Brutality of Tipu Sultan: টিপু সুলতানের অত্যাচারের ইতিহাস জানুন...
টিপু সুলতান (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘‘আমার তলোয়ার কাফেরদের রক্তের জন্যই জ্বলজ্বল করছে’’, এমন কথা বলেছিলেন টিপু সুলতান (Tipu Sultan)। শুধু বলা নয়, নিজের তলোয়ারের হাতলেও এই কথা খোদাই করে রেখেছিলেন টিপু, যিনি একাধিক হিন্দু হত্যার নিষ্ঠুর খলনায়ক বলে বিবেচিত হন। কাফের বা বিধর্মী হিন্দুদের প্রতি তাঁর নৃশংসতার অসংখ্য নজির রয়েছে। সাধারণভাবে আঠারো শতকের শেষের দিকে মহীশূরের শাসক টিপু সুলতানকে বামপন্থী ইতিহাসবিদরা সবসময়ই একজন মহান বীর হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি নাকি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন বলেও প্রচার করা হয়। তবে আসল সত্য হল, তিনি ছিলেন একজন বর্বর শাসক এবং নিপীড়ন করাই ছিল তাঁর কাজ। তৎকালীন ভারতবর্ষের কর্নাটক সমেত মহীশূর এবং মালাবার অঞ্চলে টিপু সুলতান ব্যাপকভাবে ধর্মান্তকরণের কাজ শুরু করেন। জানা যায়, তলোয়ারের জোরে তিনি ৪ লাখেরও বেশি হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করেন।
সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম 'টাইমস নাও নব ভারতে'র এডিটর সুশান্ত সিন্হার একটি ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে তিনি টিপু সুলতানের (Tipu Sultan) নিষ্ঠুরতা এবং নৃশংসতাকে তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে বেশ কতগুলি ঐতিহাসিক বইয়ের উল্লেখ করেছেন সুশান্ত সিন্হা যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ‘মালাবার ম্যানুয়াল’, ‘মহীশূর গেজেটিয়ার’ এবং ‘কেট ব্রিটলব্যাঙ্ক’ ও ‘দ্য লাইফ অফ টিপু সুলতান’। উল্লেখযোগ্যভাবে, ওই ভিডিওতে সুশান্ত সিন্হা তথ্য ও প্রমাণ সমেত তুলে ধরেছেন যে কীভাবে জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করতেন টিপু। এনিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন সুশান্ত সিন্হা, যা বিভিন্ন ইতিহাসবিদ সমেত ব্রিটিশ আধিকারিকরাও মেনে নিয়েছেন। এখানেই সুশান্ত সিন্হা উল্লেখ করেন যে টিপু সুলতানের তলোয়ারের হাতলে লেখা ছিল, ‘‘আমার তলোয়ার কাফেরদের রক্তের জন্যই জ্বলজ্বল করছে।’’
It is written on the handle of Tipu Sultan's sword: My sword is shining for the blood of infidels.
— महावीर, ಮಹಾವೀರ, Mahaveer (@Mahaveer_VJ) July 22, 2024
Congress kept doing politics of appeasement by hiding such information and the correct history was not taught in schools. pic.twitter.com/OEq9PYD9vY
তাঁর এই ধরনের মনোভাবই প্রতিফলন ঘটায় ঠিক কতটা নৃশংস তিনি ছিলেন! হিন্দুদের প্রতি ঠিক কী মনোভাব রাখতেন টিপু! কতটা ধর্মান্ধ তিনি ছিলেন! তবে বামপন্থী সমেত বেশ কিছু রাজনৈতিক দল তোষণের রাজনীতির কারণে এই সমস্ত তথ্যগুলিকে বিকৃত করে এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়ানোর উদ্দেশ্যে টিপু সুলতানকে এক মহান শাসক হিসেবে আখ্যায়িত করে। টিপু সুলতান (Tipu Sultan) কাফের অর্থাৎ হিন্দু এবং খ্রিস্টানদের ইসলামের ধর্মান্তরিত করার জন্য বেশ কতগুলো নৃশংস পদ্ধতি নিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, জনগণের মধ্যে জোরপূর্বক খতনা করা অর্থাৎ যাকে পোশাকি ভাষায় বলে মুসলমানীকরণ, হিন্দুদের জোর করে গরুর মাংস খাওয়াতেন, এর পাশাপাশি মন্দির ও গির্জাগুলিতে আক্রমণও চালাতেন টিপু। তৎকালীন দক্ষিণ ভারতের কর্নাটক রাজ্যের মহীশূর, মালাবার অঞ্চলের ব্রাহ্মণ, নায়ার সমেত অন্যান্য বেশিরভাগ শ্রেণির প্রতিই তিনি ছিলেন অত্যন্ত নৃশংস। তিনি হিন্দু অভিজাতদের অপহরণ করতেন বলেও অভিযোগ ওঠে। শুধুমাত্র টিপু সুলতানের আতঙ্কে, অত্যাচারে সন্ত্রস্ত হয়ে ৩০ হাজারেরও বেশি হিন্দু ত্রিবাঙ্কুরে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
তবে টিপুর এমন অত্যাচারের বিরুদ্ধে তৎকালীন ভারতবর্ষের এগিয়ে এসেছিলেন বেশ কিছু হিন্দু রাজা। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন দক্ষিণ মালাবারের রাজা রাম বর্মা। টিপু সুলতানের অত্যাচারের (Brutality of Tipu Sultan) বিরুদ্ধে তিনি একটি বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন বলে জানা যায়। পরবর্তীকালে কোদাভার হিন্দুরাও বিদ্রোহ ঘোষণা করে টিপুর বিরুদ্ধে। এখানেও টিপু বিদ্রোহ দমন করে হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করেন। যার সংখ্যা ছিল ৫০ হাজারেরও বেশি। এর পাশাপাশি নারী-শিশু সহ হাজার হাজার হিন্দুকে হত্যা করেছিলেন টিপু সুলতান।
নিজের দখলে থাকা অঞ্চলগুলিকে ইসলামীকরণের (Brutality of Tipu Sultan) উদ্দেশ্যে অসংখ্য হিন্দু মন্দিরও টিপু ধ্বংস করেছিলেন বলে জানা যায়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে শ্রী রঙ্গনাথ স্বামী মন্দির। কেরল রাজ্যের গুরুভায়ুর মন্দির তিনি লুট করেন বলে জানা যায়, কান্নুরের থালিপারাম্বা মন্দিরকেও ধ্বংস করেছিলেন টিপু। হিন্দুদের ওপর অত্যাচার, মন্দির ধ্বংস, ধর্মান্তকরণ সমেত অন্যান্য বর্বর কাজ করে খলনায়ক হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন টিপু সুলতান, তারপরেও শুধুমাত্র তোষণের রাজনীতির কারণেই স্কুলের পাঠ্যপুস্তকগুলিতে তাঁকে নায়ক হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়েছে। শুধু তাই নয় কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার টিপু সুলতান জয়ন্তীও পালন করেছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।