মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবার সরকারি স্ট্যাম্প দেওয়া বস্তায় ভরে বাজি পাচার। দত্তপুকুরের (Duttapukur) মোচপোল গ্রামে বিস্ফোরণস্থলের একেবারে কাছেই দুটি দোকান ঘরে এরকম কয়েকশো বাজির বস্তার হদিশ। যেগুলির প্রতিটিতেই কোনও না কোনও সরকারি সংস্থার ছাপ দেওয়া রয়েছে। পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই বাজি কারবারিরা এই অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, তারপরেও পুলিশ সেই সমস্ত বাজি ভর্তি বস্তা বাজেয়াপ্ত কিংবা দোকানঘর থেকে সরাতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি, এমনটাই অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তাই উঠছে প্রশ্ন।
ল্যাবরেটরির পর সরকারি ছাপ দেওয়া বস্তার হদিশ
দত্তপুকুরের (Duttapukur) মোচপোলে বিস্ফোরণের পর বিভিন্ন জঙ্গল এবং বাঁশঝাড়ে বাজির উপকরণ ফেলে দিয়েই চম্পট দেয় শ্রমিকরা। যা এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আশেপাশে। মঙ্গলবারই নিহত কেরামত আলির রাসায়নিক ভর্তি গোডাউনের হদিশ পাওয়া যায়। তারও আগে বেরুনান পুকুরিয়ার একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরির হদিশ মিলেছিল। সেখান থেকে টেস্টটিউবের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তেমনই অত্যাধুনিক সেই ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন ধরনের বোমা-বাজির পরীক্ষা-নিরীক্ষারও বন্দোবস্ত ছিল। এবার হদিশ মিলল সরকারি ছাপ দেওয়া বাজি মজুতের বস্তা।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কী বললেন স্থানীয় বাসিন্দারা? (Duttapukur)
দত্তপুকুর (Duttapukur) থানার ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের মোচপোল গ্রাম এবং তার আশপাশে বাজিই যেন কুটির শিল্প। এলাকার যেদিকেই চোখ যাবে সেদিকেই লক্ষ্য করা যাবে ছোট, বড়, মাঝারি মাপের বাজি তৈরির গোডাউন। কেউ কেউ আবার ঘর ভাড়া নিয়ে বাজির কারখানা করে ফেলেছেন। ঘটনাস্থলের ১০-১৫ ফুট দূরে পরপর তিনটি শাটার দেওয়া দোকানঘরের হদিশ পাওয়া যায়। এর দুটিতেই থরে থরে সাজানো ছিল সরকারি ছাপ দেওয়া বাজি ভর্তি বস্তা। কোনও বস্তায় ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ায় ছাপ দেওয়া, আবার কোনওটায় পাঞ্জাব সরকার, কর্ণাটকের চিনি কলের ছাপ দেওয়া রয়েছে বস্তায়। কার্যত অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেগুলো। পুলিশের এই গা-ছাড়া মনোভাব আতঙ্ক বাড়িয়েছে মোচপোল গ্রামের বাসিন্দাদের। এ বিষয়ে একজন এলাকাবাসী বলেন, দোকানঘরগুলি কেরামত আলি ভাড়া দিত। সেখানে বাজি মজুত করত সে। আমরা বললেও আমাদের কথা তারা শুনত না। উল্টে টাকার গরম দেখিয়ে ভয় দেখাত আমাদের। পুলিশেকে টাকা খাইয়ে এই বেআইনি কারবার চালাত। আমরা গরিব, আমাদের টাকাপয়সা নেই। তাই পুলিশ আমাদের কথা শুনতো না। সরকারি স্ট্যাম্প দেওয়া বস্তায় বাজি মজুতের ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল এলাকা জুড়ে। যে বস্তায় খাদ্সামগ্রী থাকার কথা, সেই বস্তায় কীভাবে বাজি মজুত হল, এখন সেটাই সব থেকে বড় দেখার প্রশ্ন। পাশাপাশি কীভাবেই বা সেই সরকারি ছাপ দেওয়া বস্তা বাজি কারবারিদের কাছে পৌঁছে গেল, তা নিয়েই এখন শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours