Hindu Bashing: কংগ্রেস কেন বারংবার হিন্দু বিরোধিতা করে জানেন?...
জমানা বদলালেও, কংগ্রেসের হিন্দু বিরোধী অবস্থান বদলায়নি! ফাইল ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দুদের নিয়ে সম্প্রতি পার্লামেন্টে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেসের (Congress) প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছিলেন, “হিন্দুরা কেবল হিংসার কথা বলেন, বলেন ঘৃণার কথা, মিথ্যেও বলেন।” ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাহুল হিন্দুদের নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা নতুন কিছু নয়, বরং এটা কংগ্রেসের ঐতিহ্যের সঙ্গেই সম্পৃক্ত। রাহুলের এহেন মন্তব্যে নিঃসন্দেহে আঘাত পেয়েছেন এ দেশের সংখ্যাগুরু হিন্দুরা (Hindu Bashing)।
তবে তাতে রাহুল কিংবা কংগ্রেস, কারও কিস্যু যায় আসে না! রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তুষ্টিকরণের রাজনীতি করতে অভ্যস্ত কংগ্রেসের কাছে এই জাতীয় মন্তব্যই কাঙ্খিত। এর আগেও রাহুলকে হিন্দু ধর্ম নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, তিনি শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছেন। ‘শক্তি’ বলতে হিন্দু ধর্মে আদ্যাশক্তিকে বোঝায়। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কংগ্রেসের জন্ম ব্রিটিশদের হাতে, আর বর্তমানে তাকে চালনা করছেন ইটালিয়ানরা। তাই তাঁরা যে হিন্দু-বিরোধী হবেন, তাতে আর আশ্চর্যের কী আছে? এ প্রসঙ্গে (Congress) পণ্ডিত জওহর লাল নেহরুর মন্তব্যটি প্রনিধানযোগ্য। ১৯২৯ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত লাহোর কংগ্রেসে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি হিন্দু হয়ে জন্মেছিলাম। কিন্তু আমি জানি না, আমার নিজেকে কতটা হিন্দু বলে দাবি করা ঠিক হবে।”
বিধর্মীদের হাতে ধ্বংস হয়েছিল সোমনাথ মন্দির। সেই মন্দির পুনর্গঠন করতে যখন রাজেন্দ্রপ্রসাদ, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, কেএম মুন্সি, এনভি গ্যাডগিলের মতো নেতারা জোট বাঁধছেন, তখন তার বিরোধিতা করেছিলেন নেহরু স্বয়ং। এই মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বাবু রাজেন্দ্র প্রসাদ। তাঁকে যেতে নিষেধ করেছিলেন নেহরু। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই সোমনাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। কংগ্রেসের সেই ‘মেকি ধর্মনিরপেক্ষতা’র মুখোশ আমরা দেখলাম এই ২০২৪ সালেও। ২২ জানুয়ারি উদ্বোধন হয় অযোধ্যার রাম মন্দিরের। এই অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ পেয়ে যাননি কংগ্রেসের কেউ। অথচ এসেছিলেন দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিরা।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহেরু। তিনি প্রথমবার নির্বাচিত হন ১৯৫২ সালে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তার পরের লোকসভা নির্বাচনেও। যদিও ১৯৫৮ সালেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এর অন্যতম প্রধান কারণ হিন্দুত্ব নিয়ে তাঁর দ্বিচারিতা। তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম দফায়ই তিনি বিরোধিতা করেছিলেন প্রো-হিন্দু নেতাদের (Congress)। পাকিস্তানে থেকে যাওয়া হিন্দুদের কী হবে, সে প্রশ্ন তুলেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি এবং কংগ্রেসের অন্য প্রো-হিন্দু নেতারা। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন ১৯৫০ সালের নেহেরু-লিয়াকত দিল্লি চুক্তি নিয়েও। এই চুক্তিতেই বলা ছিল, দুই দেশই তাদের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করবে। পাকিস্তানের মতো একটি ইসলামিক রাষ্ট্রে যা অকল্পনীয় বলেই ধারণা হিন্দুত্ববাদী নেতাদের সিংহভাগেরই। ১৯৫০ সালে অকালে প্রয়াত হন শ্যামাপ্রসাদ। বস্তুত তার পরেই খোলা মাঠ পেয়ে যান নেহরু। এই হিন্দুত্ব নিয়ে নেহরুর সঙ্গে মতদ্বৈততার কারণে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ। নেহরুর হিন্দু কোড বিলের প্রবল বিরোধিতা করেছিলেন প্রো-হিন্দু নেতারা।
পার্লামেন্টে তো নেহরুকে ‘সাম্প্রদায়িক’ বলে দেগে দিয়েছিলেন জেবি কৃপালনী। সংবিধান রচয়িতা আম্বেডকর বলেছিলেন, যে দেশে যে ধর্মের প্রধান্য সেই ধর্মের লোকজন চলে যান সেই দেশে। এটাই স্থায়ী সমাধান। (সেই সূত্রে মেনেই বোধহয়) গিয়েছিলেন পূর্ব ভারতের দলিত নেতা যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল। পাকিস্তানে গিয়ে মন্ত্রীও হয়েছিলেন। তবে তিক্ত অভিজ্ঞতার জেরে আবারও ফিরে আসেন ভারতে। আম্বেডকর এবং মুখার্জি দুজনেই খোলাখুলি নেহরুর হিন্দু-বিরোধী অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। যার জেরে ১৯৫৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন ইন্দিরা গান্ধীর বাবা জওহর লাল। রাজনীতিকদের একাংশের মতে, মেকি-ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে নেহরু আসলে চিরকাল করে গিয়েছেন তুষ্টিকরণের রাজনীতি। নেহরু সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে সীতারাম গোয়েল বলেছিলেন, “পণ্ডিত জওহর লাল নেহরু একজন গর্বিত বাদামি সাহেব। নেহরুর ফর্মুলা হল, প্রতিটি পরিস্থিতিতে হিন্দুদের দোষী করা উচিত, সে তাঁরা প্রকৃত দোষী হোন বা না হোন।”
আর পড়ুন: দুর্গাপুজোর প্রচলন এখানেই! বাংলাদেশের মেধস মুনির আশ্রমের জমি দখলের অভিযোগ
নেহরুর সেই ধারা আজও বহমান কংগ্রেসে। তুষ্টিকরণের রাজনীতি করতে গিয়ে দিনের পর দিন তারা দোষারোপ করে চলেছে হিন্দুদের। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল সংসদে রাহুল গান্ধীর হিন্দু বিরোধী মন্তব্য। রাহুলের আগে প্রো-মুসলিম মন্তব্য করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও। তিনি বলেছিলেন, “এই দেশের সম্পদের ওপর সবার আগে অধিকার মুসলমানদের।” মৃত্যুর আগে বোধহয় চৈতন্যোদয় হয়েছিল (Hindu Bashing) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নেহরুর। ১৯৬৩ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন আরএসএসের স্বয়ংসেবকদের। যে জনসংঘকে ১৯৪৮ সালে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন নেহরু, সেই জনসংঘকেই ১৯৬২ সালে ভারত-চিন যুদ্ধের পর নেহরু বলেছিলেন, “জনসংঘ দেশপ্রেমিক একটি দল।”
একেই বোধহয় বলে বিলম্বিত বোধদয় (Congress)!
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।