Sir Creek: স্যর ক্রিকে অবজার্ভেশন পোস্ট তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২২ সালের শেষ দিকে ৫০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে।
স্যর ক্রিক
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বিবাদের কথা উঠলেই সবার প্রথমে সামনে আসে সীমান্ত নিয়ে সংঘাতের কথা। এমনই ভারতের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত গুজরাটের স্যর ক্রিক নিয়েও ভারত-পাকিস্তানের বিবাদ জারি। এবারে সেই জায়গায় ভারতের বিওপি তৈরি করা নিয়েই আপত্তি জানিয়েছে পাকিস্তান। তাদের দাবি, ভারত পাকিস্তানের জায়গাতে বিওপি বা বর্ডার আউট পোস্ট বানানোর কাজ শুরু করেছে। তবে ভারতও তাদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, বিএসএফ ভারতের আয়ত্তে থাকা জায়গাতেই তিনটি বর্ডার অফ পোস্ট বানাচ্ছে।
সূত্রের খবর, গত মাসে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) সঙ্গে স্থানীয় কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই বিওপি নির্মাণ নিয়ে আপত্তি জানায় পাকিস্তান। ভারতীয় এক সেনা আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, “যেখানে বিওপি তৈরি করা হচ্ছে সেই এলাকায় ভারতীয় বাহিনী নজরদারি চালায়। কিন্তু পাকিস্তান দাবি করছে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ১ কিমি দূরে এসে ভারত নির্মাণ কাজ করছে। তার জন্য তাদের কাছে প্রমাণও রয়েছে।” যদিও তা অসত্য বলে জানিয়েছেন ওই সেনা আধিকারিক। তাঁর মতে ভারত নিজেদের ভূখন্ডেই বিওপি নির্মাণ করছে।
আরও পড়ুন: ‘বিজেপির কিছু লুকোনোর নেই, ভয় পাওয়ারও নেই’, আদানিকাণ্ডে বললেন শাহ
২০২২ সালের শেষের দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্যর ক্রিকে আটটি বহুতল বাঙ্কার তথা অবজার্ভেশন পোস্ট তৈরির জন্য ৫০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। লাখপত ওয়ারি বেট, ডাফা বেট এবং সমুদ্র বেট— এই তিনটি বিওপি তৈরির জন্যই এই টাকা দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় পাকিস্তানি জেলে ও মাছ ধরার নৌকার ক্রমাগত অনুপ্রবেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিওপি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিএসএফদের যাতে ওই সীমান্ত এলাকায় নজরদারি চালাতে আরও কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্যই এটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
ভারত এই বিওপিগুলি নির্মাণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কারণ এই বিওপি বিএসএফকে স্যর ক্রিক এবং 'হারামি নালা' জলাভূমিতে আন্তর্জাতিক সীমান্তে অবস্থান করার কৌশলগত সুবিধা দেবে। সরকারী তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে গুজরাটের এই অঞ্চল থেকে বিএসএফ ২২ জন পাকিস্তানি জেলে, ৭৯ টি মাছ ধরার নৌকা এবং ২৫০ কোটি টাকার হেরোইন জব্দ করেছিল। ফলে পাকিস্তানিদের অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের।
এক একটি বাঙ্কারের উচ্চতা হবে প্রায় ৪২ ফুট। ওই বাঙ্কারগুলিতে র্যাডার থেকে শুরু করে নজরদারির সমস্ত অত্যাধুনিক সরঞ্জাম থাকবে। একসঙ্গে ১৫ জন সেনাকর্মী থাকতে পারবেন এক একটি তলায়। তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসও রাখা যাবে সেখানে।
পাকিস্তানরা যেই বিওপি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে, সেটি হল সমুদ্র বেট। পাকিস্তান ‘সমুদ্র বেট’-এর নির্মাণকাজকে তারা ‘মৌর্য বেট’ বলে অভিহিত করছে ও দাবি করছে, ওই এলাকা নিজেদের আয়ত্তে রয়েছে।
এক সেনা আধিকারিক জানান, পুরোদমে নির্মাণকাজ চলছে। কেন্দ্রীয় পূর্ত মন্ত্রক ওই বিওপিগুলি তৈরির কাজ করছে। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (বিআরও) বিওপিগুলিতে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই রাস্তা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছে। বিএসফকে সবটাই জানানো হয়েছে। কারণ, পাকিস্তানের বিওপি নিয়ে আপত্তি-প্রতিবাদ, এই বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে গোটা ঘটনার কথা বিএসফকে জানিয়ে রাখা হয়েছে।