img

Follow us on

Thursday, Nov 21, 2024

6A Of The Citizenship Act: নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট

Supreme Court: ১৯৭১-এর পরে অসমে আসা বাংলাদেশিদের ভারতীয় নাগরিকত্ব নয়, কেন্দ্রের যুক্তিকে মান্যতা দিল সুপ্রিম কোর্ট...

img

অসমে আসা বাংলাদেশিদের নিয়ে বড় রায় সুপ্রিম কোর্টের। ফাইল ছবি।

  2024-10-17 16:56:05

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারার (6A Of The Citizenship Act) সাংবিধানিক বৈধতা মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। বৃহস্পতিবার এই রায় দিল শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও এই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশ, বিচারপতি মনোজ মিশ্র এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা।

সাংবিধানিক বেঞ্চে দ্বিমত (6A Of The Citizenship Act)

প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়-সহ চার বিচারপতি এই ধারার সাংবিধানিক বৈধতা মেনে নিলেও, দ্বিমত পোষণ করেন সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি পারদিওয়ালা। ৬-এ ধারাকে তিনি ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দেন। এদিন রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, অসম চুক্তি মেনে অবৈধ অভিবাসনের সমস্যার এটি একটি রাজনৈতিক সমাধান। বেআইনি অনুপ্রবেশ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানসূত্র অসম চুক্তি। সেই চুক্তি সূত্রে নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারার যৌক্তিকতা রয়েছে বলে রায় আদালতের। স্থানীয় জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে ও ভারসাম্য বজায় রাখতে এমন ধারা তৈরি করার আইনি ক্ষমতা সংসদীয় ব্যবস্থার রয়েছে।

৬-এ ধারা

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকে ভিত্তি করে প্রয়োগ করা হয় ৬-এ ধারাটির। ওই দিনই শেষ হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ। তাই ওই ধারাটিকে বাংলাদেশ যুদ্ধের প্রেক্ষিতেই দেখতে হবে। সেই কারণে ওই তারিখটিকে ভিত্তি করে ধারাটির প্রয়োগ যথাযথ বলে অভিমত শীর্ষ আদালতের। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারির আগে যারা অসমে এসেছে, তাদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে ধরতে হবে। ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে যারা এসেছে, তারা অন্যান্য যোগ্যতা পূরণ করতে পারলে ভারতীয় নাগরিকত্ব চাইতে পারেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে আসা সবাইকেই বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে আটক করে ফেরত পাঠাতে হবে বাংলাদেশে।

আরও পড়ুন: যত নষ্টের গোড়া ট্রুডো! নিজ্জর খুনে কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে তুলোধনা ভারতের

অসমের জন্যই ৬-এ ধারা

কেবলমাত্র অসম রাজ্যের জন্যই নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারাটি তৈরি করা হয়েছিল। অসমে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পরে ১৯৮৫ সালে ভারত সরকার ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে হওয়া অসম চুক্তির অঙ্গ হিসেবে নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারা তৈরি করা হয়েছিল। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর যেসব বাংলাদেশি অসমে অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশে রূপান্তরিত হওয়ার পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে ঘোষণা করেছিলেন, ১৯৭১ এর পর দেশ ছেড়ে যাওয়া সবাইকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। সেই জন্যই ৬-এ ধারায় ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকে বেছে নেওয়া হয়েছে (Supreme Court)। কারণ (6A Of The Citizenship Act) বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ।

সুপ্রিম কোর্টে আবেদন

অসমে অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত ওই ধারা অসাংবিধানিক বলে দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে মোট ১৭টি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। সেগুলিই একত্রিত করে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শুরুতে। আবেদনকারীদের বক্তব্য, অসম চুক্তিকে ২৫৩ ধারার অধীনে বৈধতা দিতে কোনও পদক্ষেপ করেনি সংসদ। তাই অসম চুক্তিরই বৈধতা নেই। কিন্তু এদিন কেন্দ্রের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ সায় দিয়েছে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকে সময়সীমা ধার্য করার ব্যবস্থাকেই।

অসম চুক্তি

অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন শুরু হয় অসমে। আন্দোলনে ইতি টানতে ১৯৮৫ সালে হয় অসম চুক্তি। চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় আন্দোলনকারী ও ভারত সরকারের মধ্যে। এই অসম চুক্তিরই অঙ্গ হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারা। এই ধারা অনুযায়ীই ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত অসমে অনুপ্রবেশ করা বাংলাদেশিদের ভারতীয় নাগরিকত্বের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলাদেশের সঙ্গে অসমের সীমান্তের দৈর্ঘ্য অনেক বেশি। অন্যান্য সীমান্তবর্তী রাজ্যের তুলনায় অসমে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা স্থানীয় জনগণের চেয়ে বেশি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অসমে মোট জমির পরিমাণ পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে কম। তাই পশ্চিমবঙ্গে ৫৭ লাখ অনুপ্রবেশকারী থাকলেও, অসমে ৪০ লাখ অনুপ্রবেশকারীর জন্য ওই ধারার প্রয়োগ যথাযথ, অভিমত আদালতের।

আবেদনকারীদের অভিযোগ

প্রসঙ্গত, আবেদনকারীদের অভিযোগ, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারা ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করছে। ওই ধারা অনুযায়ী, অসমে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিকেই প্রমাণ করতে হয় তিনি ভারতীয় নাগরিক। ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় সাম্যের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এই ধারা অনুয়ায়ী, দেশি, বিদেশি কিংবা অ-নাগরিক হয়েও যদি কেউ ভারতে বাস করেন, তিনিও সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকার ভোগ করবেন। সুপ্রিম কোর্টের সাফ কথা, শরণার্থীদের আশ্রয়ের প্রসঙ্গ নয়, এ ক্ষেত্রে বিচার করা হয়েছে (Supreme Court) নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টির সাংবিধানিক বৈধতা (6A Of The Citizenship Act)।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

Bangladesh

Supreme court

SC

Citizenship Act

bangla news

Bengali news

Assam

news in Bengali      

6A Of The Citizenship Act

constitutional validity


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর