যে কোনও পুজোতেই প্রথমে ঘট স্থাপন করা হয়! কেন?
মঙ্গলঘট (ফাইল ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেখতে দেখতে চলে এল দুর্গাপুজো। চারদিন ধরে মাতৃ আরাধনায় মেতে উঠবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। হিন্দু ধর্মে যে কোনও পুজোরই বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে। যেমন ঘট (Mangal Ghot) স্থাপন হল পুজোর অন্যতম অপরিহার্য অংশ। যে কোনও পুজোতেই প্রথমে ঘট স্থাপন করা হয়। বলতে গেলে ঘট স্থাপনের মাধ্যমেই ওই পুজোর আনুষ্ঠানিকতার শুরু হয়। যে পুজোর জন্য ঘট স্থাপন করা হয়, মূলত ঘট স্থাপনের মাধ্যমে ওই দেব বা দেবীকে আহ্বান জানানো হয় পুজো গ্রহণের জন্য।
ঘট ভগবানের নিরাকার অবস্থার প্রতীক
কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেব এবং দেবীর জন্য দেখা যায় আলাদা আলাদা ঘট। বিশ্বাস, ঘট কোনও দেবী বা দেবতার মূর্তি বা প্রতিমা নয়। ঘট ভগবানের নিরাকার অবস্থার প্রতীক। সনাতন ধর্মের প্রত্যেক দেবদেবী এক অভিন্ন ও নিরাকার পরম ব্রহ্মেরই এক একটি সাকার রুপের প্রকাশ। শাস্ত্র মতে, ঘট হল মঙ্গলের চিহ্ন। যে কোনও পুজো, মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান, গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে ঘট (Mangal Ghot) স্থাপন করা হয়। ঘটের মধ্যে আম্রপল্লব, বেলপাতা, ফুল ইত্যাদি দিয়ে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের পুজো হয়। বেলপাতা হল ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের প্রতীক। মানবজীবনকে ঘটের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তাতে থাকে জল। জল হল জীবনের প্রতীক। প্রাণহীন শরীর যেমন মূল্যহীন, তেমনই জলবিহীন ঘটও মূল্যহীন।
ঘট স্থাপনের দ্বারা দেব-দেবীকে আহ্বান জানানো হয়
এই ঘট স্থাপন এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, দেব-দেবীর কোনও মূর্তি ছাড়া শুধু ওই ঘটেই পুজো সম্পন্ন করা যায়, যার নাম হলো ঘটপুজো। ঘট স্থাপন করে যে দেব-দেবীকে আহ্বান জানানো হয়, সেই দেবদেবী ওই ঘটে (Mangal Ghot) অবস্থান নেন এবং ওই ঘটে থেকেই পুজো গ্রহণ করেন। ঘটের পিছনে যে আমরা নানা ভঙ্গিমার মূর্তি স্থাপন করি, সেটা মূলত পুজোকে একটি বড় অনুষ্ঠানের রূপ দেবার জন্য, যাতে ভক্তরা ওই মূর্তি দর্শনের জন্য পুজোর স্থানে আসেন এবং নিজের কল্যাণ লাভ করেন। ঘটেই যে কোনও দেব-দেবী অবস্থান করেন। তার বড় প্রমাণ হল, পুজো শেষে পুরোহিত যখন বিসর্জন দেন, তখন তিনি মন্ত্র উচ্চারণ শেষে ঘট নাড়িয়ে তা সম্পন্ন করেন। বিসর্জন প্রকৃতপক্ষে এটাই।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।