Parliament: ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে বাংলায় অনুপ্রবেশকে স্বাগত জানাচ্ছে তৃণমূল! সংসদে দাবি বিজেপির
বাংলাদেশ প্রশ্নে সরগরম লোকসভা, রাজ্যসভা। সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ ইস্যুতে (Bangladesh Issue) সংসদে তৃণমূলকে ধুয়ে দিলেন বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য, জগন্নাথ সরকার। রাজ্য সরকারের প্রচ্ছন্ন মদতে ‘বাংলায় ঢুকে আমাদের জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট করছে বাংলাদেশিরা’ এমনই মন্তব্য করলেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ। বাংলাদেশে পট পরিবর্তনের পর প্রতিদিনই সেখানে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন হিন্দুরা। মঙ্গলবার সাংসদে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনার সময়ই রাজ্যে অনুপ্রবেশের কথা তুলে মমতা সরকারের বিপক্ষে গর্জে ওঠেন বিজেপি সাংসদরা। ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে বাংলায় অনুপ্রবেশকে স্বাগত জানাচ্ছে তৃণমূল, এমনই অভিমত ব্যক্ত করেন বিজেপি-র শমীক ভট্টাচার্য।
রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের প্রশ্ন, “বাঙালি হিন্দু হওয়া কি অপরাধ?” তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বেছে বেছে হিন্দুদের নির্যাতিত হতে হচ্ছে। মন্দির ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, আর্থিক তছরুপ হচ্ছে, রাতের বেলা ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে ইসলামে। কাঁটাতারের বেড়া মধ্যে অত্যাচারিত হতে হচ্ছে। এপারে এসেও শান্তি নেই। দিনের পর দিন অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে আমাদের জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে। সরকারি মদতেই হচ্ছে। তছনছ হচ্ছে সরকারি সম্পদ। ভাঙা হচ্ছে মন্দির। বেলডাঙা, হাওড়া, উলুবেড়িয়ার মতো জায়গায় সরকারি মদতে দাঙ্গা ছড়াচ্ছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “এগুলি হচ্ছে সরকারি মদতে। রাজ্য সরকার মদত দিচ্ছে হাওড়া উলুবেড়িয়ায় সন্ত্রাস হতে।” জগন্নাথ সরকারের বক্তব্য, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা আসছে বলেই মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। হুগলি, হাওড়া, নদিয়ার কিছু অংশেও একই সমস্যা। অনুপ্রবেশ ইস্যুতে প্রথম থেকেই বাংলার শাসকদল কেন্দ্রীয় সরকার, অর্থাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও বিএসএফ-কেই দায়ী করে এসেছে। এক্ষেত্রেও তারা বল ঠেলেছে মোদি সরকারের দিকেই। এদিন লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বাংলাদেশে শান্তি বাহিনী পাঠানোর আবেদন করুক কেন্দ্র।”
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, রাজ্যে অনুপ্রবেশের প্রশ্নে মঙ্গলবারও রাজ্যসভায় মমতা সরকারের দিকে আঙুল তোলেন বিজেপি-র শমীক ভট্টাচার্য। রোহিঙ্গারা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের বাইরে ভিড় জমিয়েছে, অথচ রাজ্যের সরকার কিছু করছে না বলে দাবি করেন তিনি। শমীক বলেন, ‘‘সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, ভারত সরকারের পরমাণু বিভাগের অধীনে রয়েছে। এর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ওই কেন্দ্র হাই সিকিওরিটি জোন বলে বিবেচিত হয়। অথচ উত্তরের দেওয়ালের বাইরে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা এসে ভিড় জমিয়েছেন। সব বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা এমন এক রাজ্যে রয়েছি, যেখানে অনুপ্রবেশকারীদের স্বাগত জানানো হয়। দুই হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানাই। পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের বাইরে রোহিঙ্গারা বসে থাকলে, আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি, তা নিয়ে ভাবনার অবকাশ রয়েছে। পুলিশের কাছে চার চার বার গেলেও সে নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। রাজ্যের সরকারের জন্যই আজ এমন পরিস্থিতি রাজ্যের সরকার অনুপ্রবেশে অনুপ্রেরণা জোগায়। বাংলাদেশের কথা পরে হবে। প্রতিদিন যে অনুপ্রবেশকারীরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ছে, দেশের জাতীয় নিরাপত্তা যে প্রশ্নের মুখে, তার জন্য দায়ী রাজ্য সরকার।’’ ভোটবাক্স ধরে রাখতে রাজ্যের সরকার অনুপ্রবেশকারীদের মদত দিচ্ছে বলেও দাবি করেন শমীক।
পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সাথে সাথে দেশের গণতন্ত্রকেও পঙ্গু করতে চাইছে মমতা ব্যানার্জীর সরকার। কলকাতার বুকে সাহা ইনস্টিটিউটের পাশে যেভাবে রোহিঙ্গারা দখল নিয়েছে তা অত্যন্ত আতঙ্কের।
— BJP West Bengal (@BJP4Bengal) December 3, 2024
শ্রী @SamikBJP , রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিজেপির মুখপাত্র pic.twitter.com/8Oe4HzllQv
প্রসঙ্গত, এর আগেও বাংলাদেশ (Bangladesh Issue) থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ নিয়ে বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের সরকারকে নিশানা করেছিল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে ঢুকে পড়া চাইলেই আটকে দিতে পারে পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড সরকার। স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের প্রশ্রয়েই অনুপ্রবেশ বেড়ে চলেছে। শাহের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ এখনও বন্ধ হয়নি। কারণ, স্থানীয় প্রশাসনই সেখানে অনুপ্রবেশকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। ঝাড়খণ্ডেও অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি একই কারণে। স্থানীয় প্রশাসন প্রশ্রয় দিচ্ছে। বিএসএফ তো সব জায়গায় আছে। অসমেও আছে, বাংলা এবং ঝাড়খণ্ডেও আছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্তে কোথাও নদীনালা রয়েছে, কোথাও পাহাড় রয়েছে। সর্বত্র সুরক্ষা সম্ভব নয়। রাজ্যের ভূমিরাজস্ব দফতর, অনুপ্রবেশের সময় কী করে? জেলাশাসকেরাই বা কী করছেন? পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হচ্ছে না কেন? কেন্দ্রীয় সরকারকে কেন জানানো হচ্ছে না?’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।