Scam: ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ স্ক্যাম কীভাবে প্রতারণা করে?
ডিজিটাল গ্রেফতার জালিয়াতির সংখ্যা দেশে বাড়ছে (প্রতীকী ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশে সাইবার ক্রাইমের ঘটনা বাড়ছে। বিশেষ করে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর (Digital Arrest) মাধ্যমে প্রতারণা করার প্রবণতা বাড়ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে প্রতারকরা সব কিছু পরিচালনা করে। নানা কৌশল প্রয়োগ করে কোটি কোটি টাকা সাধারণ মানুষের আত্মসাৎ করে নেয় প্রতারকরা। অনেক সময় সারা জীবনের উপার্জনের সমস্ত অর্থ হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা।
বিদেশে বসে প্রতারকরা একের পর এক প্রতারণা করে চলেছে। পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে যে ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসে, ভারত সাইবার জালিয়াতি করে ১,৭৭৭ কোটি টাকা প্রতারকরা হাতিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ শতাংশ প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে মায়নমার, লাওস এবং কম্বোডিয়ায়। আর সাইবার ক্রাইমের মধ্যে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ (Digital Arrest) প্রতারকদের অন্যতম হাতিয়ার। আর এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ১২০ কোটি টাকা হাতিয়েছে প্রতারকরা।
আরও পড়ুন: দ্রুত নামবে পারদ! মাঝ-ডিসেম্বর থেকেই শীতের ঝোড়ো ব্যাটিং, বলছে পূর্বাভাস
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ (Digital Arrest) আসলে একটা টার্ম। এতে সাইবার জালিয়াতরা অন্য একজনকে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে তাঁর বাড়িতে বন্দি করে রাখে। এতে সাইবার প্রতারকরা ভিডিও কল করে। প্রতারকরা নিজের চারপাশের ব্যাকগ্রাউন্ডকে হুবহু থানার মতো করে নেয়। অথবা এটিকে কোনও এজেন্সির অফিসের মতো করে নেয়। এই সব দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। এরপর ওই ব্যক্তি ভয় পেয়ে প্রতারণাচক্রের জালে জড়িয়ে পড়েন। এর পরে এই সাইবার জালিয়াতিরা আপনাকে প্রতারণা করতে শুরু করে। আপনার থেকে নানা ভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্যে আসা সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং উদ্বেগজনক কেলেঙ্কারিগুলির মধ্যে একটি হল এই ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’।
সাধারণত, এই কেলেঙ্কারি (Digital Arrest) শুরু হয় পুলিশ, সিবিআই বা অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি- সহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে জাহির করা একজনের কাছ থেকে একটি অযাচিত ফোন কল বা ভিডিও কলের মাধ্যমে। এসব প্রতারক তাদের 'টার্গেট' ব্যক্তিকে নানা কৌশল অবলম্বন করে ভয় দেখাতে শুরু করে। প্রতারকরা মিথ্যাভাবে দাবি করে যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি আর্থিক জালিয়াতি, মাদক পাচার বা অর্থ পাচারের মতো উল্লেখযোগ্য অপরাধ করেছে। প্রতারিত হওয়া ব্যক্তি তাদের কথা না মানলে, প্রতারকরা (Scam) তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে তাড়াহুড়ো করতে শুরু করে। প্রতারকদের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হল প্রতারিতদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। স্ক্যামাররা প্রায়ই নিরাপত্তার জন্য দ্রুত টাকা দিতে বলে। প্রতারকরা তাদের প্রতারিত হওয়া ব্যক্তির মানসিক অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে, তাঁকে ভয় দেখিয়ে পরিবারের সদস্যদের সম্মানহানির আশঙ্কার কথা বলে তাঁদের আরও দুর্বল করে তোলে। বিনিময়ে বহু টাকা দাবি করে।
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ (Digital Arrest) জালিয়াতির কারণে হারানো অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ এই প্রতারণার শিকার হলে তাঁকে অবিলম্বে ১৯৩০ নম্বরে কল করে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থানীয় থানায় একটি এফআইআর দায়ের করার কথা বলা হচ্ছে। একইসঙ্গে আদালতে পিটিশন করতে বলা হচ্ছে। অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পুলিশকে দিন। একইসঙ্গে আপনার আইনজীবীকে অবশ্যই পুলিশ রিপোর্ট এবং আপনার ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টগুলি প্রমাণ হিসেবে দিন। আদালত একবার দাবিটি যাচাই করলে, তারা ব্যাংকগুলিকে প্রতারকদের ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্টে থাকা আপনার অর্থ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে। তবে, আপনাকে রিফান্ডের পরিমাণের সমান একটি জামিন (সিওরটি) প্রদান করতে হবে, যা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালতে থাকবে। আর আপনি প্রয়োজনীয় জামিন প্রদান করতে ব্যর্থ হলে, আপনি তহবিল পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবেন না। প্রতারকরা যখন বিভিন্ন প্রতারিতদের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে একই অ্যাকাউন্টে রাখে, তখন ব্যাঙ্কগুলি আদালতের আদেশের ক্রম অনুসারে তহবিল ছেড়ে দেয়। আদালতের নির্দেশের মাধ্যমে প্রতারিতরা তাদের অর্থ পুনরুদ্ধার করতে পারে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।