মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি পৃথ্বী-২ (Prithvi-2) ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে নৈশকালীন উৎক্ষেপণ করল ভারত (India)। বুধবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ ওড়িশার চাঁদিপুরের (Chandipur) এপিজে আব্দুল কালাম দ্বীপে (APJ Abdul Kalam Island) স্থিত ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জের (ITR) তিন নম্বর লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়।
উৎক্ষেপণের পুরোটাই দায়িত্ব নিয়ে করেছে বিশেষভাবে তৈরি 'স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স কম্যান্ড' (Strategic Forces Command)। এই উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণ করেছে 'ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন' (Defence Research and Development Organisation) বা ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীরা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, স্বল্প পাল্লার (Short range) এই ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (Ballistic Missile) পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। ২৫০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে সক্ষম এটি। পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র ৫০০ থেকে ১০০০ কিলোগ্রাম ওয়ারহেড (Warhead) বহন করতে সক্ষম। নিপুণ দক্ষতায় লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে এর জুড়ি নেই। এই পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্রে রয়েছে তরল জ্বালানি চালিত ২টি ইঞ্জিন।
উৎক্ষেপণের গোটা প্রক্রিয়াটি রাডার, ইলেক্ট্রো অপটিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেম ও টেলিমেট্রি স্টেশনের মারফৎ পর্যবেক্ষণ করেছে ডিআরডিও (DRDO)। এবারের পরীক্ষার মূল লক্ষ্য ছিল ক্ষেপণাস্ত্রের রাত্রিকালীন উৎক্ষেপণের বিভিন্ন খুঁটিনাটি যাচাই করা। পৃথ্বী-২ রাতেরবেলাও লক্ষ্যবস্তুর (target) উপর আঘাত হানতে পারে।
১০ দিন আগেই, ৬ জুন, ৪ হাজার কিলোমিটার পাল্লার পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল নৈশকালীন উৎক্ষেপণ করে ভারত। সেবারও উৎক্ষেপণ করা হয় এই চাঁদিপুরের এপিজে আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকেই। এবার সফল নৈশকালীন উৎক্ষেপণ হল পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্রের। এর আগে, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একইভাবে পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্রের নৈশকালীন উৎক্ষেপণ করেছিল ভারত। তার আগে ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর দুটি পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্র ওড়িশার চাঁদিপুর থেকেই উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণের ফলে ভারতীয়দের আয়ু কমবে ৫ বছর! দাবি গবেষণায়
২০০৪ সালে এই ক্ষেপণাস্ত্র সেনাবাহিনীর হাতে আসে। ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীরা এটি তৈরি করেছেন। ১৯৯৬ সাল থেকে এর উপর কাজ শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। পৃথ্বী-১ ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে সক্ষম ছিল। ২৫০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানতে সক্ষম পৃথ্বী-২। আর সবচেয়ে আধুনিক পৃথ্বী-৩ আনুমানিক ৩৫০ কিলোমিটার দূরত্বে আঘাত করতে পারে।
ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে (Missile Technology) দিন দিন উন্নতি করছে ভারত। স্বল্প থেকে মাঝারি এবং দূরপাল্লার একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হয়েছে ভারতের হাতে। যখনই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, প্রায় সবসময়ই প্রায় ১০০ শতাংশ সফল হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা। এদিনের সাফল্য ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তিকে আরও একধাপ এগিয়ে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
+ There are no comments
Add yours