Deep State: গ্লোবাল গভর্ন্যান্সের মেকানিজমের আড়ালে রয়েছে গোপন ক্ষমতার নেটওয়ার্ক, উচ্চাকাঙ্ক্ষা?...
মনমোহন সিং। সত্যিই কি অর্থনৈতিক ত্রাতা? সংগৃহীত ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গ্লোবাল গভর্ন্যান্সের মেকানিজমের আড়ালে রয়েছে একটি গোপন ক্ষমতার নেটওয়ার্ক, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং প্রভাবশালী কার্যকলাপ (Bharats Shadowed Role)। ডিপ স্টেট (Deep State) নামে পরিচিত এই শব্দটি, অতি বৃহৎ সংস্থা, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং নীতিনির্ধারকদের লুকোনো যোগসূত্রকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। এরাই দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ব ঘটনাপ্রবাহের গতিপথ পরিচালনা করেছে।
ক্লাব অব রোম (CoR), ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (WEF) এবং তাদের সমর্থকরা কীভাবে নির্ধারিত অ্যাজেন্ডার মাধ্যমে মানবতাকে পুনর্গঠন করতে কাজ করছে, তা জানা যায় তাদের ভূমিকা দেখলে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নীরব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তিনিই এই গ্লোবালিস্ট ভিশনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন।ভারতের এই শ্যাডো রোলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় ১৯৬৮ সালের ২৬ এপ্রিল কানাডায়, ১৭তম বিল্ডারবার্গ বৈঠকের সময়। এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে "ডিপ স্টেট"-এর নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার অ্যাজেন্ডাকে ত্বরান্বিত করা হবে। এটি একটি একক বিশ্ব সরকারের কল্পনা করেছিল। ডেভিড রকফেলারের নির্দেশে ইতালীতে প্রতিষ্ঠিত হয় ক্লাব অব রোম (CoR)। এটি একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, যা এই লক্ষ্যে নীতিমালা প্রস্তুতের জন্য দায়ী। রকফেলার ফাউন্ডেশন উদারভাবে এই প্রচেষ্টাকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: গুরদাসপুর গ্রেনেড হামলার নেপথ্যে খলিস্তানপন্থী নেতা জগজিৎ সিং! আইএস যোগ সন্দেহ
১৯৭২ সালে ক্লাব অব রোম (CoR) তাদের যুগান্তকারী প্রতিবেদন, দ্য লিমিটস টু গ্রোথ প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন বিশ্ব জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের একটি ভীতিকর ধারণা প্রবর্তন করে, যেখানে কঠোর গ্লোবাল গভর্ন্যান্সের অধীনে ১-২ বিলিয়ন জনসংখ্যার একটি লক্ষ্য প্রস্তাব করা হয়। এই নথি জনসংখ্যা হ্রাস, বন্ধ্যত্ব প্রচার এবং ভীতিপ্রদর্শনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ নীতির ভিত্তি হয়ে ওঠে। ক্লাব অব রোমের সুপারিশ দ্রুত গ্লোবাল গভর্ন্যান্সের মধ্যে প্রবেশ করে। পৃথিবী একের পর এক এমন ঘটনাবলীর সাক্ষী হয়, যা এই লক্ষ্যগুলির সঙ্গে অদ্ভুতভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই ঘটনাগুলি হল, ১৯৭৩ সালে আরব-ইজরায়েল যুদ্ধ, ১৯৭৫-৭৭ সালে ইন্দিরা গান্ধীর অধীনে ভারতে কুখ্যাত নির্বীজকরণ অভিযান, ১৯৭৯ সালে এইডস মহামারীর আবির্ভাব, ক্যান্সার ও জীবাণুমুক্তকরণের ওষুধ আবিষ্কার ইত্যাদি (Bharats Shadowed Role)।
এই সময়ে ভারতের অর্থনৈতিক নীতিগুলি প্রধানত মনমোহন সিংয়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। তিনি তখন প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। ক্লাব অফ রোম কৌশল নির্ধারণ করেছিল। আর হেনরি কিসিঞ্জারের পরামর্শে ক্লাউস শোয়াব এটি বাস্তবায়িত করেছিলেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) মাধ্যমে। শোয়াব ১৯৭১ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে এমন একটি প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত হয় যা ডিপ স্টেটের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নেতাদের এক সারিতে ফেলে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বৈশ্বিক বাস্তবায়নের মুখ হয়ে ওঠে, আর ক্লাব অফ রোম পর্দার আড়াল থেকে পরিচালনা করতে থাকে। তারা একসঙ্গে যে কাজগুলি করেছিল সেগুলি হল, দুর্বল অর্থনীতিগুলিতে উদারীকরণ, বেসরকারিকরণ এবং বিশ্বায়ন কার্যকর করা, রাষ্ট্রসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মাধ্যমে জননীতিগুলিকে আকার দেওয়া, যার সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
মনমোহন সিং ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণের স্থপতি হিসেবে পরিচিত। ক্লাব অফ রোমের (CoR) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এই বৈশ্বিক অ্যাজেন্ডার প্রতি একটি লুকানো আনুগত্য প্রকাশ করে। ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতরে ছিলেন মনমোহন সিং। তিনি ছিলেন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, অর্থমন্ত্রকের সেক্রেটারি, ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর, প্ল্যানিং কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান। পরবর্তীকালে তিনিই হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী (Bharats Shadowed Role)। ১৯৯১ সালে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয় ভারতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যাপক সংস্কার হয়। এই সংস্কারগুলি বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়, বরং এটি ডিপ স্টেট দ্বারা পরিচালিত একটি বৈশ্বিক পরিকল্পনার অংশ। একই সময়ে বিভিন্ন দেশে উদারীকরণ নীতিগুলির গ্রহণযোগ্যতা এই ঘটনাগুলির পেছনের সুপরিকল্পিত নকশাকে (Deep State) প্রমাণ করে।
মনমোহন সিংকে অর্থনৈতিক ত্রাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু আসলে কি তাই? তিনি বহিরাগত শক্তির দ্বারা নির্ধারিত একটি অ্যাজেন্ডা কার্যকর করছিলেন মাত্র। ২০০৪ সালে তাঁর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উত্থান ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের প্রভাবকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। ঘটনাগুলি যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, তা আমাদের ২০৩০ এর অ্যাজেন্ডার দিকে নিয়ে যায়, যেখানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাইছে ডিপ স্টেট (Deep State)। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আখ্যান থেকে ডিজিটাল আইডি পর্যন্ত, CoR এবং WEF এমন একটি ভবিষ্যৎ তৈরি করছে, যেখানে ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে বৃহৎ পুঁজির শাসনের অধীন করা হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।