্বারা মায়ের পুজো সম্পন্ন হয়। সবজির তরকারি এবং হালুয়া দিয়ে মাতা মহাগৌরীকে  ভোগ নিবেদন করা হয়।

Tags:

Durga puja 2022

MAHA ASTAMI

MAHA GOURI


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর