Great Nicobar transshipment port: ৪১০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগে নির্মিত হচ্ছে ভারতের ট্রান্স-শিপমেন্ট বন্দর...
গ্রেট নিকোবর দ্বীপে আন্তর্জাতিক ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট। প্রতীকী চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গ্রেট নিকোবরে ৪১০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগে নির্মিত হচ্ছে ট্রান্স-শিপমেন্ট পোর্ট (Port)। ভারত সরকার গালাথিয়া উপসাগরে গ্রেট নিকোবর দ্বীপে আন্তর্জাতিক ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর (Great Nicobar Transhipment Port) প্রকল্পকে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চলেছে। এই বন্দর প্রকল্পটি শুরু করার সময় প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার মতো একটি বিষয় প্রথমে উদ্বেগ তৈরি করেছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পরিবেশ এবং জলবায়ু মন্ত্রক থেকে ছাড়পত্র পাওয়া গিয়েছে। সেই সঙ্গে ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) থেকেও অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। ফলে বাস্তবায়নে আর কোনও বাধা নেই। এই বন্দর ভারতের আন্তর্জাতিক আমদানি-রফতানির জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যমের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহণ এবং জলপথ সচিব টি কে রামচন্দ্রন বলেছেন, "এই বন্দর (Great Nicobar Transhipment Port) প্রকল্পের ডিপিআরও চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং আমরা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এটির আরও বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করব। এই সমুদ্র বন্দর প্রকল্পটির জন্য অনুমানিক ব্যয় হবে প্রায় ৪১,০০০ কোটি টাকা। তবে সরকার এবং ব্যক্তিগত-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) দ্বারা প্রকল্পের অর্থ অনুমোদন করা হবে।"
গত বছর, বন্দর (Port), নৌপরিবহণ এবং জলপথ মন্ত্রক ঘোষণা করেছিল, ১১টি সংস্থা এই বন্দর (Great Nicobar Transhipment Port) প্রকল্পের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে, লারসেন অ্যান্ড টুব্র লিমিটেড, অ্যাফকান ইন্সুরেন্স লিমিটেড, জেএসডবলু ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের মতো কোম্পানি। বাজার ও ব্যবসার মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে স্টোরেজ এলাকা, কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সরঞ্জাম এবং অন্যান্য কাঠামো গঠন করা হবে। ৩০ থেকে ৫০ বছরের দীর্ঘমেয়াদী সময়ের জন্য পিপিপিকে ছাড় দেওয়া হবে। বন্দর পরিষেবা প্রদানের জন্য ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ এবং সামগ্রিক পরিচর্চার বিষয়ে তাদের বিশেষ অধিকার দেওয়া হবে।
এই সমুদ্র বন্দরের (Great Nicobar Transhipment Port) প্রকল্পটি ২টি ধাপে তৈরি করা হবে। প্রথম পর্যায়ের জন্য আনুমানিক খরচ করা হবে প্রায় ১৮০০০ কোটি টাকা। এই পর্বে ব্রেকওয়াটার নির্মাণ, ড্রেজিং, পুনরুদ্ধার, বার্থ, স্টোরেজ এলাকা, বিল্ডিং এবং ইউটিলিটি, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, ইনস্টলেশন এবং বন্দর কলোনির উন্নয়নের কাজ করা হবে। মূল অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি সহায়তা করা হবে। দ্বিতীয় পর্বে বন্দরের জন্য পৃথক দরপত্র প্রণয়ন করা হবে। তবে প্রথম পর্যায় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের মধ্যে সর্বাধিক সাত বছরের ব্যবধানের থাকবে। তবে যদি চাহিদা বাড়ে তবে এই সময়ের ব্যবধানটি কমিয়ে আনা হতে পারে।
বর্তমানে, ভারতের ট্রান্সশিপড কার্গোর প্রায় ৭৫ শতাংশ ভারতের বাইরের বন্দরে পরিচালনা করা হয়ে থাকে। কলম্বো, সিঙ্গাপুর এবং ক্ল্যাং-এই বন্দরগুলিতে ৮৫ শতাংশেরও বেশি কাজ হয়ে থাকে৷ তবে এই ট্রান্সশিপড কার্গোর অর্ধেকের বেশি কলম্বো বন্দর দ্বারা পরিচালিত হয়। ভারতের এই বন্দর প্রকল্প অত্যন্ত কৌশলগত, কারণ এটি সিঙ্গাপুর, ক্ল্যাং এবং কলম্বোর মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য রুটে মধ্যে অবস্থিত। বৈদেশিক আমদানি-রফতানি এবং ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক নিরাপত্তা-সুরক্ষার বিষয় জড়িয়ে রয়েছে এই বন্দরের সঙ্গে। তাই ভারতের জন্য এই বন্দর (Great Nicobar Transhipment Port) অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুনঃ অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করতে ঝাড়খণ্ড প্রশাসনকে নির্দেশ আদালতের
২০২৮ সালের মধ্যে চালু হবে বন্দর
আন্তর্জাতিক জাহাজ বাণিজ্য পথের ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থিত এই বন্দর (Great Nicobar Transhipment Port)। ২০ মিটারের বেশি প্রাকৃতিক জলের গভীরতায় জাহাজের আমদানি-রফতানির জন্য খুব সহায়ক হবে এই বন্দর। এই প্রস্তাবিত বন্দরটি সম্পূর্ণরূপে চালু হলে প্রতি বছর ১৬ মিলিয়ন কন্টেইনার ওঠা-নামানোর পরিকাঠামো নির্মিত হবে। যার প্রথম ধাপ ২০২৮ সালের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গ্রেট নিকোবর দ্বীপের সামগ্রিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে একটি গ্রিনফিল্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেরও পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা বন্দরের (Port) সঙ্গে একযোগে বিকাশ ঘটাবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।