মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চৈত্রমাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri)। এদিন হিন্দু নববর্ষেরও সূচনা হয়। চৈত্র মাসের প্রথম দিন, বা প্রতিপদ, ২১ মার্চ রাত ১০.৫২ মিনিটে শুরু হয়। তবে চৈত্র প্রতিপদ শুরু হবে ২২ মার্চ। ৩০ মার্চ নবমীর দিন পালিত হতে চলেছে বাসন্তী রামনবমী। সেই দিনে দেশ জুড়ে থাকবে উৎসবের আসর। নবমী তিথি ২৯ মার্চ রাত ৯.০৭ মিনিটে শুরু হবে। ২০২৩ সালের রাম নবমী এবং চৈত্র নবরাত্রি উদযাপন ৩০ মার্চ শেষ হবে। চলতি বছরে চৈত্র নবরাত্রি শুরু হচ্ছে ২২ মার্চ থেকে, আর তা শেষ হবে ৩১ মার্চ। বসন্ত নবরাত্রিতে দেবীর নয়টি ভিন্ন অবতারকে নয় দিন ধরে পুজো করা হয়।
'শ্রী বরাহপুরাণে' হরিহর ব্রহ্মা ঋষির দ্বারা রচিত, দেবী কবচে লেখা রয়েছে -
প্রথমং শৈলপুত্রী চ
দ্বিতীয়ম্ ব্রহ্মচারিণী ।
তৃতীয়ং চন্দ্রঘণ্টেতি কুষ্মাণ্ডেতি চতুর্থকম্ ।।
পঞ্চমং স্কন্দমাতেতি,
ষষ্ঠম্ কাত্যায়নীতি চ।
সপ্তমং কালরাত্রীতি মহাগৌরীতি চাষ্টমং।।
নবমং সিদ্ধিদাত্রী চ
নবদুর্গা প্রকীর্তিতাঃ ।।
নবরাত্রির (Navaratri) কোন দিনে কী পুজো—
প্রতিপদ তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা শৈলপুত্রীর পুজো - ২২ মার্চ, বুধবার
নবরাত্রির প্রথম দিনে মাতা শৈলপুত্রীর পুজো করা হয়। দেবীর নামের অর্থ "পাহাড়ের কন্যা"। তাঁর ভক্তদের বিশ্বাস-মাতা শৈলপুত্রীর আশীর্বাদ স্বরূপ সুস্থ, রোগমুক্ত জীবন পাওয়া যায়। মাতার নৈবেদ্যতে খাঁটি ঘি অর্পণ করা হয়। এই দেবীর আরাধনায় মূলাধার চক্র শুদ্ধ হয়।
দ্বিতীয়া তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা ব্রহ্মচারিণীর পুজো - ২৩ মার্চ, বৃহস্পতিবার
নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে এই দেবীর পুজো হয়। ব্রহ্মচারিণী মাতাকে খুশি করতে ভক্তরা চিনি নিবেদন করে থাকেন। বিশ্বাস মতে, মাতা তাঁর ভক্তদের দীর্ঘায়ু প্রদান করেন। এই দেবীর উপাসনার দ্বারা সাধিস্তান চক্র শুদ্ধ হয় হয় বলে ভক্তরা মনে করে।
তৃতীয়া তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা চন্দ্রঘণ্টার পুজো - ২৪ মার্চ, শুক্রবার
তৃতীয় দিনে মাতা চন্দ্রঘণ্টার প্রতি ভক্তি নিবেদন করা হয়। এই দেবীর বাহন বাঘ। উগ্র মূর্তি এই দেবীকে ক্ষীর ভোগ অর্পণ করেন ভক্তরা। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ করেন এবং যাবতীয় বাধা বিঘ্ন দূর করেন।
চতুর্থী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা কুষ্মাণ্ডার পুজো- ২৫ মার্চ, শনিবার
চতুর্থ দিনে মাতা কুষ্মান্ডার প্রতি ভক্তি নিবেদিত হয়। শাস্ত্র মতে, এই দেবী মহাবিশ্বের স্রষ্টা। তিনি তাঁর ভক্তদের জ্ঞানদানের দ্বারা বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটান এবং কর্মক্ষেত্রে জটিলতা দূর করেন। দেবীকে মালপোয়া ভোগ অর্পণ করা হয়।
পঞ্চমী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা স্কন্ধমাতার পুজো- ২৬ মার্চ, রবিবার
নবরাত্রির পঞ্চম দিনে মাতা স্কন্দমাতার আরাধনা করেন ভক্তরা। ভগবান কার্তিককে কোলে নিয়ে উপবিষ্ট এই দেবীর আশীর্বাদ পেতে ভক্তরা কলা নিবেদন করেন। দেবীর আশীর্বাদে ভক্তের জীবনে পরম সুখ ও শান্তি আসে বলে বিশ্বাস।
ষষ্ঠী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা কাত্যায়নীর পুজো- ২৭ মার্চ, সোমবার
ঋষি কাত্যায়নের কন্যা, শক্তির প্রতীক তথা যোদ্ধা দেবী কাত্যায়নী মাতার পুজো নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে সম্পন্ন হয়। ভক্তদের তিনি শক্তি, ধর্ম ও জাগতিক সুখ প্রদান করেন বলে বিশ্বাস। তাঁকে ভক্তদের মধু নিবেদনের রীতি চালু রয়েছে।
সপ্তমী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা কালরাত্রির পুজো- ২৮ মার্চ, মঙ্গলবার
সপ্তমী পুজো হয় এই দেবীর। দেবী ত্রিশূলধারী। মাতা কালরাত্রির আশীর্বাদে জীবনের সমস্ত কুপ্রভাব বিনষ্ট হয় বলে ভক্তদের ধারণা। মাতাকে গুড় নিবেদন করা হয়।
অষ্টমী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা মহাগৌরীর পুজো- ২৯ মার্চ, বুধবার
উজ্জ্বল সৌন্দর্যের প্রতীক এই দেবী অষ্টমীতে ভক্তদের দ্বারা আরাধিত হন। মাতা মহাগৌরীর একহাতে ত্রিশূল ও অপর হাতে ডমরু থাকে। তাঁর নৈবেদ্যতে নারকেল রাখার রীতি রয়েছে। বিশ্বাস রয়েছে, মাতার আশীর্বাদ স্বরূপ ভক্তদের ভালো বিবাহ হয়।
নবমী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা সিদ্ধিদাত্রীর পুজো- ৩০ মার্চ, বৃহস্পতিবার
নবরাত্রির (Navaratri) শেষদিনে পুজো হয় এই দেবীর। তিনি ভক্তদের জীবনে সমস্ত অশুভ প্রভাব বিনষ্ট করেন এবং সাফল্য আনেন বলে ভক্তদের ধারণা। মাতা সিদ্ধিদাত্রীকে ভক্তরা তিল নিবেদন করে থাকেন।
বাসন্তী পুজো কবে পড়ছে
এদিকে, এই নবরাত্রির (Navaratri) সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত সময়ে বাংলার বহু এলাকায় বাসন্তী পুজো পালিত হয়। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, এই বাসন্তী পুজোর তারিখ ও সময়কাল -
বাসন্তীপুজোর ষষ্ঠী তিথি শুরু হতে চলেছে ২৭ মার্চ। সোমবার এই মহাষষ্ঠী পড়ছে। আর সপ্তমীর পুজো মঙ্গলবার ২৮ মার্চ। অষ্টমীর পুজো ২৯ মার্চ, বাসন্তী পুজোর নবমী বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ, বাসন্তী বিজয়া দশমীপুজো ৩১ মার্চ শুক্রবার।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours