রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন লঙ্গরখানা খুলবেন শিখ গুরু!
এই মন্দিরেরই উদ্বোধনের হবে ২২ জানুয়ারি। ফাইল ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জানুয়ারির ২২ তারিখে উদ্বোধন হবে রাম মন্দিরের (Ram Mandir)। প্রত্যাশিতভাবেই এদিন কয়েক লক্ষ মানুষের ভিড় হবে অযোধ্যায়। মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে অযোধ্যায় আগত ভক্তদের জন্য লঙ্গরখানা খুলবেন সংখ্যালঘু শিখ সম্প্রদায়ের বাবা হরজিৎ সিং রাসুলপুর। তিনি নিহাঙ বাবা ফকির সিং খালসার ১৮তম বংশধর। ঘটনাটি ঘটছে ১৬৫ বছর পরে। ১৮৫৮ সালে তাঁর পূর্বপুরুষ অযোধ্যার বাবরি মসজিদের দখল নিয়েছিলেন। কীভাবে? ভগবান রামের জন্মভূমির ওপর মুঘলরা মসজিদ গড়েছিলেন। ১৬৫ বছর আগে সেই মসজিদের দেওয়ালে রাম নাম খোদাই করে দিয়েছিলেন তাঁরই এক পূর্বপুরুষ।
ভগবান রামের প্রতি তাঁর বংশের ভক্তি অটুট। রসুলপুর জানান, ১৮৫৮ সালে ফকির সিং ও তাঁর নিহাঙ সিং সঙ্গীরা মসজিদের দেওয়ালে রাম, রাম খোদাই করে দিয়েছিলেন। উড়িয়ে দিয়েছিলেন গেরুয়া ধ্বজা। ঘটনার (Ram Mandir) প্রেক্ষিতে নভেম্বরের ৩০ তারিখে আওয়াধ পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের আগেও তিনি জানিয়েছিলেন একথা। শিখ এবং হিন্দুদের মধ্যে বিরোধ কোনওদিনই চাইতেন না ফকির সিং। রসুলপুরের দাবি, তাঁদের পরিবারের বরাবর সমান বিশ্বাস শিখ ও হিন্দু ধর্মের প্রতি। তিনি জানান, রাম মন্দিরের দাবিতে প্রথম যে এফআইআর দায়ের হয়েছিল, তা কোনও হিন্দুর বিরুদ্ধে নয়, এক শিখের বিরুদ্ধে।
কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন রসুলপুর। তিনি জানান, একই সঙ্গে নিহাঙ ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখায় তাঁর ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। শিখ হয়েও রুদ্রাক্ষ ধারণ করেন রসুলপুর। একই শরীরে বহন করেন শিখ ও হিন্দুধর্মের প্রতীক। এই মানুষটিই মন্দির উদ্বোধনের দিন অযোধ্যায় খুলবেন লঙ্গরখানা। শিখধর্মে লঙ্গরখানার চল রয়েছে। এই লঙ্গরখানার অর্থ হল নিখরচায় আগত অতিথিদের খাওয়ানো। সাম্প্রদায়িক ঐক্য ও নিঃস্বার্থ সেবার প্রতীক এই লঙ্গরখানা। রসুলপুর জানেন, মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বহু মানুষ আসবেন ঐতিহাসিক এই ঘটনার সাক্ষী হতে। লঙ্গরখানায় তাঁদের খাইয়ে তাঁদের মধ্যে সম্প্রতি ও নিঃস্বার্থ সেবার বার্তাই দিতে চান রসুলপুর।
আরও পড়ুন: ধনখড়কে মিমিক্রি-বাণ কল্যাণের, কী বললেন প্রধানমন্ত্রী?
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা যখন মন্দির (Ram Mandir) উদ্বোধনের শেষ প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত, তখন রসুলপুর দিন গুনছেন কবে আসবে বহু প্রতীক্ষিত সেই দিন। যেদিন তাঁর লঙ্গরখানায় সেবা করিয়ে তামাম ভারতকে রসুলপুর মনে করিয়ে দেবেন বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের সুমহান বাণী।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।