মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০১৮ সালের এক মঙ্গলবার বিকেলে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল প্রায় ৪০ বছরের পুরানো মাঝেরহাট ব্রিজ। মৃত্যু হয়েছিল বেশ কয়েকজনের। আর আগে ২০১৩ সালের ৪ মার্চ মধ্যরাতে ভেঙে পড়েছিল উল্টোডাঙার ওভারব্রিজ। এর পর ২০১৬-র ৩১ মার্চ ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ পোস্তা সেতু। সেই ঘটনায় মারা যান ২৭ জন। আরও ৮০ জন জখম হয়েছিলেন। শহরে একের পর এক সেতু বিপর্যয়ের পর এবার হাওড়া শহরের প্রধান যোগাযোগকারী বঙ্কিম ব্রিজের এতটাই বেহাল অবস্থা যে সেই ব্রিজটিও মাঝেরহাট ব্রিজের মত ভেঙে পড়বে না তো? এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হাওড়া শহরের বাসিন্দারা, বিশেষ করে হাওড়ার মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা।
বঙ্কিম সেতু নিয়ে কেন উদ্বেগ?
দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। ফলে, ক্রমশ বেহাল হয়ে পড়ছে হাওড়ার বঙ্কিম সেতু। হাওড়া ব্রিজ থেকে নেমে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এই বঙ্কিম সেতু। মঙ্গলবার দুপুরে এই সেতুর চাঙর ভেঙে পড়ে জখম হয়েছেন দুজন। তাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই বঙ্কিম সেতুর নিচেই বসে মঙ্গলাহাট। সেতুর ঠিক নীচে পুজোর আগে ফুটপাতের দোকানগুলিতে উপচে পড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। তখনই বঙ্কিম সেতুর চাঙর খসে পড়ে এক ক্রেতার গায়ে লাগে। সঙ্গে ছিল এক শিশু। ওই চাঙড়ের আঘাতে জখম হয় শিশুটি। তাকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। এমনিতেই কয়েক বছর আগে সেতুর ওপরের ভার কমাতে হাওড়া সিটি পুলিশের উদ্যোগে সেতুর ওপর পার্কিং বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সে নির্দেশও বেশি দিন মানা হয়নি । মঙ্গলাহাটের দুদিন আগে থেকেই বড় বড় লরি লোডিং আনলোডিং এর কাজ হয় বঙ্কিম সেতুর ওপরেই। ফলে সেতুর নিচে দিয়ে যারা যাতায়াত করেন তারা খুবই আতঙ্কের মধ্যে তাদের পথ চলতে হয়। ফলে, যে কোনও মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে পড়তে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের কী বক্তব্য?
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের বক্তব্য,বঙ্কিম সেতুর অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। কোনও মেরামতি করা হয়নি। অনেক জায়গাতেই সেতু থেকে জল পড়ে। আবার কোথাও কোথাও সেতুতে ওঠার লোহার সিঁড়ি পুরোপুরি ভগ্ন দশা। সেসব জায়গা দিয়ে সেতুতে উঠতে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়েন অনেকে। একইভাবে হাওড়ার মাছ বাজারের সামনে থেকে বঙ্গবাসী সিনেমা হলের সামনে যেখানে গিয়ে সেতুটি নেমেছে পুরো অংশটাই রাস্তা যেমন ভাঙাচোরা,একইভাবে সেতুর নিচের ছাদ থেকে মাঝেমধ্যেই খসে পড়ে চাঙড়। কয়েকদিন আগেও এই ধরনের একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরেও সেতু মেরামতির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান কী বললেন?
হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী বলেন, এদিনে দুর্ঘটনার পরেই আমি কে এম ডি এর আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কারণ সেতুটি মেরামতি এবং রক্ষণাবেক্ষণ এর কাজ করে কে এম ডি এ। কেএমডির আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুততার সঙ্গে সেতু মেরামতির কাজ শুরু হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours