Khalistan: সমাজমাধ্যমের পাতায় গণভোটের দাবি, খালিস্তানপন্থীদের এমন ১০ হাজার ৫০০ ইউআরএল ব্লক করল কেন্দ্র
ডিজিটাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ মোদি সরকারের। ছবি— প্রতীকী।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিজেদের প্রচার চালাতে সমাজ মাধ্যম এখন বড় ভরসা হয়ে উঠেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসবাদীদের (Digital Terrorism)। সমাজ মাধ্যমেই প্রচার চালিয়ে আর্থিক ফান্ডিংও জোগাড় করে সন্ত্রাসবাদীরা। এবার সেই ডিজিটাল সন্ত্রাসেই বড় আঘাত হানল মোদি সরকার। খালিস্থানপন্থীরা (Khalistan) সমাজ মাধ্যমকে ব্যবহার করে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ চালায়, জাতি দাঙ্গায় উসকানি দেয়, এমন অভিযোগ অনেকদিনের। এর পাশাপাশি ইদানিং খালিস্তানের দাবিতে গণভোটেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছিল সমাজ মাধ্যমে। তবে খালিস্তানপন্থীদের এমন অপচেষ্টা রুখে দিয়েছে মোদি সরকার। তথ্য বলছে, গত তিন বছরে এরকমই ১০ হাজার ৫০০ খালিস্তানপন্থী ইউআরএল ব্লক করতে সমর্থ হয়েছে মোদি সরকার।
জানা গিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি আইন-২০০০-এর ৬৯ (এ) ধারা অনুযায়ী এমন পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পদক্ষেপ জাতীয় অখণ্ডতাকে রক্ষা করা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী মতাদর্শের প্রচার বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এর মাধ্যমে আরও একটি বিষয় সামনে আসছে যে মোদি জমানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হয়েছে দেশে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তির মন্ত্রক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানেই এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তথ্য উঠে এসেছে, গত তিন বছরে ১০,৫০০ খালিস্তানপন্থী ইউআরএল ব্লক (Digital Terrorism) করতে সমর্থ হয়েছে মোদি সরকার।
ইতিমধ্যেই তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক থেকে একটি প্রেস বিবৃতি সামনে এসেছে। সেখানে তারা বলছে, ‘‘খালিস্তানের (Khalistan) দাবিতে গণভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছিল এমন দশ হাজার পাঁচশো ইউআরএল ব্লক করা হয়েছে। গণভোটের প্রচার করার জন্য অনেক মোবাইল অ্যাপও চালু করেছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা, সেগুলির অধিকাংশই ব্লক করা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশেই এমন কাজ করা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র খালিস্তানপন্থীদেরই নয়, একইসঙ্গে ২০২২ সালে নিষিদ্ধ হওয়া কেরলের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার ২,১০০টি ইউআরএল ব্লক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে দক্ষিণ ভারতের জঙ্গি সংগঠন বলে পরিচিত এলটিটিই আবার জম্মু-কাশ্মীরের জঙ্গি সংগঠনগুলি, পাঞ্জাবের ওয়ারিস পাঞ্জাব ডি, প্রভৃতি সংগঠনের অজস্র অ্যাকাউন্টগুলিকে ব্লক করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যে তথ্য দিয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভারতবর্ষে সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ চালায় এমন সংগঠনগুলির মোট ২৮ হাজার ৭৯টি ইউআরএল ব্লক করা হয়েছে। এরমধ্যে দেখা যাচ্ছে যে ফেসবুকেই ব্লক করা হয়েছে ১০,৯৭৬টি অ্যাকাউন্ট এবং এক্স হ্যান্ডেল বা সাবেক ট্যুইটারে ব্লক করা হয়েছে ১০,১৩৯টি অ্যাকাউন্ট (Digital Terrorism)।
ফেসবুক: ২০২২ সালে ১,৭৪৩টি ইউআরএল, ২০২৩ সালে ৬,০৭৪টি ইউআরএল এবং ২০২৪ সালের (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ৩,১৫৯টি ইউআরএল ব্লক করা হয়েছে।
এক্স হ্যান্ডেল: ২০২২ সালে ৩,৪১৭ অ্যাকাউন্ট ব্লক, ২০২৩ সালে ৩,৭৭২ অ্যাকাউন্ট ব্লক এবং ২০২৪ সালে ২,৯৫০ অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে।
ইউটিউব: গত তিন বছরে মোট ২,২১১টি অ্যাকাউন্ট সামগ্রিকভাবে ব্লক করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২২ সালে ৮০৯টি, ২০২৩ সালে ৮৬২টি এবং ২০২৪ সালে সালে ৫৪০টি।
ইনস্টাগ্রাম: মোট ২,১৯৮ টি ইউআরএল ব্লক করা হয়েছে গত তিন বছরে।
হোয়াটসঅ্যাপ: ২০২২ সালে ৬৬টি এবং ২০২৪ সালে ৫৬টি সহ মোট ১৩৮টি অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে৷
টেলিগ্রাম: গত তিন বছরে ২২৫টি ইউআরএল ব্লক করা হয়েছে।
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এই সমস্ত ইউআরএলগুলিকে (Digital Terrorism) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশেই ব্লক করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি দীর্ঘদিন ধরে এই অ্যাকাউন্ট গলির ওপরে নজরদারি চালিয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। গোয়েন্দারা নির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছিলেন, কিছু সাইট এবং অ্যাপে এমন কিছু কার্যকলাপ চলছে যা ভারতের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। এই অ্যাকাউন্টগুলিকে সরাসরি নামেও চালানো হয়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আবার কিছু অ্যাকাউন্ট চালানো হত, যেগুলিতে ঘরে বসে কাজের অফার দেওয়া হত অথবা নানা ইনভেস্টমেন্ট করতে বলা হত। প্রসঙ্গত সরকার যে এমন পদক্ষেপ করতে পারে তা আইটি অ্যাক্টের ৬৯ (এ) ধারাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা রয়েছে। কেন্দ্র সরকার বা রাজ্য সরকার চাইলেই তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে, যদি তারা দেখে, কোনও রকমের কম্পিউটার ভিত্তিক তথ্য অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।