দেশের সবচেয়ে দূষিত শহর দিল্লি। দূষণের জেরে সেখানে আয়ু কমতে পারে ১০.১ বছর। অন্য দিকে,বিশ্বে বায়ুদূষণের জেরে ৯৭.৩ শতাংশ নাগরিকের জীবনই ঝুঁকির মুখে।
বায়ুদূষণের কবলে শহরবাসীও।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বায়ুদূষণের জেরে দেশবাসীর প্রত্যাশিত আয়ু কমতে পারে প্রায় পাঁচ বছর। এমনই দাবি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের (Energy Policy Institute at the University of Chicago)এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সের (একিউএলআই) নবতম রিপোর্টে এই কথা বলা হয়েছে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে দূষিত শহর দিল্লি। দূষণের জেরে সেখানে আয়ু কমতে পারে ১০.১ বছর। অন্য দিকে,বিশ্বে বায়ুদূষণের জেরে ৯৭.৩ শতাংশ নাগরিকের জীবনই ঝুঁকির মুখে।
২০২০ সালে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে ওই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৬৩ শতাংশ ভারতীয় দেশের এমন অঞ্চলে বাস করেন, যেখানে বায়ুদূষণ জাতীয় মানের (প্রতি ঘনমিটারে ৪০ মাইক্রোগ্রাম)উপরে। তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বায়ুদূষিত দেশগুলির তালিকায় বাংলাদেশের (৭৫.৮ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার, নাগরিকদের আয়ু কমতে পারে ৬.৯ বছর) পরেই রয়েছে ভারত। দেশে বায়ুদূষণের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে সপ্তম স্থানে। এ রাজ্যে দূষণের পরিমাণ ৬৫.৪ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার। তার ফলে রাজ্যবাসীর আয়ু কমতে পারে ৫.৯ বছর।
আরও পড়ুন: ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস, জেনে নিন এই দিনের তাৎপর্য
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই রিপোর্ট বলছে, বিশ্বে বায়ুদূষণের জেরে মানুষের আয়ু কমতে পারে ২.২ বছর। অন্য দিকে ধূমপানে ১.৯ বছর, মদ্যপানে আট মাস, অসুরক্ষিত জলের মাধ্যমে সাত মাস, এইচআইভি ৪ মাস, ম্যালেরিয়া ৩ মাস এবং সন্ত্রাসের জেরে আয়ু কমতে পারে ৯ দিন। এই গবেষণা অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে পৃথিবীতে দূষণবৃদ্ধির হারের ৪৪ শতাংশের জন্য দায়ী ভারত। ২০১৩ সালে যেখানে প্রতি ঘনমিটারে ৫৩ মাইক্রোগ্রাম দূষণ ছিল, সেটাই বর্তমানে বেড়ে হয়েছে প্রতি ঘনমিটারে ৫৫.৭ মাইক্রোগ্রাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র বেঁধে দেওয়া সীমার (প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে যা ১১ গুণ বেশি! গত বছর দূষণ বিধির ক্ষেত্রে পরিবর্তন করেছিল হু। আগে বছরে প্রতি ঘনমিটারে ১০ মাইক্রোগ্রাম দূষণ সহনশীল হিসাবে বিবেচিত হত। তা কমিয়ে করা হয়েছে প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম। দূষণবৃদ্ধির কারণ হিসাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কলকারখানা বৃদ্ধি, গাছ কেটে শহরাঞ্চলের প্রসারকে দায়ী করা হয়েছে। প্রতিবছরই শীতকালে প্রায় ধোঁয়াশায় ঢেকে যায় রাজধানী দিল্লি। এ বিষয়ে বারবার সতর্ক হওয়ার কথা বলেছেন পরিবেশবিদরা।